ইবিতে ছাত্রী নির্যাতনে চলছে চতুর্মুখী তদন্ত

সমীকরণ প্রতিবেদন:
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলে ছাত্রী নির্যাতনের ঘটনা তদন্তে কাজ করছে চারটি তদন্ত কমিটি। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন, হল প্রশাসন ও শাখা ছাত্রলীগের পরে এবার বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। সোমবার কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসক সাইদুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তবে ঘটনার এক সপ্তাহ পেরুলেও ওই হলের সিসিটিভি ফুটেজ উদ্ধার করতে পারেনি হল কর্তৃপক্ষ। বিশ^বিদ্যালয়ের নিজস্ব টেকনিশিয়ান দ্বারা ফুটেজ উদ্ধার সম্ভব নয় বলে জানা গেছে। সিসিটিভি ক্যামেরা থাকলেও এর আগে কয়েকটি ঘটনার পর পাওয়া যায়নি তার ফুটেজ। আইসিটি সেলের পরিচালক অধ্যাপক ড. আহসানুল আম্বিয়া জানান, ‘এ ঘটনার পরে হল কর্তৃপক্ষ সিসিটিভি উদ্ধারের জন্য আমাদের শরণাপন্ন হলে তাৎক্ষণিক দুইজন টেকনিশিয়ান পাঠাই; কিন্তু তারা ফুটেজ উদ্ধারে ব্যর্থ হয়। মূলত বায়োসের ব্যাটারি নষ্ট হওয়ার কারণে সেটি সম্ভব হচ্ছে না। বাহির থেকে টেকনিশিয়ার আনলে হয়তো ফুটেজ উদ্ধার সম্ভব হবে। তবে হল কর্তৃপক্ষ আমাকে এখনো এ বিষয়ে অবহিত করেননি।’ হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. শামসুল আলম বলেন, ‘টেকনিক্যাল ত্রুটির কারণে আমরা এখনো ফুটেজ সংগ্রহ করতে পারিনি। বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিটি সেলকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছিল; কিন্তু তারাও ব্যর্থ হয়েছে। আমরা খুব দ্রুত বাহির থেকে টেকনিশিয়ান আনার ব্যবস্থা করতেছি।’ গত ১৭ সেপ্টেম্বর ভিসির কার্যালয়ে সাবেক ছাত্রলীগের হামলার পর তার সিসিটিভি ফুটেজও উদ্ধার করতে পারেনি কর্তৃপক্ষ। এ ছাড়া গত ১৩ সেপ্টেম্বর লালন শাহ হলের পেছনে ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। হলের পেছনে সিসিটিভি ক্যামেরা থাকলেও তার কোনো ফুটেজ পাওয়া যায়নি। বারবার সিসিটিভি ফুটেজ উদ্ধারে ব্যর্থ হওয়ায় বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে সচেতন শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। এ দিকে বিষয়টি নিয়ে ভুক্তভোগী ও অভিযুক্তদের সাথে কথা বলেছেন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন, হল প্রশাসন ও শাখা ছাত্রলীগ কর্তৃক গঠিত তদন্ত কমিটি। এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. রেবা মণ্ডল বলেন, ‘আমি তদন্তের স্বার্থে আজো দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলের মেয়েদের সাথে কথা বলেছি। বিষয়টি আমরা গভীরভাবে পর্যালোচনা ও চেকিং করতেছি। তদন্তের স্বার্থে আর কিছু বলতে চাই না।’ এ দিকে গত সোমবার ভুক্তভোগীর সাথে কথা বলেছেন বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটির সদস্যরা। এ ছাড়া মঙ্গলবার সকাল ১০টার দিকে হাইকোর্টের নির্দেশে গঠিত তদন্ত কমিটি, বিশ্ববিদ্যালয়ের তদন্ত কমিটি ও হল তদন্ত কমিটি শেখ হাসিনা হলে প্রবেশ করে। বিকেল ৫টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় তদন্ত কমিটি ও হল তদন্ত কমিটি বের হয়। কিন্তু হাইকোর্টের নিদের্শে গঠিত তদন্ত কমিটি এ সংবাদ লেখা পর্যন্ত হলের ভেতরেই অবস্থান করছিল। এ সময় তারা হলের ছাত্রী ও বিশ্ববিদ্যালয়ের দুইজন সহকারী প্রক্টরকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন বলে জানা গেছে। গত রোববার রাতে কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল ইসলাম এই কমিটি গঠন করেন। কমিটির সদস্যরা হলেন- কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আ ন ম আবুজর গিফারী, সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মাহমুদা সুলতানা এবং ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাববিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ও সহকারী প্রক্টর শাহবুব আলম।