আলমডাঙ্গার জাহাপুরে বাউল খোদা বকশ শাহ’র স্মরণোৎসব শেষ জন্ম ও মৃত্যু দিবস সরকারিভাবে পালনের দাবি ভক্তদের
- আপলোড টাইম : ১১:২৬:১২ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৬ জানুয়ারী ২০১৭
- / ৪২৪ বার পড়া হয়েছে
আলমডাঙ্গা অফিস: গতকাল ছিল আলমডাঙ্গা উপজেলার জাহাপুরে দেশবরেণ্য বাউলসাধক একুশে পদকপ্রাপ্ত খোদা বক্স শাহের ২৭তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে স্মরণোৎসবের শেষ দিন। শেষ দিনের অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাউল আব্দুল লতিফ শাহ। প্রধান অতিথি হিসাবে বক্তব্য রাখেন আলমডাঙ্গা উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান কাজী খালেদুর রহমান অরুন। এসময় তিনি বলেন, বাউলদের কোন ধর্মীয় ভেদাভেদ নেই। তারা মানব কল্যানে বিশ^াসী। আমি তাদের পথ ও মতকে শ্রদ্ধা করি। তিনি আলমডাঙ্গা কৃতি সন্তান একুশে পদকপ্রাপ্ত খোদাবক্স শাহর মাজার সরকারিভাবে সংরক্ষণ করার জন্য জেলা প্রশাসনের কাছে দাবি জানান। এসময় বিশেষ অতিথি ছিলেন ঢাকা শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালকের প্রতিনিধি হিসাবে আগত আব্দুল্লাহ বিপ্লব, তন্ময় সরকার অঞ্চল, প্রেসক্লাব সভাপতি খ. হামিদুল ইসলাম আজম, অমিত চ্যাটার্জি, রতন মন্ডল, সিনথিয়া রহমান, সাংবাদিক প্রশান্ত বিশ^াস। আলমডাঙ্গার জাহাপুরে মরমি কবি খোদা বক্স শাহ বাংলা ১৩৩৪ সালের ৩০ চৈত্র (১৯২৮ খ্রিস্টাব্দ) জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ঘোলদাড়ি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত লেখাপড়া করেন। এরপর তিনি অভিনয় ও সংগীতে আকৃষ্ট হন। যাত্রাদলে যোগ দেন। তাঁর ছিল সুরেলা কণ্ঠ। যাত্রামঞ্চে তিনি বিবেকের ভূমিকায় অভিনয় করতেন। ১৬ বছর বয়স পর্যন্ত তিনি যাত্রাদলে ছিলেন। ১৭ বছর বয়সে খোদা বক্স ভাবসংগীত শিক্ষায় আগ্রহী হয়ে ওঠেন। তিনি হরিণাকু-ুর শুকচাঁদ শাহর শিষ্যত্ব গ্রহণ করেন। পরে তিনি যান অমূল্য শাহর আখড়ায়। সেখানে তিনি ভাবসংগীতে অসাধারণ দক্ষতা অর্জন করেন। ১৯৭৬ সালে খোদা বকশ ফকিরী পোশাক গ্রহণ করেন। ১৯৮৩ সালের ৯ জুন বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমিতে লালনসংগীতের শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন। ১৯৮৫ সালে বাংলা একাডেমি খোদা বক্স শাহকে বাংলা একাডেমি ‘ফেলো’ পদ প্রদান করে। ১৯৮৬ সালে খোদা বক্স শাহ হৃদরোগে আক্রান্ত হন। ১৯৮৭ সালের ৩১ মার্চ তিনি শিল্পকলা একাডেমির চাকরি ছেড়ে নিজের আখড়ায় ফিরে আসেন। ১৯৮৯ সালের শেষ দিকে তিনি ভীষণ অসুস্থ হয়ে পড়েন। ১৯৯০ সালের ১৪ জানুয়ারি (১ মাঘ) তিনি মারা যান। খোদাবকশ শাহ স্ত্রী রাহেলা খাতুন, ছেলে আবদুল লতিফ শাহ ও কন্যা মালঞ্চকে রেখে যান। নিজস্ব আখড়াবাড়িতে তাঁকে সমাহিত করা হয়। ১৯৯১ সালে খোদা বক্স শাহকে বাংলা একাডেমি মরণোত্তর একুশে পদক দেয়। খোদা বক্স শাহ ৯৫০টি গান রচনা করেন। তাঁর মাজারটি অযতœ-অবহেলায় পড়ে আছে। সমাধিস্থলকে ঘিরে পূর্ণাঙ্গ কমপ্লেক্স নির্মাণ এবং জন্ম-মৃত্যু দিবস দুটি সরকারিভাবে পালনের দাবি তুলেছেন তাঁর ভক্তরা। খোদাবক্স শাহর ছেলে আবদুল লতিফ শাহ ‘মনের মানুষ’ চলচ্চিত্রে লালনের আদি সুরের গান গেয়ে খ্যাতি অর্জন করেন।