প্রতিবেদক, কালীগঞ্জ:
করোনাভাইরাস বিপর্যস্ত করে তুলেছে বিশ^বাসীকে। ইতিমধ্যে করোনাকে বৈশ্বিক মহামারি হিসেবে ঘোষণা করেছে বিশ^ স্বাস্থ্য সংস্থা। আতঙ্কে বাংলাদেশের মানুষ। সর্বশেষ সোমবার (১৩ এপ্রিল) পর্যন্ত দেশে ৮০৩ জন রোগী শনাক্ত হয়েছে। মারা গেছেন ৩৯ জন। প্রতিদিনই বাড়ছে রোগী ও মৃত্যুর সংখ্যা। ইতিমধ্যে সারা দেশে চলছে অঘোষিত লকডাউন। মহামারি করোনা রোধে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে মাঠে কাজ করছে পুলিশ, র্যাব ও সেনাবাহিনী। ভাইরাসটি অতিমাত্রার ছোঁয়াছে হওয়ায় আতঙ্ক আরও বেশি ছড়িয়েছে। প্রয়োজন ছাড়া কেউ ঘর হতে বের হচ্ছে না। ঠিক এমন এক দুঃসময়ে ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনার ঘোষণা দিয়েছেন, ‘কেউ করোনা উপসর্গের রোগী বা মরদেহ বহন করতে না চাইলে আমি নিজেই গাড়ি চালিয়ে হাসপাতাল বা বাড়িতে পৌঁছে দেব। সোমবার (১৩ এপ্রিল) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে উদ্যোগের কথা জানানোর পর সাংসদ আনারের প্রশংসায় মেতে উঠেন ঝিনাইদহ-৪ নির্বাচনী এলাকাবাসী। পোস্টটি দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সাধুবাদ জানান নেটিজেনরা। এর আগেও এই তরুণ সাংসদ অ্যাম্বুলেন্স চালিয়ে সড়ক দুর্ঘটনার রোগীদের হাসপাতালে পৌঁছে দিয়ে আলোড়ন সৃষ্টি করেন। বর্ষার কাদা-পানির মধ্যে এক প্রবাসীর মরদেহ বাড়িতে পৌঁছে দেন এই সাংসদ।
রোববার (১২ এপ্রিল) করোনার উপসর্গ নিয়ে কালীগঞ্জে নিহত ব্যক্তির দাফনের কাজে গ্রামের কেউ সহযোগিতা করতে এগিয়ে আসেনি। এমনকি গ্রামের কেউ কবর খুঁড়তেও আসেনি। পরে কালীগঞ্জ থেকে যাওয়া বিশেষ টিমের সদস্যরা নিহতের পরিবারের দুই জনের সহযোগিতায় কবর খোড়ে। এরপর গ্রামের মসজিদে খাটিয়া না দেওয়ায় মাটিতে রেখে জানাজার নামাজ পড়ানো হয়। এ হৃদয়বিদারক ঘটনার পর ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনার সোমবার তাঁর ফেসবুক পেজে এমন ঘোষণা দেন। বর্তমানে করোনা উপসর্গের রোগী বা মৃত ব্যক্তিকে কোনো যানবাহনের বা অ্যাম্বুলেন্সের ড্রাইভার নিতে রাজি হচ্ছেন না। সংকটময় এসব মুহূর্তে সবাই যখন কোয়ারেন্টাইনে, তখন সাংসদ আনার গ্রামের পর গ্রাম সকাল-সন্ধ্যা মোটরবাইকে চড়ে ত্রাণ বিতরণ করছেন। এমন সংকটেও তিনি তাঁর নির্বাচনী এলাকার যেখানেই মৃত্যুর সংবাদ শুনছেন, ছুটে যাচ্ছেন সেখানে। নিহতের পারিবারকে শান্তনা দিয়ে জানাজায় অংশ নিচ্ছেন। সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনার এ পর্যন্ত ১৫ হাজার মৃত মানুষের দোয়া অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন তাঁর একান্ত সহকারী আব্দুর রউফ।
