
নিজস্ব প্রতিবেদক:
‘বাংলা ইশারা ভাষার প্রচলন, বাক ও শ্রবণ প্রতিবন্ধী ব্যক্তির জীবনমান উন্নয়ন’ প্রতিপাদ্যে সারা দেশের ন্যায় চুয়াডাঙ্গায় বাংলা ইশারা ভাষা দিবস-২০২৩ পালিত হয়েছে। এ উপলক্ষে গতকাল মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টায় চুয়াডাঙ্গা অফিসার্স ক্লাবে জেলা প্রশাসন, সমাজসেবা ও প্রতিবন্ধী বিষয়ক কার্যালয়ের আয়োজনে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। চুয়াডাঙ্গার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) নাজমুল হামিদ রেজার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি থেকে বক্তব্য দেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আমিনুল ইসলাম খান।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, ভাষা মহান আল্লাহর একটি বিস্ময়কর সৃষ্টি। ভাষা অনুভূতি প্রকাশ করার একটি মাধ্যম। ইশারা ভাষা আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃতিপ্রাপ্ত একটি ভাষা। প্রতিবন্ধীদের সমাজের আলাদা বা বিচ্ছিন্ন ভাবার সুযোগ নেই। তারা আমাদের সমাজেরই অংশ। বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন মানুষ খুবই ব্রিলিয়ান্ট। প্রতিবন্ধী কমাতে হলে বাল্যবিবাহ রোধ করতে হবে। ইদানিং দেখা যায়, অনেক মানুষ কম বয়সেই বিছানায় পড়ে যাচ্ছে। উঠতি বয়সী ছেলেরা বেপরোয়া গতির মোটরসাইকেল চালিয়ে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে হুইল চেয়ারে পড়ে যাচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, শ্রবণ ও বাক প্রতিবন্ধী মানুষের অধিকারের কথা তুলে ধরতে হবে। শ্রবণ ও বাক প্রতিবন্ধী মানুষের ভাব প্রকাশের সম্পর্ক অবিচ্ছেদ্য। তাই তাদের সাংস্কৃতিক বিকাশ মানেই বাংলা ভাষার বিকাশ। বাক ও শ্রবণ প্রতিবন্ধী মানুষের বৈচিত্র্যময় জীবনের প্রকাশ ঘটে এ ভাষার মাধ্যমে। এছাড়া অটিস্টিক, নিউরোলজিক্যাল ডিজঅর্ডার ও বুদ্ধিপ্রতিবন্ধীদের অনেকে ইশারা ব্যবহারের মাধ্যমে মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ করে থাকে। শ্রবণ ও বাক প্রতিবন্ধীরা সমাজের অংশ, তাদেরকে যথেষ্ট গুরুত্ব দিতে হবে। একই সঙ্গে তাদের জীবনযাত্রার মানোন্নয়ন সরকারি-বেসরকারিভাবে অনেক উদ্যোগ খাতে নিতে পারি। এ ব্যাপারে সকলকে গুরুত্ব দিতে হবে।
সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ প্রফেসর সিদ্দিকুর রহমান, জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক সিদ্দিকা সোহেলী রশীদ, চুয়াডাঙ্গা কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের (টিটিসি) অধ্যক্ষ মো. মোছাব্বেরুজ্জামান ও পুলিশ পরিদর্শক বিপ্লব কুমার। আলোচনা সভায় মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন জেলা প্রতিবন্ধী বিষয়ক কর্মকর্তা আনোয়ারুল ইসলাম। সভা পরিচালনা করেন জেলা প্রতিবন্ধী বিষয়ক কার্যালয়ের কনসালট্যান্ট ডা. নূর আলম আকাশ। সভায় আরও বক্তব্য দেন প্রতিবন্ধী বিষয়ক শিক্ষক আনোয়ার হোসেন। এর আগে পাঁচজন শারীরিক প্রতিবন্ধীর মাঝে হুইল চেয়ার প্রদান করা হয়।