সমীকরণ প্রতিবেদন:
এসএসসি পাস করার পর ভালো কলেজে ভর্তি হতে মরিয়া অধিকাংশ শিক্ষার্থী। ফলে ঢাকার বাইরের অনেক কলেজের আসন এখনো ফাঁকা। জিপিএ ৫ পেয়েও ভর্তির জন্য ভালো কলেজ পায়নি দুই হাজার ৮৪২ শিক্ষার্থী। তীব্র প্রতিযোগিতা থাকলেও একাদশে শিক্ষার্থী ভর্তির পর সারা দেশের কলেজগুলোর মোট আসনের অর্ধেকই ফাঁকা থেকে যাচ্ছে। সূত্র মতে, সারা দেশের উচ্চমাধ্যমিক পাঠদান করা সাত হাজার ৭০৬টি কলেজ ও মাদরাসায় একাদশে মোট আসন সংখ্যা ২৫ লাখ ৯৭ হাজার ৯৯৩টি। কিন্তু আসন অনুযায়ী শিক্ষার্থী নির্বাচিত হয়েছেন ১৩ লাখ ৪৪ হাজার ১৬৬ জন। সেই হিসেবে সারা দেশের কলেজগুলোতে ১২ লাখ ৫৩ হাজারের বেশি আসন খালি থাকছে, যা মোট আসনের ৪৯ শতাংশ। অনলাইন আবেদনে কলেজ পছন্দ দিতে কৌশলী না হওয়ায় তারা জিপিএ ৫ পেলেও একাদশে ভর্তির সুযোগ পাচ্ছেন না বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। চলতি বছরের একাদশ শ্রেণীতে শিক্ষার্থী ভর্তির পরিসংখ্যানে এ তথ্য উঠে এসেছে।
সূত্র জানায়, ইতোমধ্যে একাদশ শ্রেণীতে শিক্ষার্থী ভর্তির তিন ধাপে আবেদন গ্রহণ করে শিক্ষার্থী নির্বাচন করা হয়েছে। নির্বাচিত শিক্ষার্থীদের কলেজে ভর্তি শুরু হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবারের মধ্যে নির্বাচিত শিক্ষার্থীদের ভর্তি কার্যক্রম চলবে কলেজগুলোতে। এর আগে ২০২২ খ্রিষ্টাব্দে এসএসসি ও সমমান পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছিলেন ১৭ লাখ ৬২ হাজার শিক্ষার্থী। কলেজ ভর্তির পরিসংখ্যান অনুযায়ী, তাদের মধ্যে ১৩ লাখ ৬৬ হাজার কলেজ ও মাদরাসায় একাদশে ভর্তির আবেদন করেছিলেন। নির্বাচিত হয়েছেন ১৩ লাখ ৪৪ হাজার ১৬৬ জন। আর আবেদন করেও নির্বাচিত হতে পারেননি ২২ হাজার ৬০৪ জন শিক্ষার্থী। নির্বাচিত হতে না পারা শিক্ষার্থীদের মধ্যে দুই হাজার ৮৪২ জন জিপিএ ৫ পেয়েছিলেন।
জানা গেছে, জিপিএ ৫ পেয়েও ভর্তির জন্য নির্বাচিত হতে না পারাদের মধ্যে ঢাকা বোর্ডের ৮৩১ জন, কুমিল্লা বোর্ডের ৩৪৮ জন, রাজশাহী বোর্ডের ৬০৯ জন, যশোর বোর্ডের ১০৯ জন, চট্টগ্রাম বোর্ডের ৯১ জন, বরিশাল বোর্ডের ১৩০ জন, সিলেট বোর্ডের ৬৪ জন, দিনাজপুর বোর্ডের ৪১০ জন, ময়মনসিংহ বোর্ডের ১৪৬ জন, মাদরাসা শিক্ষা বোর্ডের ৬৯ জন ও কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের ৩৫ জন শিক্ষার্থী রয়েছেন। এ দিকে সারা দেশের বিভিন্ন কলেজ ও মাদরাসায় ১২ লাখ ৫৩ হাজারের বেশি আসন খালি থাকছে। এসব প্রতিষ্ঠানের একাদশ শ্রেণীতে বিজ্ঞান বিভাগের ২০ হাজার ৩৬৫টি, মানবিক বিভাগের ৮১ হাজার ৮৮৯টি, ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগের ২৪ হাজার ১৯২টি, আলিমের (সাধারণ) ছয় হাজার ১৭৩টি, আলিমের বিজ্ঞান বিভাগের ৬২৯টি, আলিম মুজাব্বিদ বিভাগের ৩২৩টি, ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের ৫২টি, সঙ্গীতের ২০টি আসন ফাঁকা রয়েছে।
এ বিষয়ে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক তপন কুমার সরকার জানান, কলেজ নির্বাচনে কৌশলী না হওয়ার কারণেই অনেক আসন ফাঁকা এবং একই সাথে অনেকে আবার ভর্তির সুযোগই পায়নি। তিনি আরো বলেন, শিক্ষার্থীদের মধ্যে সবাই সেরা কলেজে পড়তে চায়। কিন্তু শিক্ষার্থী নিজবাড়ি বা আশপাশের প্রতিষ্ঠান নির্বাচন না করে ঢালাওভাবে বড় বড় কলেজে আবেদন করেছেন। নাম দেখে কলেজে ভর্তির আবেদন করায় অনেক শিক্ষার্থী ভর্তির সুযোগ পাননি। তবে তারা চতুর্থ ধাপে আবেদনের সুযোগ পাবেন। ফেব্রুয়ারির শুরুতে অনলাইনে চতুর্থ ধাপে আবেদনের সুযোগ দেয়া হবে। ভর্তি প্রক্রিয়া শেষ হওয়ার পর আমরা কলেজগুলো থেকে তথ্য নেবো কোথায় কত সিট খালি আছে। সেই পরিপেক্ষিতে একটি তালিকা প্রকাশ করা হবে।
অপর দিকে ভর্তির সুযোগ না পাওয়া শিক্ষার্থীদের জন্য পরামর্শ দিয়ে তিনি আরো বলেন, যারা সুযোগ পাননি তাদের নিজ নিজ নম্বর অনুযায়ী খোঁজখবর নিয়ে চতুর্থ ধাপে আবেদন করার পরামর্শ দেবো। বুঝে-শুনে আবেদন করলে তারা অবশ্যই চতুর্থ ধাপে ভর্তির সুযোগ পাবেন।
