প্রতিবেদক, মেহেরপুর:
মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার ৯ ইউনিয়নে ভিজিডি প্রকল্পে পঁচা চাল বিতরণ করা হচ্ছে। বিষয়টি খাদ্য কর্মকর্তা ও উপজেলা নিবাহী অফিসার জেনেও কোনো ব্যবস্থা নেননি বলে অভিযোগ ইউনিয়র পরিষদের চেয়ারম্যানদের। ইতোমধ্যে কয়েকজন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এই চাল ফেরতও দিয়েছেন।
সাহারবাটি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান গোলাম ফারুক বলেন, ‘আমার অবর্তমানে পরিষদে ট্রাকে করে চাল দিয়ে যায়। সে সময় চাল পঁচা বলে সুবিধাভোগীরা অভিযোগ করেছে। আমি সামনের মিটিংয়ে এ বিষয়টি নিয়ে কথা তুলব।’ তিনি বলেন, গরীব মানুষকে সরকারের দেওয়া ভালো চালের পরিবর্তে কখনোই পঁচা চাল দেওয়া যাবে না।
পঁচা চালের বিষয়ে কয়েকজন চেয়ারম্যান নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘যখন জানতে পারলাম চালের মান খারাপ বা পঁচা, তখনই চাল ফেরত দেওয়া হয়েছে। তবে পরে খাদ্য কর্মকর্তা (ওসি এলএসডি) হাসান সাব্বির উপজেলা নির্বাহী অফিসারের মাধ্যমে চাপ প্রয়োগ করে ওই চালের সাথে কিছু ভালো চাল মিশিয়ে আবার পাঠিয়ে দিয়েছে। পরে ওই চাল বিতরণ করা হয়।’
ষোলটাকা ইউনিয়নে চাল নিতে আসা অসহায় গরীব বৃদ্ধা শরিফুন নেছা প্রতিবাদ করে বলেন, ‘এই পঁচা চাল নেব না। আমি শেখ হাসিনার কাছে দাবি জানাই এই চাল ফেরত নেওয়া হোক।’
এবিষয়ে গাংনী খাদ্য কর্মকর্তা হাসান সাব্বির বলেন, চালতো ভালো চাল। ১০ মাস ধরে গোডাউনে রাখার কারণে চালে কিছুটা গন্ধ হয়েছে। ইউনিয়ন চেয়ারম্যানরা কেন ফেরত দিল, এমন প্রশ্নের জবাবে ওসি এলএসডি হাসান বলেন, আসলে এ চাল সম্পর্কে চেয়ারম্যানরা বুঝতে পারেননি, তাই পরে ইউএনও স্যারকে দিয়ে বুঝিয়ে চালগুলো আবার দেওয়া হয়েছে। তিনি আরও বলেন, আসলে চাল সংগ্রহের পর মিলারদের কাছে দেওয়া হয়। মিলাররা চালের মধ্যে পুষ্টি চাল মিশ্রণ করেন। ওই পুষ্টি চালটি একটু ফ্যাকাশে টাইপের হয় ওটা দেখে মানুষে মনে করে চালটি পঁচা।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার সেলিম শাহনেওয়াজ বলেন, ‘ওই চাল নেওয়ার জন্য কাউকে সুপারিশ করা হয়নি। এক মাসের জন্য দেওয়া হয়েছে। সামনে মাস থেকে ভালো চাল দিবে বলে আমার কাছে খাদ্য পরিদর্শক বলেছেন। তা ছাড়া আগে যে চালটি বিতরণ করা হয়েছে, তা বেশি কিছু দিন আগের।’
পঁচা চাল বিতরণ সম্পর্কে এক প্রতিক্রিয়ায় মেহেরপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য মো. সাহিদুজ্জামান খোকন বলেন, ‘আমার দুস্থ অসহায় জনগণের কথা মাথায় রেখে জননেত্রী শেখ হাসিনা ভালো চাল বরাদ্দ দিয়ে থাকেন। আর এই চাল বিতরণ বা চালের মান খারাপ অথবা যেকোনো ধরণের অনিয়ম মেনে নেওয়া হবে না। আমি বিষয়টি অবশ্যই দেখব।’
