খেলাফতিদের ভাগ্য হবে অতি বিপ্লবীদের মতো

সমীকরণ ডেস্ক: পুলিশ প্রধান একেএম শহীদুল হক বলেছেন, বঙ্গবন্ধুর সময়ের ‘অতি বিপ্লবীদের’ মতো এখনকার ‘খেলাফতিরাও’ বাংলাদেশের মানুষের সমর্থন পাবেন না বলে তার বিশ্বাস। গতকাল রাজারবাগ পুলিশ লাইনসে এক অনুষ্ঠানে জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে লড়াই নিয়ে বলতে গিয়ে তিনি ‘অতি বামদের’ সমালোচনায় মুখর হন, যারা আওয়ামী লীগের সঙ্গে বর্তমানে সরকারেও রয়েছেন। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে এই স্বেচ্ছায় রক্তদান কর্মসূচির আয়োজন করা হয়। পুলিশ মহাপরিদর্শক শহীদুল হক বলেন, স্বাধীনতার পর প্রতিকূল পরিবেশেও বঙ্গবন্ধু যখন দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন, সে সময় ‘একটি মহল’ তাকে শান্তিতে থাকতে দেয়নি। ‘যারা মুষ্টিমেয় ব্যক্তি, যারা স্বাধীনতার বিরোধিতা করেছিল আর অতি বিপ্লবী… তখন বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্র, পূর্ববাংলা সর্বহারা পার্টি, পূর্ব পাকিস্তান কমিউনিস্ট পার্টি, জাসদের গণবাহিনী… এই সমস্ত লোকগুলি কিন্তু বঙ্গবন্ধুকে শান্তিতে থাকতে দেয়নি।’ ওই সময়ের পরিস্থিতি বর্ণনা করতে গিয়ে আইজিপি বলেন, ‘তারা পুলিশ হত্যা করেছে, থানা লুট করেছে, ফায়ারিং করেছে, আওয়ামী লীগের লোকদের হত্যা করেছে।’ তারা  যে ‘ভুল পথে ছিল’, শেষ পর্যন্ত তা ‘প্রমাণ হয়েছে’ বলে মন্তব্য করেন তিনি। ‘অতি বিপ্লবী যারা ছিলেন, তারা বলতেন রাজনৈতিক প্রতিবিপ্লব দিয়ে রাজনৈতিক ক্ষমতায় আসবেন। লম্বা লম্বা বক্তৃতা দিয়ে যুবক শ্রেণির ব্রিলিয়ান্ট ছেলেদের… যারা ইউনিভার্সিটিতে পড়তো, যারা মেডিকেলে পড়তো… তাদের নিতো।’ ‘তাদের অনেকেই আজ নিহত হয়েছে। আজকে প্রমাণ হয়েছে, তারা ভুল করেছেন।’ সেই সময়ের মতো এখন আবার ‘অতি মৌলবাদী’ একটি শক্তি ‘জিহাদের নামে, খেলাফতের নামে’ বাংলাদেশের মানুষকে বিপথে নেয়ার চেষ্টা করছে বলে মন্তব্য করেন আইজিপি। ‘এটা এখন আমাদের জন্য চ্যালেঞ্জ। সেই সামর্থ্য, মনোবল আমাদের আছে। বিশ্বাস করি, অতি বিপ্লবী যারা কমিউনিস্ট, তারা যেমন মানুষের সমর্থন পায়নি, তেমনি এখন যারা খেলাফতের কথা বলছেন, তারাও বাংলাদেশের মানুষের সমর্থন পাবেন না।’ এ বিষয়ে এরই মধ্যে সামাজিক আন্দোলন গড়ে উঠেছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি। বঙ্গবন্ধুকে স্মরণ করতে গিয়ে তার নেতৃত্ব, দেশপ্রেম ও কূটনৈতিক দক্ষতার কথা মনে করিয়ে দেন পুলিশপ্রধান। ‘বঙ্গবন্ধু তার বৈদেশিক নীতির মাধ্যমে বিভিন্ন দেশের সঙ্গে সুসম্পর্ক তৈরি করেছিলেন। বিভিন্ন দেশের স্বীকৃতি ও সাহায্য সহযোগিতা নিয়েছেন। বিদেশি সৈনিকদের সাহায্য নিয়ে যখন কোনো দেশ স্বাধীন হয়, মাত্র আড়াই মাস, তিন মাসের মাথায় তাদের ফেরত পাঠিয়ে দেওয়া… বিশ্বে আর একটি দৃষ্টান্ত নাই।’ বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধে ভারতের সহযোগিতার কথাও তিনি স্মরণ করেন। ‘তাদের সহযোগিতা ছাড়া, ইন্দিরা গান্ধীর সহযোগিতা ছাড়া এত অল্প সময়ে স্বাধীন হতে পারতাম না, বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বের কারণে তারা আন্তরিক ছিল।’ সৃষ্টিকর্তা বঙ্গবন্ধুকে ‘বাঙালি জাতির ত্রাতা হিসেবে’ পাঠিয়েছিলেন মন্তব্য করে শহীদুল হক বলেন, ‘এমন মহাপুরুষ যুগে যুগে আসে না। তিনি বিশ্বের বুকে বাঙালির একটি স্থান করে দিয়েছেন।’ স্বাস্থ্যমন্ত্রী  মোহাম্মদ নাসিম, পুলিশের অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক মোখলেছুর রহমান ও ঢাকার পুলিশ কমিশনার মো. আছাদুজ্জামান মিয়া অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।