চুয়াডাঙ্গা সোমবার , ৫ অক্টোবর ২০২০
আজকের সর্বশেষ সবখবর

চাকরিবঞ্চিত হচ্ছে মেধাবীরা

সমীকরণ প্রতিবেদন
অক্টোবর ৫, ২০২০ ৮:৫৮ পূর্বাহ্ণ
Link Copied!

তাদের অযোগ্যতা কোথায়
সরকারি কর্মকাণ্ড পরিচালনায় মূল ভূমিকা পালন করেন প্রজাতন্ত্রের প্রথম শ্রেণীর কর্মকর্তারা। এই কর্মকর্তারা যত দক্ষ, মেধাবী হবে রাষ্ট্রীয় কাজ ততই মসৃণ হবে। জনসাধারণ সর্বোচ্চ সেবা পাবে। বাংলাদেশ ঔপনিবেশিক সূত্রে একটি আমলাতন্ত্র পেয়েছে। আমলাদের ব্যাপারে একটা ধারণা প্রচলিত ছিল, আর যা-ই হোক তারা মেধাবী। কোনো ধরনের অনিয়ম ঘুষ দুর্নীতি করে তারা প্রজাতন্ত্রের প্রথম শ্রেণীর কর্মকর্তা পদে নিযুক্ত হননি। এ ধরনের উচ্চ ধারণা এখন আর নেই। নানাভাবে প্রথম শ্রেণীর কর্মকর্তা নিয়োগ বিতর্কিত হয়ে গেছে। এই বিতর্ক দিন দিন বেড়েছে। একটি সহযোগী দৈনিক খবর দিয়েছে, বেশ কয়েক বছর ধরে বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) সুপারিশ করা প্রার্থীদের অনেকে নিয়োগ পাননি। তারা কেন সব যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও নিয়োগ পাননি তার কোনো সদুত্তর সরকারের পক্ষ থেকে নেই।
পত্রিকাটির খবর অনুযায়ী দেখা যাচ্ছে, তিনটি বিসিএস পরীক্ষায় চূড়ান্ত সুপারিশ পাওয়ার পর অনেকে বাদ পড়ছেন। ৩৫তম বিসিএসে ৩৪ জন, ৩৬তম বিসিএসে ৬৯ জন ও ৩৭তম বিসিএসে ৬১ জন বাদ পড়েছেন। এ ছাড়া স্বাস্থ্য ক্যাডারে ৩২ থেকে ৩৯ বিসিএসে ২৩০ জন চিকিৎসক বাদ পড়েছেন। পিএসসি প্রথম শ্রেণীর চাকরিতে যোগ্য হিসেবে নিয়োগের জন্য সুপারিশ করার পর মন্ত্রণালয় পুলিশ ভেরিফিকেশন করে। দীর্ঘ প্রক্রিয়ায় একজন যোগ্য মেধাবী মুখ পিএসসি ধাপে ধাপে যাচাই করে। প্রাথমিক বাছাই ও লিখিত পরীক্ষায় পাস করে মৌখিক পরীক্ষা উত্তীর্ণ হওয়ার পর পিএসসি তাদের নিযুক্তির জন্য সুপারিশ করে। এই দীর্ঘ প্রক্রিয়ায় একজন প্রার্থীর বিপুল চেষ্টা ও অধ্যবসায়ের প্রয়োজন হয়। তাকে শারীরিক-মানসিক পরিশ্রম করতে হয়। অবশেষে একজন প্রার্থী যখন দেশের সেবার জন্য পুরোপুরি তৈরি হন তাকে খবর শুনতে হয় তিনি বাদ পড়েছেন। এটা একজন মেধাবী ও যোগ্য প্রার্থীর জন্য অত্যন্ত হতাশার। সঙ্গত কারণ ছাড়া শত শত প্রার্থীকে বাদের তালিকায় ফেলে দেয়া অমানবিক। একজন পরীক্ষার্থীকে বাছাই করার জন্য সরকারি তহবিলের অর্থ খরচ করা হয়। এটাকে রাষ্ট্রের একটা অপচয় ধরতে হবে।
দেশের একজন যোগ্য নাগরিক যিনি দেশের সেবা করার উপযুক্ত তাকে কেন বাদ দেয়া হচ্ছে; তার একটা সন্তোষজনক উত্তর সরকারের পক্ষ থেকে থাকা উচিত। পুলিশ এ ধরনের প্রার্থীদের ব্যাপারে কী যাচাই করছে সে ব্যাপারে জবাবদিহিতার দরকার রয়েছে। পুলিশ একজন প্রথম শ্রেণীর চাকরি প্রার্থীর ১৬ ধরনের তথ্য যাচাই করে। কোথায় লেখাপড়া করেছেন, সর্বশেষ পাঁচ বছর কোথায় থেকেছেন, কোনো ফৌজদারি মামলায় গ্রেফতার, অভিযুক্ত দণ্ডিত হয়েছেন কি না। একজন বিসিএস প্রার্থীকে প্রতিযোগিতায় টেকার জন্য পাড়াশোনা করতে হয়। তাকে কঠোর শ্রম সাধনা করে একেকটি পরীক্ষায় প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে এগোতে হয়। তাই একজন প্রার্থীর বড় ধরনের অপরাধের সাথে জড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা ক্ষীণ। সে ক্ষেত্রে ১৬ ধরনের তথ্য যাচাইয়ের পর তার ব্যাপারে ইতিবাচক সার্টিফিকেট পাওয়াই আকাক্সিক্ষত। পুলিশের বিশেষ শাখা (এসবি) এ তথ্যগুলো যাচাই করে থাকে। খবরে এমন প্রার্থীদের কথা জানা যাচ্ছে, তাদের ব্যাপারে কোনো ধরনের নেতিবাচক খবর নেই। তাই কী কারণে তাদের বঞ্চিত করা হচ্ছে সেটি জানার জন্য তারা মন্ত্রণালয়ে ধরনা দিচ্ছেন। এ ধরনের এক প্রার্থীর কথা পত্রিকাটি লিখেছে। পুলিশ ক্যাডারে নিযুক্তির জন্য সুপারিশ পাওয়া ওই নারী একজন স্কুল শিক্ষক। তিনি জানাচ্ছেন, ১৮ মাসে ৩০ বার জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে গিয়েছেন। এমনকি তিনি কোনো রাজনৈতিক দলের সাথেও যুক্ত নন। গত কয়েক বছর ধরে অন্য গোয়েন্দা সংস্থাও যাচাইয়ের কাজটি করে। একই সাথে আমরা দেখতে পাচ্ছি, বাদ পড়াদের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ প্রদর্শন করা হচ্ছে না। প্রজাতন্ত্রের প্রথম শ্রেণীর কর্মকর্তা নিয়োগ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটা বিষয়। তাই এ ব্যাপারে বর্তমান সরকার যদি কোনো ধরনের নতুন নীতি গ্রহণ করে থাকে সেটি দেশবাসীর কাছে প্রকাশ্যে ঘোষণা থাকা উচিত। প্রার্থীদের অধিকার রয়েছে কেন তারা সবধরনের যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও নিয়োগ পাবেন না তা জানার। এসব ব্যাপারে সরকারের কোনো ধরনের লুকোচুরি করা উচিত হবে না।

এই সাইটে নিজম্ব নিউজ তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন নিউজ সাইট থেকে খবর সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট সূত্রসহ প্রকাশ করে থাকি। তাই কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো।বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।