
সমীকরণ প্রতিবেদন:
আজ জানা যাবে কে হচ্ছেন দেশের ২২তম রাষ্ট্রপতি। এ নির্বাচনের মনোনয়নপত্র দাখিলের সময় শেষ হবে আজ বিকাল ৪টায়। ফলে আজ স্পষ্ট হয়ে যাবে কে হচ্ছেন দেশের পরবর্তী রাষ্ট্রপতি। নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, গতকাল পর্যন্ত কেউ রাষ্ট্রপতি পদে নির্বাচনের মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেননি। তফসিল অনুযায়ী, আজ সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত সময়ের মধ্যে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে ‘নির্বাচনী কর্তা’র (প্রধান নির্বাচন কমিশনার) কার্যালয়ে মনোনয়নপত্র দাখিল করা যাবে; মনোনয়নপত্র পরীক্ষা হবে কাল ১৩ ফেব্রুয়ারি সকাল ১০টা থেকে পরীক্ষা শেষ না হওয়া পর্যন্ত। প্রার্থিতা প্রত্যাহারের সময় ১৪ ফেব্রুয়ারি বিকাল ৪টা পর্যন্ত। আইন অনুয়ায়ী নির্বাচনী কর্মকর্তা কাল মনোনয়নপত্র পরীক্ষা করবেন। প্রার্থী একজন হলে এবং পরীক্ষায় তার মনোনয়নপত্র বৈধ বিবেচিত হলে কমিশন তাকে নির্বাচিত ঘোষণা করবে। তবে একাধিক প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বৈধ হলে নির্বাচনের জন্য তাদের নাম ঘোষণা করবে ইসি। একাধিক প্রার্থী হলে সংসদের অধিবেশন কক্ষে নির্বাচনী কর্মকর্তা ভোটের আয়োজন করবেন। রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে ভোটার সংসদ সদস্যরা। চলতি সংসদে আওয়ামী লীগের নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা আছে। ফলে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ যাকে রাষ্ট্রপতি পদের জন্য মনোনীত করবে, তিনিই পরবর্তী রাষ্ট্রপতি হবেন।
ইসির কর্মকর্তারা বলছেন, রাষ্ট্রপতি নির্বাচন আইনে মনোনয়নপত্র দাখিল সম্পর্কে বলা আছে, মনোনয়নপত্র দাখিলের জন্য নির্ধারিত দিনে ও সময়ের মধ্যে কোনো সংসদ-সদস্য রাষ্ট্রপতি পদে নির্বাচিত হওয়ার যোগ্যতাসম্পন্ন কোনো ব্যক্তিকে ওই পদের জন্য মনোনীত করে নির্বাচনী কর্তার কাছে একটি মনোনয়নপত্র দিতে পারবেন, যে মনোনয়নপত্রে প্রস্তাবক হিসেবে তার স্বাক্ষর থাকবে এবং সমর্থক হিসেবে অন্য একজন সংসদ-সদস্যের স্বাক্ষর থাকবে; সেই সঙ্গে যিনি রাষ্ট্রপতি পদের জন্য মনোনীত হতে যাচ্ছেন, তারও ওই মনোনয়নে সম্মতিসূচক স্বাক্ষরিত বিবৃতি থাকবে। তবে প্রস্তাবক বা সমর্থক হিসেবে কোনো সংসদ সদস্য একটির বেশি মনোনয়নপত্র সই করবেন না। এদিকে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের উত্তরসূরি কে হচ্ছেন, তা নিয়ে জল্পনা-কল্পনার শেষ নেই। আওয়ামী লীগ কাকে এ পদে মনোনয়ন দিচ্ছে তা নিয়ে সবার আগ্রহ থাকলেও এখন পর্যন্ত ক্ষমতাসীনরা কারও নাম প্রকাশ করেনি। গত বুধবার জাতীয় সংসদ ভবনে সংসদীয় দলের বৈঠক করেছিল আওয়ামী লীগ। সেখানে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে দলের প্রার্থী মনোনীত করার ক্ষমতা দলের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দেওয়া হয়।
সর্বশেষ রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের তফসিল হয়েছে ২০১৮ সালের ২৫ জানুয়ারি। সেবার ১৮ ফেব্রুয়ারি ভোটের তারিখ থাকলেও একক প্রার্থী হওয়ায় বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ৬ ফেব্রুয়ারি রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন মো. আবদুল হামিদ। রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন সংসদ সদস্যদের ভোটে। সংসদে আওয়ামী লীগের নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকায় তাদের প্রার্থীর রাষ্ট্রপতি হওয়াটা প্রায় নিশ্চিত। ১৯৯১ সালের রাষ্ট্রপতি আইনের সপ্তম ধারায় বলা হয়েছে- নির্বাচনী কর্মকর্তা নির্ধারিত দিন, সময় ও স্থানে মনোনয়নপত্র পরীক্ষা করবেন। প্রার্থী একজন হলে এবং পরীক্ষায় তার মনোনয়নপত্র বৈধ বিবেচিত হলে কমিশন তাকে নির্বাচিত ঘোষণা করবে। তবে একাধিক প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বৈধ হলে নির্বাচনের জন্য তাদের নাম ঘোষণা করবে ইসি। একাধিক প্রার্থী হলে সংসদের অধিবেশন কক্ষে নির্বাচনী কর্মকর্তা ভোটের আয়োজন করবেন। নির্ধারিত ব্যালট পেপারে পছন্দের প্রার্থীর নাম লিখে নিজের সই দিয়ে তা জমা দেবেন সংসদ সদস্যরা। ভোটের দিন গ্যালারিসহ সংসদ কক্ষে প্রার্থী, ভোটার, ভোট নেওয়ায় সহায়তাকারী কর্মকর্তা ছাড়া সবার প্রবেশাধিকার নিয়ন্ত্রিত থাকবে। ভোট শেষে নির্বাচন কমিশনার প্রকাশ্যে ভোট গণনা করবেন। সর্বাধিক ভোটপ্রাপ্তকে রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত ঘোষণা করা হবে। আর সমান ভোট পেলে প্রার্থীদের মধ্যে লটারির মাধ্যমে ফল নির্ধারণ করা হবে। রাষ্ট্রপতি নির্বাচন আইন অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন সংসদ সদস্যদের ভোটে। আর প্রধান নির্বাচন কমিশনার তাতে নির্বাচনী কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।