প্রতিবেদক, কালীগঞ্জ:
করোনা পরিস্থিতিতে কর্মহীন হয়ে পড়া ঝিনাইদহের কালীগঞ্জের শতাধিক স্বর্ণ শিল্পী মানবেতর জীবনযাপন করছেন। এসব স্বর্ণ শিল্পীদের স্থানীয়ভাবে কারিগর বলা হয়। এদের মধ্যে করোনাকালীন সময়ে হতাশার ছায়া নেমে এসেছে। কঠোর এই লকডাউনে কারিগরদের কোনো কাজ না থাকার কারণে পরিবার-পরিজন নিয়ে খুবই কষ্টে অনাহারে অর্ধাহারে কোনো রকম বেঁচে আছেন তাঁরা। করোনাকালে ঈদে ছেলে-মেয়েদের জন্য নতুন পোশাক কেনাতো দূরের কথা, সেমাই-চিনি কিনতে তারা হিমসিম খেয়েছেন। সেই করোনাভাইরাসের প্রথম থেকেই পরিবার-পরিজন নিয়ে তারা খুবই কষ্টের মধ্যে দিন অতিবাহিত করছেন। এ কারিগরদের দীর্ঘদিন ধরে কোনো কাজ-কর্ম না থাকার কারণে পরিবার নিয়ে পড়তে হয়েছে মহাবিপদে। তাঁদের কপালে জোটেনি কোনো সরকারি বা বেসরকারি সহযোগিতা। তিলতিল করে জমানো টাকা দিয়ে এতো দিন কোনো মতে চললেও এখন আর বাঁচার কোনো উপায় নেই বলে জানান অনেকেই। কালীগঞ্জ উপজেলাতে হাজারেরও বেশি স্বর্ণ কারিগর আছেন। কিন্তু কেউ ফিরে তাকাচ্ছেন না তাঁদের দিকে। একাধিক স্বর্ণ কারিগররা জানালেন, তাঁদের দুঃখের কথা।
স্বর্ণ কারিগর কালীগঞ্জ পৌরসভার কলেজপাড়া গ্রামের সজিব বিশ্বাস জানান, ‘এখন আর আমাদের কোনো অর্ডার-পাতি নেই, তাই কাজও নেই। পরিবারের খরচ চালানোর তাগিদে মাঝে মাঝে বাড়ি রঙ করা হেলপার হিসেবে কাজ করছি। তাও প্রতিদিন কাজ নেই। মাঝে মধ্যে যতটুকু করতে পারছি, তাই দিয়ে কোনো মতে দিন পার করছি।’
কালীগঞ্জ উপজেলা জুয়েলারি মালিক সমিতির (বাজুস) সভাপতির ওসমান আলী জানান, করোনাকালীন সময়ে যার যার ঘরের কারিগর, সে সেই দেখাশুনা করছেন। আমরা সমিতির পক্ষ থেকে কারিগরদের জন্য কোনো সহযোগিতা করিনি বা সহযোগিতা করার কোনো চিন্তা-ভাবনা আমাদের নেই।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) সাদিয়া জেরিন জানান, ‘আমি নতুন যোগদান করেছি। তবে কর্মহীন সকল শ্রমিককে সহযোগিতা করা হবে। আমি স্বর্ণ কারিগরদের জন্য সরকারি সহযোগিতার ব্যবস্থা করব।’
