
দর্শনা অফিস:
এবার ৮৪ বছরের রেকর্ড ভেঙ্গে কম আখ মাড়াইয়ে ঐত্যিহ্যবাহী কেরুজ চিনিকল। শুধু আখ মাড়াইয়ের ক্ষেত্রেই নয়, মাড়াই দিবস থেকে শুরু করে চিনি আহরণের হার ও উৎপাদন হ্রাসের ক্ষেত্রেও এবার রেকর্ড ভেঙ্গেছে। গত ২০২১-২২ মরসুমে ৭০ কোটি টাকা লোকসান গুনলেও এবার লোকসানের বোঝা কমে ৬০ কোটিও পেরোতে পারে বলে জানিয়েছে মহাব্যবস্থাপক (অর্থ) মুহাম্মদ সাইফুল ইসলাম।
এদিকে, ২০২২-২৩ চলতি আখ মাড়াই মরসুম শেষ হচ্ছে আজ। ২০২২-২৩ আখ মাড়াই মৌসুমে ৫৩ কার্য দিবসে ৬১ হাজার ৫শ মেট্রিকটন আখ মাড়াই করে ৩ হাজার ৮৪০ মেট্রিকটন চিনি উৎপাদনের লক্ষমাত্রা নিয়ে মাড়াই মরসুমের উদ্বোধন করলেও তা তলানিতে নামে। মিলটি ৪৩ কার্য দিবসে ৪৬ হাজার ৬০ মেট্রিকটন আখ মাড়াই করে চিনি উৎপাদন করেছে ২ হাজার ২১৯ মেট্রিকটন। এতে চিনি আহরণের হার ৫.০৫ নিম্নমুখী হওয়ায় উৎপাদনে থাকছে বিশাল ঘাটতি। গত বছরের ২৩ ডিসেম্বরে ৭০ কোটি টাকা লোকসানের বোঝা মাথায় নিয়ে ২০২২-২৩ আখ মাড়াই মরসুমের উদ্বোধন করেন বাংলাদেশ খাদ্য ও চিনিশিল্প করপোরেশনের চেয়ারম্যান আরিফুর রহমান অপু।
কেরুজ চিনিকল কর্তৃপক্ষ থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী এ মরসুমে সর্বমোট ৪ হাজার ২৩০একর জমির আখ মাড়াই করা হয়। যার মধ্যে কেরুজ নিজস্ব জমির পরিমান ছিলো মাত্র ১হাজার ৫০ একর ও কৃষকের জমিতে আখ ছিলো ৩ হাজার ১৮০ একর। লক্ষমাত্রা অনুযায়ী মাত্র ৪৩ দিনে ৪৬ হাজার ৬০ মেট্রিকটন আখ মাড়াই করে চিনি উৎপাদন নির্ধারণ করা হয় ২ হাজার ২শ ১৯ মেট্রিকটন। চিনি আহরণের গড় হার নির্ধারণ করা ছিলো ৬.০২। এবারের চিনি আহরণের হার কমে ৫.০৫-এ দাড়িয়েছে।
কেরুজ চিনিকলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোশারফ হোসেন জানান, আগামী মরসুমে চিনি কারখানাকে লাভজনক অবস্থায় নেয়া সম্ভব না হলেও বড়ধরণের লোকসান কমাতে প্রয়োজনীয় সবধরণের প্রস্তুতি গ্রহন করা হয়েছে। আখচাষে আগ্রহী করে তোলা হচ্ছে কৃষকদের। তাদের সকল ধরণের সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করা হয়েছে। কৃষদের সাথে সভা-সমাবেশ, উঠান বৈঠক চলমান রয়েছে। তিনি এলাকার আখচাষিদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, বেশী বেশী আখচাষ করে অধিক মুনাফা অর্জনের পাশাপাশি আপনাদের মূলবান সম্পদ কেরুজ চিনিকলটি রক্ষা করুন। তিনি আরও বলেন কৃষি প্রধান বাংলাদেশ অর্থনীতির মূল ভিত্তি হলো কৃষি। চিনি শিল্প ছিলো কৃষি ভিত্তিক শিল্প। তাই এ মিলটির জন্য যা যা করনীয় তার সবটাই চেষ্টা করে যাচ্ছি। তবে গতবারের তুলনায় এবার আখের মূল্য বৃদ্ধি করা হয়েছে। মিল গেটে ১৪০ টাকা থেকে বাড়িয়ে দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ১৮০ টাকা। এছাড়া আখক্রয় কেন্দ্রগুলোতে ১৩৬ টাকা থেকে বাড়িয়ে মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ১৭৬ টাকা।