ইসলামে ভূমিকম্প

ধর্ম ডেস্ক: কিয়ামতকে কোরানে কারিমে বিভিন্ন নামে অভিহিত করা হয়েছে। সেই মহাপ্রলয়ঙ্করী কিয়ামত যে সংঘটিত হবে এতে কোনো সন্দেহ নেই। কিন্তু কিয়ামত কবে হবে তা একমাত্র আল্লাহতায়ালাই ভালো জানেন। তবে কিয়ামতের আলামত বা চিহ্ন সম্পর্কে কোরান-হাদিসে রয়েছে বিশদ বিবরণ। যেমন কোরানে ইরশাদ হয়েছে, ‘মহাপ্রলয়, মহাপ্রলয় কী? মহাপ্রলয় সম্বন্ধে তুমি কী জান? সেদিন মানুষ হবে বিক্ষিপ্ত পতঙ্গের মতো এবং পাহাড়-পর্বত হবে ধুনিত রঙিন পশমের মতো’ সূরা আল কারিয়া: ১-৫। হাদিসে কিয়ামতের যেসব আলামতের উল্লেখ রয়েছে, এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে ভূমিকম্প। কোরানে যেমন কিয়ামতের আলামতে ভূমিকম্পের কথা বলা হয়েছে, তেমনি সমুদ্র তলদেশে ভূকম্পনে উথলে উঠে পানির প্রচণ্ড তোড়ে স্থলভাগে ব্যাপক ধ্বংস কাণ্ডেরও উল্লেখ রয়েছে। ইরশাদ হয়েছে, যখন সূর্যকে নিষ্প্রভ করা হবে, যখন নক্ষত্ররাজি খসে পড়বে, পাহাড়-পর্বতকে যখন চলমান করা হবে, যখন পূর্ণগর্ভা উষ্ট্রী উপেক্ষিত হবে, যখন সব বন্য জীবজন্তু একত্র করা হবে, সমুদ্র যখন স্ফীত করা হবে সূরা তাকভির : ১-৬। কোরানে কারিমে এসব বিবরণ এ জন্য দেয়া হয়েছে, যাতে মানুষ সত্যের আলোয় নিজেকে আলোকিত করতে পারে, হেদায়েত লাভ করে আখেরাতের কল্যাণের নিশ্চয়তা লাভে নিজেকে ধন্য করতে পারে। ইসলামে অন্ধবিশ্বাস ও কুসংস্কারের কোনো স্থান নেই বরং এগুলোকে উৎখাত করে আলোকিত বিশ্বাস ও আলোকিত সংস্কারের পথের দিশা ইসলাম দিয়েছে। কিয়ামতের আলামত দেখা দিলে আলোকিত মানুষের মনে আল্লাহর গজবের কথা স্বাভাবিকভাবেই এসে যায়। আমরা ওই সব গজবকে প্রাকৃতিক দুর্যোগ বলি। ভূমিকম্প এর অন্যতম একটি। ভূমিকম্প বা সুনামি যে যাই বলি না কেন, তা কিয়ামতের কথাই স্মরণ করে দেয়। আসলে দুনিয়ার জীবন কারো একমাত্র জীবন নয়, এর পর রয়েছে আরেক জীবন। সেটাই হলো আসল জীবন-অনন্ত জীবন। দুনিয়ার কর্মের ওপর নির্ভর করে পরবর্তী জীবনের সুখ-স্বাচ্ছন্দ্য কিংবা অশান্তি-শান্তি। বস্তুত কিয়ামত যখন আসবে এবং হাশরের ময়দানে সমবেত হয়ে বিচারের সম্মুখীন হতে হবে তখন যাতে আমরা আল্লাহর নেকবান্দা এবং প্রিয়নবী (সা.)-এর অনুগত উম্মত হিসেবে নিজেদের প্রমাণ করতে পারি, সে জন্য আমাদের দুনিয়ার জীবনেই সত্য-সুন্দরের পথে চলতে হবে, সৎকর্ম করতে হবে, মানবিক মূল্যবোধকে আত্মস্থ করতে হবে তবেই শান্তি ও কল্যাণ নিশ্চিত হবে।