সমীকরণ প্রতিবেদক: দামুড়হুদার কার্পাসডাঙ্গায় জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১২৩তম জন্মবার্ষিকী পালিত হয়েছে। গতকাল বুধবার সকাল সাড়ে ১০টায় চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসনের আয়োজনে দুই দিনব্যাপী নানা কর্মসূচির সূচনা হয়। এ উপলক্ষে গতকাল বর্ণাঢ্য র্যালি, পুষ্পস্তবক ও দোয়া অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। জেলা প্রশাসক আমিনুল ইসলাম খানের নেতৃত্বে কবির স্মৃতিবিজড়িত আটচালা ঘরের সামনে কবির স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়। পুষ্পস্তবক অর্পণ শেষে অতিথিরা কবির স্মৃতিবিজড়িত আটচালা ঘর, লিচু বাগান ও পুকুরপাড় ঘুরে দেখেন। পরে বিকেল সাড়ে চারটায় কবিতা আবৃত্তি, আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।
জেলা প্রশাসক আমিনুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চুয়াডাঙ্গা-২ আসনের সংসদ সদস্য হাজি আলী আজগার টগর। প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, কালজয়ী প্রতিভার অধিকারী কবি কাজী নজরুল ইসলাম ছিলেন সাম্য, মানবতা, প্রেম, তারুণ্য ও দ্রোহের কবি। কবি নজরুল তাঁর প্রত্যয়ী ও বলিষ্ঠ লেখনীর মাধ্যমে এদেশের মানুষকে মুক্তিসংগ্রামে অনুপ্রাণিত ও উদ্দীপ্ত করেছিলেন। তার গান ও কবিতা সবসময় যে কোনো স্বাধীনতা আন্দোলনে অনুপ্রেরণার উৎস হয়ে থাকবে।
তিনি আরও বলেন, বাংলা সাহিত্য-সংগীতে কাজী নজরুল ইসলামের অবদান অনস্বীকার্য। ধর্ম-বর্ণের ঊর্ধ্বে উঠে তিনি গেয়েছেন মানবতার জয়গান। নজরুলের লেখনী থেকেই আমরা ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলন, ভাষা আন্দোলন, ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান এবং বাঙালির মুক্তিযুদ্ধসহ প্রতিটি গণতান্ত্রিক আন্দোলন-সংগ্রামে অনুপ্রেরণা পেয়েছি।
প্রধান আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক হামিদুর রহমান। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ সরকারের সাংস্কৃতিক মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব সুব্রত ভৌমিক, জেলা পরিষদের সাবেক প্রশাসক ও দামুড়হুদা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহফুজুর রহমান মনজু ও কার্পাসডাঙ্গা ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল করিম।
সভাপতির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আমিনুল ইসলাম খান বলেন, জাতীয় জাগরণের অন্যতম পথিকৃত কবি নজরুল ছিলেন বাঙালি জাতির রাজনৈতিক মুক্তি-সংগ্রামের অকুতোভয় সৈনিক। অসামান্য ও বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী কবি নজরুলের আজীবন সাধনা ছিল সমাজের শোষিত ও নিপীড়িত মানুষের অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক মুক্তি এবং মানুষের সামাজিক মর্যাদার স্বীকৃতি অর্জন। তার সাহিত্যকর্মে উচ্চারিত হয়েছে পরাধীনতা, সাম্প্রদায়িকতা ও সাম্রাজ্যবাদবিরোধী সংগ্রামের বাণী।
অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন কার্পাসডাঙ্গা নজরুল স্মৃতি সংসদের সভাপতি এম এ গফুর। স্বাগত বক্তব্য দেন কবি নজরুল স্মৃতি-বিজড়িত আটচালা ঘর মালিক প্রকৃতি বিশ্বাস বকুল। অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজের বাংলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মুন্সি আবু সাঈফ। আগামীকাল বিকেল সাড়ে চারটায় আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্যদিয়ে শেষ হবে দুই দিনব্যাপী এ আয়োজন।