সমীকরণ প্রতিবেদন: বেশি দামে গম আমদানি নিয়ে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ-টিআইবি’র বিবৃতি খাদ্য মন্ত্রণালয়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করায় এবং এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দেয়ায় একে উৎসাহব্যঞ্জক উল্লেখ করে গম কেনার ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে যেভাবে টিআইবির বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অভিযোগ এনেছে তা সত্যিই হতাশার বলে মন্তব্য করেছে সংস্থাটি। বিবৃতিতে টিআইবি বলেছে, মন্ত্রণালয়ের ব্যাখ্যায় গণমাধ্যম ও টিআইবির বিবৃতিতে তোলা অনেক প্রশ্নের উত্তর মেলেনি।
বিবৃতিতে বলা হয়, খাদ্য মন্ত্রণালয়ের দাবি অনুযায়ী ‘ন্যাশনাল ইলেকট্রনিক বিডি’ রাশিয়ার গম রফতানিকারক প্রতিষ্ঠান প্রডিনটর্গের লোকাল এজেন্ট, যাদের গম আমদানিতে প্রয়োজনীয় লজিস্টিক সেবা নিশ্চিত করার কথা, কিন্তু দাম নির্ধারণ বা এ বিষয়ক সমঝোতায় তাদের ভূমিকা থাকার কথা নয়। কিন্তু খাদ্য সচিবের বক্তব্য অনুযায়ী আলোচিত প্রতিষ্ঠানটির দু’জন প্রতিনিধি গমের দাম নিয়ে সমঝোতা বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন এবং সমঝোতায় সহায়তা করেছেন। অথচ জিটুজি ক্রয়সংক্রান্ত প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের পরিপত্রে বলা হয়েছে, দাম নির্ধারণবিষয়ক সরকারি কমিটির সভাপতি হবেন সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সচিব বা অতিরিক্ত সচিব। সদস্যসচিব থাকবেন একই মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব বা অতিরিক্ত সচিব। এ ছাড়া অর্থ ও আইন মন্ত্রণালয়, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ ও সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় বা বিভাগের মনোনীত ব্যক্তি থাকবেন, এর বাইরে বেসরকারি তৃতীয় কোনো পক্ষ থাকবে না।
বিবৃতিতে যুক্তি তুলে ধরে আরো বলা হয়, ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বিশ্ব খাদ্যপণ্যের বাজার অস্থির হয়ে উঠেছিল এটি যেমন সত্যি, তেমনি ত্রিপক্ষীয় চুক্তির আওতায় ১ আগস্ট থেকে ইউক্রেন গম রফতানি শুরু করার পর বিশ্ববাজারে গমের দরে বড় আকারে প্রভাব পড়তে শুরু করে, সেটিও সত্য। অথচ দর নির্ধারণ প্রক্রিয়ায় আন্তর্জাতিক বাজারে দাম কমার ট্রেন্ড কতটা বিবেচনায় ছিল, তার কোনো ব্যাখ্যা দেয়া হয়নি। রাশিয়ার গমের এফওবি মূল্য ৩৩০ মার্কিন ডলার ধরে এর সাথে জাহাজ ভাড়া, লোডিং-আনলোডিং, বার্থ অপারটের হ্যান্ডলিং, ইন্স্যুরেন্স ও লাইটেনিংসহ সর্বমোট মূল্য ৪৩০ মার্কিন ডলার নির্ধারণ হয়, যাকে যুক্তিসঙ্গত ও সঠিক বলে খাদ্য মন্ত্রণালয় দাবি করছে। কিন্তু প্রতি টনে ১০০ ডলার ল্যান্ডিং খরচের বিস্তারিত ব্যাখ্যা দেয়া হয়নি, সেখানেই মূলত শুভঙ্করের ফাঁকি। একই সাথে অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, ব্রাজিল ও আর্জেন্টিনার গমের দামের যে তুলনা মন্ত্রণালয়ের ব্যাখ্যায় দেয়া হয়েছে, তাকে কিছুটা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলেই মনে হয়েছে, কেননা সারা বিশ্বে রাশিয়া ও ইউক্রেন থেকে আসা ব্ল্যাক-সি-হুইট মূলত কম দামি গম হিসেবেই খ্যাত। বর্তমান আন্তর্জাতিক বাজার দরও যার সাক্ষী দিচ্ছে। বিজ্ঞপ্তি।
