নিজস্ব প্রতিবেদক: চুয়াডাঙ্গা সদরের নেহালপুরে অনামিকা খাতুন (২২) নামের ৯ মাসের এক অন্তঃসত্ত্বা নারীর পেটে লাথি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে প্রতিবেশী আ.গণির (৩৫) বিরুদ্ধে। গতকাল সোমবার দুপুর ১২টার দিকে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার নেহালপুর গ্রামে ঘটনা ঘটে। পেটে লাথি দেওয়ায় গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে পরিবারের সদস্যরা গতকাল দুপুরেই অন্তঃসত্ত্বা ওই নারীকে উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় সময়ের পূর্বেই গতকাল দুপুরে একটি ক্লিনিক থেকে ওই নারীর সিজার করা হয়েছে। ভুক্তভোগী আমেনা খাতুন নেহালপুর গ্রামের পান্তপাড়ার ইউসুফ আলীর মেয়ে।
আমেনা খাতুনের পিতা ইউসুফ আলী বলেন, ‘প্রতিবেশী সাহেব আলীর ছোট মেয়ে সাথীর নামে গ্রামের কেউ নাকি মিথ্যা কথা রটিয়েছে। সাহেব আলীর ঘরজামাই আ.গণি কোনো কিছু না জেনেই সেই দোষ আমার অন্তঃসত্ত্বা মেয়ের নামে দেয় এবং বাড়িতে এসে তার পেটে লাথি মারে। এসময় আমেনা প্রচণ্ড ব্যাথায় ছটফট করতে থাকলে আমরা তাকে দ্রুত সদর হাসপাতালে ভর্তি করি। চিকিৎসক পরীক্ষা-নিরীক্ষা দিলে হাসপাতালের বাইরের একটি ডায়াগনস্টিক সেন্টার থেকে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করানো হয়। এসময় জানা যায় লাথি দেওয়ার কারণে পেটের সন্তানও আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছে। পরে চিকিৎসকের পরামর্শে ডেলিভারির সময়ের আগেই সিজার করতে হয়েছে। একটি মেয়ে সন্তান ভূমিষ্ট হয়েছে আমেনার। বেলা সাড়ে তিনটার দিকে হাসপাতাল এলাকার দেশ ক্লিনিক থেকে আমার মেয়ের সিজার করানো হয়েছে। পরে বিকেলে আমরা আ. গণির বিরুদ্ধে থানায় মামলা করেছি।’
এ বিষয়ে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. ওয়াহিদ মাহমুদ রবিন বলেন, ‘বেলা একটার দিকে পরিবারের সদস্যরা ৯ মাসের অন্তঃসত্ত্বা এক নারীকে জরুরি বিভাগে নেয়। তার তল পেটে আঘাত করা হয়েছে বলে পরিবারের সদস্যরা অভিযোগ করেন। পরে জরুরি বিভাগ থেকে তাকে তাৎক্ষণিক চিকিৎসা দিয়ে প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা লিখে হাসপাতালের গাইনি বিভাগে ভর্তি রাখা হয়।’
এদিকে দেশ ক্লিনিকে ওই প্রসূতি নারীর সিজার সম্পন্নকারী চিকিৎসক ডা. মশিউর রহমান বলেন, ‘পেটে আঘাত পাওয়ায় তার প্রসব বেদনা শুরু হয়। আলন্টাসনোগ্রাফসহ যাবতীয় পরীক্ষায় জানা যায় ওই অন্তঃসত্ত্বা নারীর পেটে পানিশূন্যতা সৃষ্টি হয়েছে। বিষয়টি পরিবারের সদস্যরা জানতে পারলে ওই প্রসূতি মায়ের সিজার করার সিদ্ধান্ত নেয়। যে কারণে সময়ের পূর্বেই ওই প্রসূতি মায়ের সিজার করা হয়েছে। মা ও সন্তান দুজনেই শঙ্কামুক্ত আছে। আঘাতপ্রাপ্ত না হলে উপযুক্ত সময়েই ওই প্রসূতি মা নরমাল ডেলিভারির মাধ্যমে বাচ্চা প্রসব করতে পারতেন।’