গাংনীতে প্রসূতি মৃত্যুর ঘটনার তদন্ত প্রতিবেদন
- আপলোড টাইম : ০৯:১৪:৪৬ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২১ অগাস্ট ২০১৮
- / ৪৩৬ বার পড়া হয়েছে
মেহেরপুর প্রতিনিধি: মেহেরপুরের গাংনীতে রবিউল ইসলাম মেমোরিয়াল হাসপাতালে অস্ত্রোপচার জটিলতায় শুকজান খাতুন (৩০) নামের এক প্রসুতির মৃত্যুর ঘটনায় তদন্ত কমিটি প্রতিবেদন জমা দিয়েছেন। তদন্ত প্রতিবেদনে এনেসথেসিয়ার দায়িত্ব পালনকারী ডা. এম কে রেজার দায়িত্বে অবহেলা ও ক্লিনিক অব্যবস্থাপনাকে দায়ি করা হয়েছে। এদিকে, গাংনী হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত আরএমও এমকে রেজা নিজেকে দীর্ঘদিন ধরে এনেসথেসিষ্ট দাবি করে হাসপাতালসহ বিভিন্ন ক্লিনিকে এনেসথেসিয়ার দায়িত্ব পালন করলেও এখনো পর্যন্ত তদন্ত কমিটি ও স্বাস্থ্য বিভাগের কাছে কিংবা এ প্রতিনিধি কাছে কোন সনদ দেখাতে পারেননি।
প্রসূতি মৃত্যুর ঘটনার পর থেকে এম কে রেজা এনেসথেসিয়া করেননি বলে অস্বীকার করলেও তদন্ত কমিটির কাছে তিনি বিষয়টি স্বীকার করেছেন। তদন্ত কমিটি তাদের প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছেন, কোন সার্জন ছাড়াই সিজারিয়ান অপারেশ করা হয়েছে এটা নিশ্চিত।
ক্লিনিক মালিক তরিকুল ইসলাম প্রথম থেকে দাবি করে আসছিলেন, ডা. এম কে রেজা এনেসথেসিয়া ও অপারেশন দুটোয় করেছেন। কিন্তু তদন্ত কমিটির কাছে তরিকুল করেছেন বলে অভিযোগ করেছেন তিনি। সে ক্ষেত্রে প্রশ্ন থেকে, তরিকুল ইসলাম প্যারামেডিক হয়ে কিভাবে একজন সরকারি চিকিৎসকের সামনে অপরাশেন করেন? আর করলেও তিনি কেন মেনে নিয়েছেন?
তদন্ত কমিটির প্রধান মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালের গাইনি বিশেষজ্ঞ ডা. বিপুল কুমার দাস বলেন, সরকারি দায়িত রেখে গাংনী হাসপাতালের আরএমও এমকে রেজা ক্লিনিকে সিজার করার জন্য এনেসথেসিয়া দিয়েছেন। এনেসথেসিয়া দেওয়ার পরপরই রোগী স্পাইনাল শকে আক্রান্ত হয়। তখন এনেসথেসিষ্ট প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা না নেওয়ায় রোগীর মৃত্যু হয়েছে। তবে অপারেশনের বিষয়টি এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। দু’পক্ষ থেকে পরস্পর বিরোধী অভিযোগ এসেছে। এছাড়া ক্লিনিক মালিকের অব্যবস্থাপনাকেও দায়ি করা হয়েছে তদন্ত প্রতিবেদনে। তবে একটি বিষয় নিশ্চিত হওয়া গেছে সিজারিয়ান অপারেশনটি কোন সার্জন করেননি।
সিভিল সার্জন ডা. জিকেএম সামসুজ্জামান বলেন, তদন্ত প্রতিবেদন পেয়েছি। এনেসথেসিয়া এম কে রেজা করেছে এবিষয়ে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। তবে এমকে রেজার এনেসথেসিয়া বিষয়ক কোন প্রশিক্ষণের সনদ এখনো দেখাতে পারেননি। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রতিবেদনটি স্বাস্থ্য বিভাগের মহাপরিচালকের কাছে পাঠানো হয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত ২৭ জুলাই শুক্রবার দুপুরে ভবানীপুর গ্রামের বাবুল হোসেনের স্ত্রী শুকজান খাতুনের সিজারিয়ান অপারেশন করা হয়। এসময় অপারেশন জনিত ক্রটির কারণে তার মৃত্যু হয়। এনিয়ে ক্লিনিক মালিক গাংনী হাসপাতালের আরএমও এমকে রেজাকে অভিযুক্ত করেন। এমকে রেজা পাল্টা ক্লিনিক মালিক তরিকুল ইসলামকে অভিযুক্ত করেন। এনিয়ে একটি ধু¤্রজাল সৃষ্টি হয়। এঘটনায় ১ আগষ্ট বুধবার মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালের গাইনি কনসালটেন্ট ডা. বিপুল কুমার দাসকে সভাপতি করে তিন সদস্যর তদন্ত কমিটি গঠন করেন। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন গাংনী হাসপাতালের মেডিক্যাল অফিসার সজিব উদ্দীন স্বাধীন ও সিভিল সার্জন অফিসের মেডিক্যাল অফিসার ফয়সাল কবির।