চুয়াডাঙ্গার অধিকাংশ গণপরিবহনে আগের ভাড়া নিলেও মানা হচ্ছে না স্বাস্থ্যবিধি
নিজস্ব প্রতিবেদক:
গণপরিবহনে করোনাভাইরাস সংক্রমণের আগের ভাড়া নেওয়ার নির্দেশনা মানলেও মানা হচ্ছে না স্বাস্থ্যবিধি। গতকাল বুধবার বিভিন্ন সময়ে শহরের বিভিন্ন বাসস্ট্যান্ডে ঘুরে ঘুরে দেখা গেছে এমনই চিত্র। মাস্ক পরার কঠোর নির্দেশনা থাকলেও তা মানছে না অধিকাংশ যাত্রীই। বাস মালিক সমিতির পক্ষ থেকে বার বার বলা সত্ত্বেও অনেকেই মাস্ক পরছেন না। আবার মাস্ক পরতে বললে অনেক যাত্রী উত্তেজিত হয়ে সুপারভাইজারদের সঙ্গে করছেন খারাপ আচরণ।
অপর দিকে, স্বাস্থ্যবিধি না মানা থেকে শুরু করে করোনাভাইরাস সংক্রমণের আগের ভাড়া নেওয়ার নির্দেশনাও মানছে না ইজিবাইকগুলো, এমনটিই অভিযোগ যাত্রী সাধারণের। একটি ইজিবাইকে ৬ থেকে ৮ জন উঠানো সত্ত্বেও ভাড়া ডাবল নেওয়া হচ্ছে বলে দাবি তাঁদের। তবে ইজিবাইক শ্রমিক সংগঠন থেকে জানানো হয়েছে, এ রকম ঘটনার নজির নেই। তারা সরকারি নির্দেশনা মানছেন।
করোনাভাইরাসের কারণে অর্ধেক সিট ফাঁকা রেখে যাত্রী পরিবহনের শর্তে গণপরিবহনে যে ৬০ শতাংশ ভাড়া বাড়ানো হয়েছিল, তা বাতিল করা হয়েছে। গত মঙ্গলবার থেকে যত আসন তত যাত্রী, এই নিয়মে চলছে গণপরিবহন। তিন মাস পর আগের ভাড়া কার্যকর হলেও গণপরিবহনে স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষিত। সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী বাসে সিট সংখ্যার অতিরিক্ত যাত্রী না তুললেও স্যানিটাইজার, মাস্ক ব্যবহারের নিয়মগুলো মানছেন না অনেক পরিবহন শ্রমিক ও যাত্রী। এনিয়ে সচেতন যাত্রীরা বলছেন, সবাইকে মাস্ক পড়ে পরিবহনে উঠবে। মাস্ক বাদে পরিবহনে উঠানো বন্ধ করলেই এ সমস্যার সমাধান হবে।
গতকাল সকাল থেকে বিভিন্ন সড়কে বাস, মিনিবাসসহ দূরপাল্লার বাসে করোনাভাইরাস সংক্রমণের আগের ভাড়ায় যাতায়াত করতে দেখা যায় যাত্রীদের। আগের ভাড়ায় ফিরে যাওয়ায় যাত্রীদের যেমন কোনো অভিযোগ ছিল না, তেমনি চালক, হেলপার কিংবা যাত্রী কারো মধ্যেই ছিল না স্বাস্থ্যবিধি মানার কোনো বালাই। মাস্ক, সামাজিক দূরত্ব, হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহারেরও ছিল না কোনো বালাই। যে যার মতো, অবাধে যাতায়াত করছে।
চুয়াডাঙ্গা জেলা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সভাপতি আলী রেজা সজল বলেন, ‘আমরা সব সময় শ্রমিকদের সরকারি নির্দেশনা মেনে চলার জন্য বলছি। শ্রমিকরাও সেটি মানছেন এবং সাধারণ যাত্রীদের মানানোর চেষ্টা করছেন। কিন্তু কিছু কিছু যাত্রী একেবারেই মানতে চাচ্ছে না। তারা এক প্রকার জোরপূর্বকই মাস্ক না পড়ে গাড়িতে উঠছেন। এই তো আজই এক সুপারভাইজার এক যাত্রীকে মাস্ক পরতে বলায় যাত্রী মারমুখী হয়ে বলেছেন ওসব করোনা-টরোনা কিছু হবে না। এরকম পরিস্থিতিতেও আমরা কঠোরভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার চেষ্টা করছি।’
চুয়াডাঙ্গা ইজিবাইক শ্রমিক কল্যাণ সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক শরিফুল ইসলাম সাজু বলেন, ‘ইজিবাইকে অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়ার কোনো নজির নেই। সরকারি নির্দেশনা মেনেই গত মঙ্গলবার থেকেই আবার আগের ভাড়া নেওয়া হচ্ছে। তবে কেউ কেউ যদি অতিরিক্ত ভাড়া নেয়, তবে সেটি আমরা দেখব। তা ছাড়া, আরও কঠোরভাবে সরকারি নির্দেশনা মানানোর জন্য বলব।’
গণপরিবহনের যাত্রী, চালক, সুপারভাইজার ও টিকেট সরবরাহকারীসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে অবশ্যই মাস্ক পরিধান করতে হবে জানিয়ে চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক নজরুল ইসলাম সরকার বলেন, ‘বাসে আসন সংখ্যার অতিরিক্ত কোনো যাত্রী পরিবহন করা যাবে না। স্বাস্থ্যবিধি মেনে গাড়ি চালাতে হবে এবং ট্রিপের শুরু ও শেষে যানবাহন জীবাণুমুক্ত করতে হবে। নির্দেশনা না মানলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’