ইপেপার । আজ সোমবার, ০২ ডিসেম্বর ২০২৪

একই পরিবারের ৭ জনকে হত্যার চেষ্টা : থানায় অভিযোগ

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৮:৫১:৫৭ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১২ অগাস্ট ২০১৮
  • / ৪৩১ বার পড়া হয়েছে

চুয়াডাঙ্গার আলুকদিয়ায় পূর্ব শত্রুতার জেরে ঘুগনির সাথে পারদ মিশিয়ে
নিজস্ব প্রতিবেদক: চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার আলুকদিয়ায় পুর্ব শত্রুতার জেরে ছোলা ঘুগনির সাথে পারদ মিশিয়ে একই পরিবারের ৭ জনকে হত্যার চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে একই এলাকার ফরিদের বিরুদ্ধে। তাদেরকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। গতকাল শনিবার রাত পৌনে ৯টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় চুয়াডাঙ্গা সদর থানায় আহতের পক্ষ থেকে একটি অভিযোগ দায়ের করেছে। আহতরা হলেন- চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার আলুকদিয়া বাজারপাড়ার মৃত শাহাদাতের ছেলে মুদি ব্যবসায়ী মাসুম বিল্লাহ ডাবলু (৫০), তার স্ত্রী রেবেকা খাতুন (৩৫), মেয়ে নবম শ্রেণীর ছাত্রী চাঁদনী খাতুন (১৫), ছেলে রাশেদ (৮), শ্যালিকা ময়না খাতুন (৩০), তার ছেলে ষষ্ঠ শ্রেণীর ছাত্র বাপ্পি (১৩), মেয়ে ৩য় শ্রেণীর ছাত্রী বর্ষা খাতুন (১১)।অভিযোগ সুত্রে জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার আলুকদিয়ার বাজারপাড়ার মাসুম বিল্লাহ’র ছেলে রুহুলের সাথে একই এলাকার ওয়েল্ডিং মিস্ত্রী ফরিদের মেয়ে স্বর্ণালী খাতুনের (১৭) সাথে ৩ বছর যাবত প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। এক পর্যায়ে জানাজানি হলে মেয়ের বাবা কোর্টে রুহুলের নামে একটি নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে মামলা করেন। এই মামলা এখন চলমান রয়েছে। গতকাল মেয়ের বাবা ফরিদ বাজারের চটপটিওয়ালা বাবুলকে টাকার মাধ্যমে ম্যানেজ করে ছোলা ঘুগনির সাথে পারদ মিশিয়ে দেয়। বাবুল বাজারের ছেলের বাবার মুদি ব্যবসায়ী মাসুম বিল্লাহ’র দোকানে দিয়ে পারদ মেশানো ছোলার ঘুগনি দিয়ে আসে। পরে মাসুম কিছু খেয়ে বাসায় পাঠায়। পরে পরিবারের সদস্যরা খাওয়ার সময় ছোলাতে পারদ দেখতে পায়। পরে বিষয়টি জানাজানি হলে তাদেরকে উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নেয়া হয়।
এলাকাবাসি ও স্থানীয় ইউপি সদস্য ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ছেলে মেয়ের প্রেম সম্পর্কের জেরে মেয়ের বাবা ফরিদ চটপটি বাবুলকে টাকার মাধ্যমে ম্যানেজ করে ছোলা ঘুগনির সাথে পারদ মিশিয়ে দেয়। তবে চটপটি বাবুল বিষয়টি আমার কাছে স্বীকার করে বলে, আমাকে ফরিদ ৫শ’ টাকা দিয়ে ছেলে বাবা মাসুম বিল্লাহ’র দোকানে দিতে বলে। আমি দিয়েছি তবে এর থেকে বেশি কিছু জানিনা।


