
আলমডাঙ্গা অফিস:
আলমডাঙ্গা উপজেলা প্রশাসন ও সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ের উদ্যোগে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের অপব্যবহার রোধ, ধর্মীয় উগ্রবাদ ও জঙ্গিবাদ মোকাবিলা, নারী ও শিশুর প্রতি সহিংসতা নিপিড়ন ও বৈষম্যমূলক আচরণ বন্ধে পদক্ষেপ গ্রহণ এবং শিক্ষার মান উন্নয়ন বিষয়ে শিক্ষক, অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের নিয়ে মতবনিমিয় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। একই অনুষ্ঠানে শিক্ষাবৃত্তি ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে বাইসাইকেল বিতরণ করা হয়। গতকাল সোমবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে আলমডাঙ্গা পাইলট সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয় চত্বরে এ মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। আলমডাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. রনি আলম নূরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আমিনুল ইসলাম খান।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘জীবনটা কিন্তু খুব কঠিন, আবার খুব সম্ভাবনাময়। মনে রেখো, হাইস্কুলের জীবনটা মজার। কারণ বড় হবার পর তোমরা এমন সুযোগ আর পাবে না। মনে রেখো সময়কে সবচাইতে যে কাজে লাগাতে পারবে, সে সফল হবে। আর যে সময়কে হেলাফেলা করবে, তারা সফলতা লাভ থেকে বঞ্চিত হবে।’ তিনি অভিভাবকদের উদ্দেশ্যে বলেন, একটা ছেলে বা মেয়ে স্কুলে কতক্ষণ থাকে, বেশিরভাগ সময় বাড়িতে থাকে। তাই অভিভাবকদেরকে অবশ্যই তাদের খোঁজখবর নিতে হবে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশের পিছিয়ে পড়া সম্প্রদায়ের জন্য বিশেষ সুযোগ-সুবিধা দিচ্ছে। সংবিধানে দেশের সকল মানুষের সমান অধিকার। কিন্তু তারা অনেকটা পিছিয়ে রয়েছে। তাই সরকার তাদের জন্য প্রতিবছর তালিকা করে ঘর নির্মাণ করে দিচ্ছে।
জেলা প্রশাসক আরও বলেন, ‘আলমডাঙ্গা সরকারি স্কুলের অনেক শিক্ষার্থী জিপিএ-৫ পেয়েছে। কিন্তু শিক্ষার মান কমে যাচ্ছে। শুধু জিপিএ-৫ পেয়ে বড় বড় কলেজে ভর্তিযুদ্ধেও তারা পিছিয়ে পড়ছে, চাকরির ক্ষেত্রে তারা সফল হচ্ছে না। এর কারণ শিক্ষার মান কমে যাওয়া। তাই তোমাদের সত্যিকারের সুশিক্ষায় শিক্ষিত হতে হবে। মনে রেখো, স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে হলে তোমাদের সুশিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে স্মার্ট হতে হবে।’
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) রেজওয়ানা নাহিদ, চুয়াডাঙ্গা ডিসি অফিসের সহকারী কমিশনার (ভূমি) আব্দুর রহমান, আলমডাঙ্গা একাডেমিক সুপারভাইজার ইমরুল হক, সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রবিউল ইসলাম খান, সহকারী প্রধান শিক্ষক ইলিয়াস হোসেন ও থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) জমির হোসেন। সহকারী শিক্ষক আনোয়ারুজ্জামানের উপস্থাপনায় বক্তব্য দেন অভিভাবক প্রতিনিধি হাবিবুল করিম ওরফে চঞ্চল মাহমুদ, অভিভাবক প্রতিনিধি আফরোজা পারভীন, মানপত্র পাঠ করেন দশম শ্রেণির ছাত্র সামিউল বাসিদ। আরও বক্তব্য দেন দশম শ্রেণির ছাত্র সোয়াদ হাসান, শুদ্ধপাল, নাঈমুর রহমান, শাহরিয়ার তূর্য প্রমুখ।
অনুষ্ঠান শেষে উপজেলার ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী, কোল ও বাগদি সম্প্রদায়ের ১০ জন ছাত্র-ছাত্রীকে বাইসাইকেল ও উপবৃত্তির টাকা প্রদান করা হয়। দ্বাদশ-একাদশ শ্রেণির ৮ জনকে ৯ হাজার ৬ শ টাকা করে মোট ৭৬ হাজার ৮ শ টাকা, ৬ষ্ঠ ও দশম শ্রণির ২২ জনকে ৬ হাজার করে মোট ১ লাখ ৩২ হাজার টাকা, ১ম থেকে ৫ম শ্রেণি পর্যন্ত ৮০ জনকে ২ হাজার ৪ শ করে মোট ১ লাখ ৯২ হাজার টাকাসহ মোট ৪ লাখ ৮ শ টাকার শিক্ষাবৃত্তি প্রদান করা হয়।