নিজস্ব প্রতিবেদক:
চুয়াডাঙ্গায় গলায় ফাঁস দিয়ে তানভীর হোসেন (১৮) নামের এক যুবকের আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে। গতকাল রোববার দুপুর পৌনে ১২টার দিকে পরিবারের সদস্যরা তানভীরকে উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে তাকে মৃত ঘোষণা করেন। নিহত তানভীর হোসেন চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকার হাটকালুগঞ্জের মোতালেব হোসেনের ছেলে।
পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, এবার এসএসসি পরীক্ষায় এক বিষয়ে অকৃতকার্য হয়েছে তানভীর। এনিয়ে মাঝেমধ্যেই পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে তার মনোমালিন্য সৃষ্টি হতো। গত শনিবার রাতেও পরিবারের সদস্যরা তানভীরকে আবার লেখাপড়া শুরু করতে বলে। কিন্তু তানভীর লেখাপড়া ছেড়ে দিয়ে রঙ মিস্ত্রির কাজ করতে চাই। এনিয়ে পিতা-মাতার সঙ্গে তানভীরের মনোমালিণ্যের সৃষ্টি হয়। এরই মধ্যে শবিবার রাতে খাবার খেয়ে নিজ ঘরে যায় তানভীর। রাতে সবাই ঘুমিয়ে গেলে ঘরের আড়ার সঙ্গে গলাই ফাঁস দেয় সে। সকালে পরিবারের সদস্যরা তার কোন সাড়াশব্দ না পেলে দরজা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করলে তানভীরকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পাই। পরে পরিবারের সদস্যরা তাকে উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নেয়। এসময় জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
নিহত তানভীরের পিতা মোতালেব হোসেন বলেন, ‘চার ছেলের মধ্যে তানভীর মেজ। এবার এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছিল সে। কিন্তু এক বিষয়ে ফেল করে। আমরা তাকে আবার লেখাপড়া শুরু করতে বলি। কিন্তু সে রঙ মিস্ত্রির কাজ করতে চাই। এনিয়ে রাতে রাগ করে নিজ ঘরে চলে যায় সে। সকালে দেখি গলায় ফাঁস দিয়ে ঝুলছে আমার ছেলে।’
চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. ওয়াহিদ মাহমুদ রবিন বলেন, দুপুর ১২টার দিকে পরিবারের সদস্যরা তানভীর নামের এক যুবককে জরুরি বিভাগে নেয়। পরিবারের সদস্যরা জানায় সে গলায় ফাঁস দিয়েছে। তবে জরুরি বিভাগে আমরা তাকে মৃত অবস্থায় পেয়েছি। হাসপাতালে নেওয়ার পূর্বে তার মৃত্যু হয়েছে।
চুয়াডাঙ্গা সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ মহসীন বলেন, ‘পরীক্ষায় ফেল করা ও পড়ালেখা নিয়ে পারিবারের সদস্যদের সঙ্গে মনোমালিন্যের জেরে সদর থানাধীন হাটকালুগঞ্জে তানভীর নামের এক যুবক নিজ ঘড়ে আত্মহত্যা করেছে বলে প্রাথমিকভাবে জানতে পারি। এ ঘটনায় একটি অপমৃত্যু মামলা রেকর্ড করা হয়েছে। তবে নিহতের পরিবারের সদস্যদের কোন অভিযোগ না থাকায় ও তাদের লিখিত আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ময়নাতদন্ত ছাড়ায় লাশ হস্তান্তর করা হয়।’