হুসাইন মালিক: চুয়াডাঙ্গা শহরতলীর দৌলাৎদিয়াড় ফায়ার সার্ভিসপাড়ার মরহুম দরবার আলীর ছেলে মহান মুক্তিযুদ্ধে পঙ্গুত্ববরণকারী আজিজুল ইসলাম বঙ্গবন্ধুর স্মৃতিগুলো আওড়াতে আওড়াতে চলে গেলেন না ফেরার দেশে। ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে চুয়াডাঙ্গার বড় বাজার এলাকায় পাক হানাদার বাহিনীর গুলিতে ডান হাত হারানো ও জাতিরজনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বাক্ষরিত প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ ও কল্যাণ তহবিল হতে অনুদানপ্রাপ্ত এবং চুয়াডাঙ্গা জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি মোহাম্মদ রিপন আলীর মেজো চাচা আজিজুল ইসলাম (৬১) গতকাল সন্ধ্যা সাড়ে ৫টায় চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ব্রেন ষ্ট্রোকে করে মৃত্যুবরণ করেন। রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে চুয়াডাঙ্গায় ফিরে আবারও হঠাৎ অসুস্থ্য হয়ে সদর হাসপাতালে তিনি চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন তিনি। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বাক্ষরিত সনদপত্র থাকার পরেও তিনি কোন রাষ্ট্রীয় মর্যাদা বা ভাতাদি পাননি এমনকি জেলায় অবস্থিত মুক্তিযোদ্ধা অফিসে ঘুরে ঘুরেও পাননি নিজের স্বীকৃতি নেওয়ার জন্য সাহায্য। এবিষয়ে সদর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আশু বাঙ্গালীর সাথে কথা বললে তিনি আফসোস করে বলেন আমি যদি বিষয়টি আগে থেকে জানতে পারতাম, তবে ওনার স্বীকৃতি আদায়ে কাজ করতাম। মরহুম আজিজুলকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফন করা হবে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন এটা জেলা প্রশাসনের বিষয়, তবে আমার মনে হয় গেজেটভুক্তদের ছাড়া গার্ড অব অনার প্রদান করা হয় না। মহান মুক্তিযুদ্ধে যিনি পঙ্গু হলেন, তার কিনা মৃত্যুর পরেও রাষ্ট্রীয় মর্যাদাটুকু কপালে জুটবে না! যেটা লজ্জাজনক বলা ছাড়া আর কোন ভাষা থাকে না। স্বাধীন বাংলাদেশের এই পরাধীন মুক্তিযোদ্ধা আবারও প্রমান করলেন দেশপ্রেমই বড় কথা। আমার ভাষায় তিনি একজন বীরমুক্তিযোদ্ধা শুধু নয় একজন উদার দেশপ্রেমিকও বটে। মরহুম আজিজুল ইসলামের আজ সকাল ১০টায় দৌলাৎদিয়াড় সর্দ্দারপাড়া ঈদগাহ ময়দানে জানাযাশেষে ঈদগাহ ময়দান সংলগ্ন কবরস্থানে দাফনকার্য করা হবে। চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক মহোদয়, ভারপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার মহোদয় এবং জেলা-উপজেলা পর্যায়ের মুক্তিযোদ্ধাসহ রাজনৈতিক, সামাজিক ও জেলায় কর্মরত সাংবাদিকদের স্বাধীন বাংলাদেশের এই পরাধীন মুক্তিযোদ্ধার দাফনকার্যে শরিক হওয়ার অনুরোধ করেছে তার পরিবারের সদস্যরা।