মাসুম বিল্লাহ বলেন, আমার ছেলে রুহুলের সাথে একই এলাকার ওয়েল্ডিং মিস্ত্রী ফরিদের মেয়ে স্বর্ণালী খাতুনের সাথে ৩ বছর যাবত প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। একপর্যায়ে জানাজানি হলে মেয়ের বাবা ফরিদ কোর্টে রুহুলের নামে একটি নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে মামলা করেন। গতকাল রাতে চটপটি বাবুল আমাকে ছোলার ঘুগনি দিয়ে যায়। আমি অল্প কিছু খেয়ে বাসায় পাঠিয়ে দিলে পরিবারের সদস্যরা খায়। আমার মেয়ে খাওয়ায় সময় দেখতে পাই ছোলার মধ্যে দেখা যাচ্ছে ছোট ছোট অসংখ্য পারদ। পরে বিষয়টি এলাকার মেম্বরসহ সবাইকে জানালে তারা আমাদের উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নিয়ে যায়। তিনি আরো বলেন, আমাদের হত্যার উদ্দেশ্যে এই কাজ করেছে ফরিদ। আমি এর বিচার চাই। তবে এ বিষয়ে রাতে চুয়াডাঙ্গা সদর থানায় একটি অভিযোগ করেছেন বলে জানান তিনি।


এদিকে, গতকাল রাতে আহতের পরিবার ছোলার ঘুগনিসহ চুয়াডাঙ্গা সদর থানায় হাজির হয়। এতে অসংখ্য পারদ লক্ষ্য করা যায়। পরে থানা পুলিশ তাদেরকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে পাঠায়। গতকাল রাতে চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফেরেন সবাই। সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক বলেন, আমি সবাইকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়েছি। তবে পারদের তাৎক্ষনিক কোন প্রতিক্রিয়া হয়না। এটি আস্তে আস্তে প্রতিক্রিয়া হতে শুরু করে। এর ফলে কিডনি ও লিভার নষ্ট হয়ে যেতে পারে বলে জানান এবং খেলে মৃত্যুর ঝুঁকি আছে বলে জানান তিনি। এবিষয়ে চুয়াডাঙ্গা সদর থানার ডিউটি অফিসার রাহাত বলেন, এ বিষয়ে রাতে একটি অভিযোগ করেছে আহতের পক্ষ থেকে।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

একই পরিবারের ৭ জনকে হত্যার চেষ্টা : থানায় অভিযোগ

আপলোড টাইম : ০৮:৫১:৫৭ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১২ অগাস্ট ২০১৮

চুয়াডাঙ্গার আলুকদিয়ায় পূর্ব শত্রুতার জেরে ঘুগনির সাথে পারদ মিশিয়ে
নিজস্ব প্রতিবেদক: চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার আলুকদিয়ায় পুর্ব শত্রুতার জেরে ছোলা ঘুগনির সাথে পারদ মিশিয়ে একই পরিবারের ৭ জনকে হত্যার চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে একই এলাকার ফরিদের বিরুদ্ধে। তাদেরকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। গতকাল শনিবার রাত পৌনে ৯টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় চুয়াডাঙ্গা সদর থানায় আহতের পক্ষ থেকে একটি অভিযোগ দায়ের করেছে। আহতরা হলেন- চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার আলুকদিয়া বাজারপাড়ার মৃত শাহাদাতের ছেলে মুদি ব্যবসায়ী মাসুম বিল্লাহ ডাবলু (৫০), তার স্ত্রী রেবেকা খাতুন (৩৫), মেয়ে নবম শ্রেণীর ছাত্রী চাঁদনী খাতুন (১৫), ছেলে রাশেদ (৮), শ্যালিকা ময়না খাতুন (৩০), তার ছেলে ষষ্ঠ শ্রেণীর ছাত্র বাপ্পি (১৩), মেয়ে ৩য় শ্রেণীর ছাত্রী বর্ষা খাতুন (১১)।অভিযোগ সুত্রে জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার আলুকদিয়ার বাজারপাড়ার মাসুম বিল্লাহ’র ছেলে রুহুলের সাথে একই এলাকার ওয়েল্ডিং মিস্ত্রী ফরিদের মেয়ে স্বর্ণালী খাতুনের (১৭) সাথে ৩ বছর যাবত প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। এক পর্যায়ে জানাজানি হলে মেয়ের বাবা কোর্টে রুহুলের নামে একটি নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে মামলা করেন। এই মামলা এখন চলমান রয়েছে। গতকাল মেয়ের বাবা ফরিদ বাজারের চটপটিওয়ালা বাবুলকে টাকার মাধ্যমে ম্যানেজ করে ছোলা ঘুগনির সাথে পারদ মিশিয়ে দেয়। বাবুল বাজারের ছেলের বাবার মুদি ব্যবসায়ী মাসুম বিল্লাহ’র দোকানে দিয়ে পারদ মেশানো ছোলার ঘুগনি দিয়ে আসে। পরে মাসুম কিছু খেয়ে বাসায় পাঠায়। পরে পরিবারের সদস্যরা খাওয়ার সময় ছোলাতে পারদ দেখতে পায়। পরে বিষয়টি জানাজানি হলে তাদেরকে উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নেয়া হয়।
এলাকাবাসি ও স্থানীয় ইউপি সদস্য ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ছেলে মেয়ের প্রেম সম্পর্কের জেরে মেয়ের বাবা ফরিদ চটপটি বাবুলকে টাকার মাধ্যমে ম্যানেজ করে ছোলা ঘুগনির সাথে পারদ মিশিয়ে দেয়। তবে চটপটি বাবুল বিষয়টি আমার কাছে স্বীকার করে বলে, আমাকে ফরিদ ৫শ’ টাকা দিয়ে ছেলে বাবা মাসুম বিল্লাহ’র দোকানে দিতে বলে। আমি দিয়েছি তবে এর থেকে বেশি কিছু জানিনা।


