সমীকরণ প্রতিবেদন: আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত বিভিন্ন বিভাগ এবং মেট্রোপলিটন এলাকা থেকে প্রাপ্ত প্রতিবেদন অনুযায়ী চলতি বছরের জুলাই মাসের তুলনায় আগস্ট মাসে গুরুতর অপরাধ সংক্রান্ত মামলা ২২৭টি বৃদ্ধি পেয়েছে। এ জন্য আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে যথাযথ কার্যক্রম গ্রহণের জন্য জেলা ম্যাজিস্ট্রেটদেরকে নির্দেশনা দেয়ার জন্য বিভাগীয় কমিশনারদের বলা হয়েছে। সম্প্রতি বিভাগীয় কমিশনারদের সমন্বয় সভায় এই নির্দেশনা দেয়া হয়। মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম সভায় সভাপতিত্ব করেন।
সভায় বলা হয়, চলতি বছরের জুলাই মাসের তুলনায় আগস্ট মাসে জেলা টাস্কফোর্স পরিচালিত চোরাচালানবিরোধী অভিযান ১৩৭টি হ্রাস পেয়েছে। যেসব জেলায় অভিযান কম হয়েছে সেখানে জেলা প্রশাসকদের চোরাচালানবিরোধী টাস্কফোর্স অভিযান জোরদারের নির্দেশনা দিয়েছে দেয়া হয়। বিশেষ করে সীমান্তবর্তী জেলাগুলোতে অভিযান জোরদার করতে জেলা ম্যাজিস্ট্রেটগণকে নির্দেশনা দিতে বিভাগীয় কমিশনারদের বলা হয়।
গত জুলাই মাসের তুলনায় মোবাইল কোর্ট পরিচালনার সংখ্যা ৫৩০টি বৃদ্ধি পেয়েছে এবং মামলার সংখ্যা দুই হাজার ৬০টি বেড়েছে। যথাযথ পদ্ধতি অনুসরণপূর্বক প্রয়োগসিদ্ধভাবে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা অব্যাহত রাখা এবং মোবাইল কোর্টের তথ্য ই-কোর্ট সিস্টেমে প্রত্যেক মাসের ৫ তারিখের মধ্যে আবশ্যিকভাবে আপলোড করতে জেলা ম্যাজিস্ট্রেটগণকে নির্দেশনা দিতে বলা হয়।
ফৌজদারি কার্যবিধি-১৮৯৮ এর আওতায় দায়েরকৃত মামলাগুলো পর্যালোচনা করা হয়। গত জুলাই মাসের তুলনায় আগস্ট মাসে এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে নিষ্পত্তিকৃত মামলার সংখ্যা এক হাজার ৭৭৭টি বৃদ্ধি পেয়েছে। জুলাই মাসের তুলনায় আগস্ট মাসে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজেস্ট্রেট আদালতে নিষ্পত্তিকৃত মামলার সংখ্যা ৬০৯টি বেড়েছে।
ফৌজদারি কার্যবিধি, ১৮৯৮ এর আওতায় ২০২০ সাল পর্যন্ত দায়েরকৃত অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতগুলো ছয় হাজার ৩৬৫টি এবং এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে চার হাজার ৩২৩ মামলা অনিষ্পন্ন রয়েছে। এসব মামলা অতিদ্রুত নিষ্পত্তির নির্দেশনা দেয়া হয়।
যৌন হয়রানি প্রতিরোধে মোবাইল কোর্টের অভিযান জুলাই মাসের তুলনায় আগস্ট মাসে দু’টি হ্রাস পেয়েছে, মামলার সংখ্যাও একটি হ্রাস পেয়েছে। অর্থদণ্ডে দণ্ডিত আসামির সংখ্যা দু’জন কমে। কারাদণ্ডে দণ্ডিত আসামির সংখ্যা দু’জন হ্রাস পেয়েছে। অর্থদণ্ড ও কারাদণ্ড উভয়দণ্ডে দণ্ডিত আসামির সংখ্যা হ্রাস পেয়েছে একজন এবং আদায়কৃত জরিমানার পরিমাণ চার হাজার ৮০০ টাকা হ্রাস পেয়েছে। এ জন্য যৌন হয়রানি প্রতিরোধে গণসচেতনতা বৃদ্ধির কার্যক্রম এবং মোবাইল কোর্ট পরিচালনা অব্যাহত রাখার নির্দেশনা দেয়া হয়।
সভায় বলা হয়, বিসিএস (প্রশাসন) ক্যাডার কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে প্রাপ্ত ৭৬টি অভিযোগ তদন্তাধীন রয়েছে। এসব কর্মকর্তার বিরুদ্ধে প্রাপ্ত অভিযোগের বিষয়ে এক মাসের ঊর্ধ্বে ঢাকা বিভাগে ১০টি করে, চট্টগ্রাম বিভাগে দু’টি করে, রাজশাহী একটি করে, খুলনা চারটি করে, বরিশাল বিভাগে দু’টি করে, সিলেট বিভাগে একটি করে, রংপুর বিভাগে দু’টি করে মোট ২২টি অভিযোগ অনিষ্পন্ন রয়েছে। এসব অভিযোগ সংশ্লিষ্ট তদন্ত প্রতিবেদন নির্ধারিত সময়ের মধ্যে প্রেরণ নিশ্চিত করার নির্দেশনা দেয়া হয়।
তিন মাসের ঊর্ধ্বে ঢাকা বিভাগে ১০টি করে, চট্টগ্রাম বিভাগে ৬টি করে, রাজশাহী ২টি করে, খুলনা ২টি করে, বরিশাল বিভাগে ১৮টি করে, সিলেট বিভাগে একটি করে, রংপুর বিভাগে একটি করে মোট ৪০টি অভিযোগ অনিষ্পন্ন রয়েছে। তিন মাসের ঊর্ধ্বে অনিষ্পন্ন অভিযোগের প্রতিবেদন মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে দ্রুত প্রেরণের নির্দেশনা দেয়া হয়।
ভূমি অধিগ্রহণে মামলার সংখ্যা গত জুলাই মাসের তুলনায় জুলাই মাসে ৩৮৫টি বৃদ্ধি পেয়েছে। ক্ষতিপূরণ প্রাপ্তির আবেদন নিষ্পত্তির সংখ্যা ৪৩৫টি বৃদ্ধি পেয়েছে। এই সংক্রান্ত কাজে জনগণ যাতে হয়রানির শিকার না হয় তা নিশ্চিত করা এবং অধিগ্রহণ কার্যক্রম দ্রুত শেষ করতে নির্দেশ দেয়া হয়।
সভায় ই-নথির প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়/জেলা প্রশাসকের কার্যালয় এবং বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ে প্রাপ্ত চিঠিপত্র অনলাইনে এন্ট্রি করে ই-নথির মাধ্যমে নিষ্পত্তি করার নির্দেশনা দেয়া হয়।
কৃষি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত আলোচনায় বলা হয়, আম মৌসুমে এবং বন্যা-পরবর্তী কৃষি পুনর্বাসনে দেশে পর্যাপ্ত সার মজুদ রয়েছে। এ ছাড়া কৃষি বিভাগ কর্তৃক খাদ্যশস্যের প্রাক্কলিত উৎপাদনের হিসাব যথাযথভাবে করতে হবে। সব রকম সার ন্যায্যমূল্যে ডিলারদের মাধ্যমে বিক্রি নিশ্চিত করতে হবে এবং সার পাচাররোধে মনিটরিং অব্যাহত রাখতে হবে।
