ঝিনাইদহ অফিস:
এমন নৃশংস কি হতে পারে মানুষ? আঘাতের পর আঘাত। কুপিয়ে সারা শরীর জখম! নিস্তেজ হওয়ার পরও চলতে থাকে পৈশাচিক উল্লাস। তারপর চলে গেছে চার দিন। থানার মামলা হলেও গ্রেপ্তার হয়নি সন্ত্রাসীরা। ঘটনাটি ঘটেছে ঝিনাইদহ সদর উপজেলার তালতলা হরিপুর গ্রামে। এই গ্রামের মিজু বিশ্বাস ও তাঁর চাচা রওশন আলী গত শুক্রবার সন্ধ্যার দিকে মোটরসাইকেলযোগে কলমনখালী বাজার থেকে বাড়ি ফিরছিলেন। তাঁরা তালতলা হরিপুর গ্রামে পৌঁছানো মাত্রই আগে থেকে ওঁৎ পেতে থাকা সন্ত্রাসী জুয়েল ও তাঁর সন্ত্রাসী দলবল ধারালো অস্ত্র নিয়ে হামলা করে তাঁদের পর। কোপের পর কোপে শরীর ক্ষত-বিক্ষত হয়। ঝিনাইদহ সদর থানায় দায়েরকৃত মামলার বিবরণ থেকে এই তথ্য জানা গেছে।
মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে, জুয়েল ও তাঁর দলবলের সদস্য সন্ত্রাসী ও দাঙ্গাবাজ। তারাও ওই গ্রামের মকো বিশ্বাসের ইন্ধনে চলে। ঘটনার দিন সন্ধ্যায় লিয়াকত বিশ্বাসের ছেলে জুয়েল, ওলিয়ার রহমানের ছেলে চাঁন মিয়া, ছবেদ বিশ্বাসের ছেলে মসলেম, মনিরুলের ছেলে মিজানুর, মকো বিশ্বাসের ছেলে মহব্বত আলী, ইসাহাকের ছেলে সাবজাল, মকছেদের ছেলে মনিরুল, বিশারতের ছেলে শামীম ও মকছেদ বিশ্বাসের ছেলে মকো বিশ্বাস মিজু বিশ্বাসকে হত্যার উদ্দেশ্যে রাস্তায় ওঁৎ পেতে ছিলেন। মিজু বিশ্বাস ও তাঁর চাচা রওশন আলী কাছে আসা মাত্রই রাম দা, চাপাতি ও ডাসা নিয়ে তাঁদের ওপর চড়াও হন। মারধর করার পর মিজু বিশ্বাসের পকেটে থাকা ৩০ হাজার টাকা ছিনিয়ে নিয়ে যান তাঁরা। ঘটনার দিন মিজু বিশ্বাসকে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। মুমূর্ষ হওয়ায় তাঁকে পঙ্গু হাসপাতালে রেফার্ড করলেও দেশের এই পরিস্থিতিতে তাঁকে আল-ফালাহ হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। এ ঘটনায় আহত মিজুর পিতা মোদাচ্ছের আলী বিশ্বাস ঘটনার পর দিন ঝিনাইদহ সদর থানায় মামলা করেন। যার মামলা নম্বর ২৫। কিন্তু এখনো পর্যন্ত কোনো আসামিকে পুলিশ গ্রেপ্তার করতে পারেনি। তবে পুলিশ বলছে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। আসামিরা আত্মগোপনে। বাদীর অভিযোগ আসামিরা গ্রামেরই থাকছে। পুলিশ আসা দেখলে আসামিরা এ বাড়ি ও বাড়ি আশ্রয় নিচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে মামলা তদন্ত কর্মকর্তা এসআই মো. বদিউর রহমান জানান, বাদী ও আসামিরা উভয় একই সামাজিক দলের সদস্য। পূর্বশত্রুতার জের ধরে এই হামলার ঘটনা ঘটেছে। পুলিশ আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চালাচ্ছে। যেকোনো সময় গ্রেপ্তার হতে পারে বলে এসআই মো. বদিউর রহমান আশা ব্যক্ত করেন।