মাসুম বিল্লাহ বলেন, আমার ছেলে রুহুলের সাথে একই এলাকার ওয়েল্ডিং মিস্ত্রী ফরিদের মেয়ে স্বর্ণালী খাতুনের সাথে ৩ বছর যাবত প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। একপর্যায়ে জানাজানি হলে মেয়ের বাবা ফরিদ কোর্টে রুহুলের নামে একটি নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে মামলা করেন। গতকাল রাতে চটপটি বাবুল আমাকে ছোলার ঘুগনি দিয়ে যায়। আমি অল্প কিছু খেয়ে বাসায় পাঠিয়ে দিলে পরিবারের সদস্যরা খায়। আমার মেয়ে খাওয়ায় সময় দেখতে পাই ছোলার মধ্যে দেখা যাচ্ছে ছোট ছোট অসংখ্য পারদ। পরে বিষয়টি এলাকার মেম্বরসহ সবাইকে জানালে তারা আমাদের উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নিয়ে যায়। তিনি আরো বলেন, আমাদের হত্যার উদ্দেশ্যে এই কাজ করেছে ফরিদ। আমি এর বিচার চাই। তবে এ বিষয়ে রাতে চুয়াডাঙ্গা সদর থানায় একটি অভিযোগ করেছেন বলে জানান তিনি।


এদিকে, গতকাল রাতে আহতের পরিবার ছোলার ঘুগনিসহ চুয়াডাঙ্গা সদর থানায় হাজির হয়। এতে অসংখ্য পারদ লক্ষ্য করা যায়। পরে থানা পুলিশ তাদেরকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে পাঠায়। গতকাল রাতে চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফেরেন সবাই। সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক বলেন, আমি সবাইকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়েছি। তবে পারদের তাৎক্ষনিক কোন প্রতিক্রিয়া হয়না। এটি আস্তে আস্তে প্রতিক্রিয়া হতে শুরু করে। এর ফলে কিডনি ও লিভার নষ্ট হয়ে যেতে পারে বলে জানান এবং খেলে মৃত্যুর ঝুঁকি আছে বলে জানান তিনি। এবিষয়ে চুয়াডাঙ্গা সদর থানার ডিউটি অফিসার রাহাত বলেন, এ বিষয়ে রাতে একটি অভিযোগ করেছে আহতের পক্ষ থেকে।