চুয়াডাঙ্গা খাদ্যগুদামে গমভর্তি ট্রাকে মিলল ২৮ বস্তা বালিসহ পাথর

সমীকরণ প্রতিবেদক:
চুয়াডাঙ্গায় সদর উপজেলা খাদ্যগুদামে পরিবহন ঠিকাদারের গাড়ি থেকে গম খালাসের সময় গমের বদলে ২৮টি বালিভর্তি বস্তা ও ৬টি বড় ধরনের পাথর পাওয়া গিয়েছে। এ ঘটনায় রহস্য উদ্ঘাটনের জন্য তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। একই সঙ্গে এ ঘটনার সাথে জড়িত থাকার দায়ে সদর উপজেলা খাদ্যগুদাম কর্তৃপক্ষ ট্রাকের চালকসহ ১৪ জনকে আটক রেখেছে।
চুয়াডাঙ্গায় সদর উপজেলা খাদ্যগুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম জানান, গত ১ ফেব্রুয়ারি শুরু হওয়া বিদেশ থেকে আমদানি করা গমের চালান চুয়াডাঙ্গা খাদ্যগুদামে আসতে শুরু করে। এরই ধারাবাহিকতায় গতকাল রোববার সকালে খুলনা ৪ নম্বর ঘাট থেকে ছেড়ে আসা খাদ্য পরিবহন ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের সরকার এন্টারপ্রাইজ, জোনাকী পরিবহন ও সানরাইজ জুট ট্রেডার্সের ৬টি ট্রাকে সাড়ে ১৬ মেট্রিক টন করে প্রায় ১০০ মেট্রিক টন গমের চালান চুয়াডাঙ্গা সদর খাদ্যগুদামে এসে পৌঁছায়। খালাসের সময় ট্রাকগুলো থেকে গমের বস্তার পরিবর্তে ২৮টি বালিভর্তি বস্তা ও ৬টি বড় ধরনের পাথর পাওয়া যায়। জোনাকী পরিবহনের (চট্টগ্রাম মেট্রো ট ১১-৭৮৯৪) ট্রাক থেকে ৭টি ও একই প্রতিষ্ঠানের আরেকটি (খুলনা মেট্রো ট ১১-২২২৯) ট্রাক থেকে ৬টি বালিভর্তি বস্তা, সরকার এন্টারপ্রাইজের (খুলনা মেট্্েরা ট ১১-০৩৬৩) ট্রাক থেকে ৪টি ও একই প্রতিষ্ঠানের (খুলনা মেট্রো ট ১১-০৭১৪) নম্বর ট্রাক থেকে ৫টি বালিভর্তি বস্তা, সানরাইজ জুট ট্রেডার্সের (খুলনা মেট্রো ট ১১-০৬৯৬) ট্রাক থেকে ৫টি বালির বস্তা ও একই প্রতিষ্ঠানের (ঢাকা মেট্রো ট ১৪-৬১৭৭) ট্রাক থেকে ৬টি বড় ধরনের পাথর পাওয়া যায়।
এ অপরাধের সঙ্গে জড়িত থাকার দায়ে কর্তৃপক্ষ ট্রাকের চালকসহ ১৪ জনকে আটক করে রেখেছে। এরা হলেন- খুলনা বয়রা এলাকার বজলুর ছেলে ট্রাক চালক রাব্বি, বাগেরহাটের মোংলার মজিদের ছেলে ট্রাক চালক রবিউল, খুলনা কাস্টমস্ এলাকার মজিবর শেখের ছেলে হেলাল শেখ, খুলনার সোনাডাঙ্গা এলাকার ট্রাক চালক সাইফুল, খুলনার জোড়াগেট এলাকার আক্কাসের ছেলে ট্রাক চালক আসাদ ও একই এলাকার সিদ্দিকের ছেলে ট্রাক চালক নান্নু। তবে সচেতন মহলের দাবি, এমন ঘটনা আজ ধরা পড়লেও বিগত দিনে একই ঘটনা ঘটেছে কি না, তা খতিয়ে দেখা দরকার। তবে কর্তৃপক্ষের দাবি, এই ঘটনা এবারই প্রথম।
খুলনা মেট্রো ট ১১-০৬৯৬ ট্রাকের চালক আসাদ জানান, ‘খুলনার ৪ নম্বর ঘাটে ট্রাকে গম লোডের সময় চাকায় দিতে বালির বস্তার প্রয়োজন হয়। তাই আমরা বালির বস্তা গাড়িতেই রেখেছিলাম।’
চুয়াডাঙ্গা জেলা ভারপ্রাপ্ত খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা কে এম শহিদুল হক বলেন, এদিন ভোর রাতে ৬টি ট্রাক আমদানি করা গম নিয়ে খুলনার রূপসা ৪ নম্বর ঘাট থেকে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা খাদ্যগুদামে আসে। সকাল ৯টায় ট্রাক থেকে গম খালাসের সময় গমের সঙ্গে বের হতে থাকে বালির বস্তা ও পাথর। এ ঘটনার পর চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসকের নির্দেশে আলমডাঙ্গা উপজেলা খাদ্যগুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুল হামিদকে প্রধান করে সদর উপজেলা খাদ্যগুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম ও কারিগরি খাদ্য পরিদর্শক নাসরিন বানুকে নিয়ে ৩ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। এই কমিটি আজ সোমবারের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিলেই এ ব্যাপারে পরবর্তী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।