বিদ্রোহী কবিতার শতবার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা সভায় অতিরিক্ত সচিব মোহাম্মদ জাকির হোসেন
ইকবাল রেজা, কার্পাসডাঙ্গা:
দামুড়হুদা উপজেলার কার্পাসডাঙ্গায় জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের বিদ্রোহী কবিতার শতবার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। দামুড়হুদা উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে গতকাল শনিবার সকাল ১০টায় আটচালা ঘর-সংলগ্ন কার্পাসডাঙ্গা মিশনের চার্চ অব বাংলাদেশ (ক্রাইস্ট চার্চ) প্রাঙ্গণে এ আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) দিলারা রহমানের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন নজরুল ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) মোহাম্মদ জাকির হোসেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে মোহাম্মদ জাকির হোসেন বলেন, বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের গান ও কবিতা যুগে যুগে বাঙালির জীবন সংগ্রাম ও স্বাধীনতা সংগ্রামে প্রেরণার উৎস হয়ে কাজ করছে। তিনি জন্মেছিলেন পশ্চিমবঙ্গের এক দরিদ্র পরিবারের দুখু মিয়া হয়ে। আর মৃত্যুকালে তিনি ছিলেন স্বাধীন বাংলাদেশের জাতীয় কবি। মাঝে ৭৭ বছর জুড়ে ছিল সৃষ্টি ও সৃজনশীলতার এক বিশাল ইতিহাস। দাসত্বের শৃঙ্খলবদ্ধ জাতিকে শোষণ ও উৎপীড়ন থেকে মুক্ত হওয়ার ডাক দিয়ে তিনি লিখেছিলেন ‘বল বীর বল উন্নত মম শির…যবে উৎপীড়িতের ক্রন্দন-রোল, আকাশে বাতাসে ধ্বনিবে না, অত্যাচারীর খড়্গ কৃপাণ ভীম রণভূমে রণিবে না-বিদ্রোহী রণ-ক্লান্ত, আমি সেই দিন হব শান্ত!’ কবি নজরুল ইসলাম সব ধর্মের মধ্যে ভেদাভেদ ভুলে মানবতার জয়গান গেয়েছেন। তাঁর একটি কবিতার বিখ্যাত একটি লাইন ছিল ‘মানুষের চেয়ে বড় কিছু নাই, নহে কিছু মহীয়ান।’ তিনি আরও বলেন, কার্পাসডাঙ্গায় কবির স্মৃতি ভূমিতে ৬ তলা বিশিষ্ট নজরুল ইনস্টিটিউট নির্মাণ করা হবে। এখানকার মানুষজন নজরুল নিয়ে চিন্তা করে, তাঁর কবিতাগুলো এখানে চর্চা হয়।
আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন চুয়াডাঙ্গার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক জাহিদুল ইসলাম, উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মহিউদ্দীন, অগ্নিবীনা প্রতিষ্ঠাতা এইচ এম সিরাজ, কার্পাসডাঙ্গা নজরুল স্মৃতি সংসদের সভাপতি এম এ গফুর, সেক্রেটারি সাইফুল ইসলাম, আটচালা ঘরের মালিক মি. প্রকৃতি বিশ্বাস প্রমুখ। অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজের সহযোগী অধ্যাপক মো. আবু সাইফ। অনুষ্ঠানের একপর্যায়ে অতিরিক্ত সচিব মোহাম্মদ জাকির হোসেন কবির বসবাসরত আটচালা ঘর পরিদর্শন ও স্মৃতি ফলকে পুষ্পার্ঘ অর্পণ করেন।
উল্লেখ্য, কবি নজরুল ইসলাম সপরিবারে ১৯২৬ ও ১৯২৭ সালে পরপর দুইবার কার্পাসডাঙ্গার মিশনপাড়ায় এসেছিলেন। এখানে ভৈরব নদের পাড়ের সিড়িতে বসে নাটক পদ্মগোখরো, গান কলশি গেল টলে, আমার কোন কুলে আজ ভিড়ল তরি, এ কোন সোনার গায়সহ বেশ কিছু গল্প, কবিতা উপন্যাস লিখেছিলেন।