নিজস্ব প্রতিবেদক: চুয়াডাঙ্গা পৌরসভার সংরক্ষিত ৭, ৮ ও ৯ নম্বর ওয়ার্ডের নারী কাউন্সিলর মোছা. শেফালী খাতুন কারণ দর্শানোর নোটিশের উত্তর দিয়েছেন। গতকাল সোমবার তিনি চুয়াডাঙ্গা পৌরসভার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. শামীম ভূঁইয়ার নিকট লিখিতভাবে উত্তর দিয়েছেন। জানা গেছে, ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) ফ্যামিলি কার্ড নিয়ে চুয়াডাঙ্গা পৌরসভার সংরক্ষিত কাউন্সিলর শেফালী খাতুনের বিরুদ্ধে দুটি করে ফ্যামিলি কার্ড দেওয়ার অভিযোগ উঠলে শেফালী খাতুনকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেন পৌরসভার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা।
কারণ দর্শানোর নোটিশের উত্তরে লিখিতভাবে নারী কাউন্সিলর মোছা. শেফালী খাতুন জানিয়েছেন, ‘টিসিবির পণ্য ফ্যামিলি কার্ডের মাধ্যমে বিক্রির জন্য আমার অনুকূলে ৬০০টি কার্ড পৌরসভা কর্তৃক বরাদ্দ করা হয়। আমার নির্বাচনী এলাকায় ৭, ৮ ও ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সরকারি নির্দেশনা মতে প্রাপ্যযোগ্য অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ৬০০টি ফ্যামিলির তালিকা প্রস্তুত করি। পণ্য-সামগ্রী সুষ্ঠু বিতরণের স্বার্থে পৌরসভা হতে আমাকে উক্ত ৬০০টি ফ্যামিলির জন্য (প্রতিটি ফ্যামিলির ২টি) করে ১২০০টি কার্ড প্রদান করে। চুয়াডাঙ্গা পৌরসভার সচিব মহোদয়ের মৌখিক নির্দেশে ৬০০টি ফ্যামিলির জন্য ডাবল লেখা ২টি করে মোট ১২০০টি কার্ডে, ৬০০টি ফ্যামিলির নাম লিপিবদ্ধ করি। টিসিবি কর্তৃক পণ্য সরবরাহের ঘোষণা দিলে সংশ্লিষ্ট তালিকায় লিপিবন্ধ ৬০০টি কার্ড ফ্যামিলির নিকট হস্তান্তর করি। এবং একই ফ্যামিলির জন্য ডাবল লেখা ৬০০টি কার্ড আমার নিকট সংরক্ষণ করি। টিসিবি পণ্য সরবরাহের পর বা কার্ডধারীগণ পণ্য গ্রহণের পর উক্ত ফ্যামিলির নিকট হস্তান্তরকৃত ৬০০টি কার্ডের একটিও আমি আর ফেরত পাইনি। আমি মনে করেছিলাম উক্ত ৬০০টি কার্ড টিসিবির পণ্য সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান বা চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মহোদয়ের অফিসে সংরক্ষিত আছে। পরবর্তীতে ২য় ধাপে টিসিবির পণ্য সরবরাহের ঘোষণা দিলে উক্ত ৬০০টি ফ্যামিলির লোক কার্ডের জন্য আমার নিকট আসে। আমি তৎক্ষণাৎ চুয়াডাঙ্গা পৌরসভার সচিব মহোদয়ের সাথে মোবাইলে আলাপ করি। তিনি আমার কাছে সংরক্ষিত ডাবল লেখা ৬০০টি কার্ড দেওয়ার জন্য বলেন। আমি তার আলাপ মতে সংশ্লিষ্ট ফ্যামিলির নামে পূর্বে ডাবল লেখা ৬০০টি কার্ড বিতরণ করি (যা আমার নিকট সংরক্ষিত ছিল)। সংবাদটিতে আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হয়েছে তা সঠিক নয়। আমি একই ব্যক্তির নামে একাধিক কার্ড ইস্যু করিনি। প্রথম ধাপে বিতরণকৃত ৬০০টি কার্ড ও দ্বিতীয় ধাপে বিতরণকৃত ৬০০টি কার্ড একই কার্ড।
সংবাদটিতে যে মৃত ব্যক্তির নিয়ে কথা বলা হয়েছে, তার নাম: রবিসন খাতুন, ঠিকানা:- গোরস্থান পাড়া। তিনি প্রথম ধাপে টিসিবির পণ্য উত্তোলন করেছেন, এবং তখন তিনি জীবিত ছিলেন। দ্বিতীয় ধাপে কে টিসিবির পণ্য উত্তোলন করেছে তা আমার জানা নাই। পরবর্তীতে তিনি মারা যান আমি নিজে তার শেষ গোসল ও কাফন সম্পন্ন করেছি। আমি সদাশয় সরকারের নির্দেশনা মোতাবেক টিসিবি কার্ডের কাজ নিষ্ঠা ও সততার সাথে করেছি। আমি কোনো অসদাচারণ ও ক্ষমতার অপব্যবহার করিনি। আমি সদাশয় সরকারের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য বাস্তবায়নে সচেষ্ট ছিলাম এবং আছি।’
কাউন্সিলর শেফালী খাতুনের কারণ দর্শানোর নোটিশের উত্তরের সত্যতা নিশ্চিত করে চুয়াডাঙ্গা পৌরসভার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. শামীম ভূঁইয়া বলেন, তিনি উত্তর দিয়েছেন। মেয়রের সাথে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করে মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে।