সমীকরণ প্রতিবেদন: মেহেরপুরের গাংনীতে পাখিভ্যান নিয়ে যাওয়ার পথে ছেড়ে দিলেও ফিরতি পথে ছিনতাইকারীর কবল থেকে অল্পের জন্য জান-মালের রক্ষা পেয়েছেন বয়েন উদ্দীন নামের এক ভ্যানচালক। গতকাল বুধবার রাত সাড়ে ৭টার দিকে গাংনী উপজেলার লক্ষ্মীনারায়ণপুর-তেঁতুলবাড়ীয়া সড়কের ধলার মাঠে পাকুড়তলায় এ ঘটনা ঘটে।
পাখিভ্যান চালক মাইলমারী গ্রামের বয়েন উদ্দীন জানান, তিনি রামদেবপুরের গরু ব্যবসায়ী বাবলু, কুলসুম, লাভলী ও ২ জন বাচ্চাসহ কয়েকজন যাত্রী নিয়ে যাচ্ছিলেন। পথের মধ্যে ধলার মাঠে পাকুড়তলায় পৌঁছালে দেশীয় অস্ত্রসস্ত্র নিয়ে ৭-৮ জনের একটি ছিনতাইকারী দল তার গতিরোধ করে। এসময় তাদের সাথে কথা-কাটাকাটির একপর্যায়ে গলায় হাঁসুয়া ঠেকিয়ে পাখিভ্যান ও যাত্রীদের কাছে থাকা নগদ অর্থ ও অন্যান্য মালামাল ছিনিয়ে নেয়। সে সময় চালক মাইলমারী গ্রামের পরিচয় দিলে এবং যাত্রীরা রামদেবপুরে যাচ্ছে জানালে তাদের ছেড়ে দেয় ছিনতাইকারী দল। পরক্ষণে যাত্রী রেখে বাড়ি ফেরার পথে ছিনতাইকারীরা আবারও বয়েন উদ্দীনের গতিরোধ করে পাখিভ্যান ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। এসময় ছিনতাইকারীদের সাথে আবারও বাগবিতণ্ডা ও হাতাহাতি শুরু হয় বয়েন উদ্দীনের। ঘটনাস্থলে বয়েন উদ্দীনকে মারধরও করা হয়। হঠাৎ লক্ষ্মীনারায়ণপুরের দিক থেকে যাত্রী বোঝায় আরও দুটি আলগামন আসলে সড়ক থেকে ছিনতাইকারীরা সুকৌশলে মাঠের মধ্যে পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়। ঘটনায় পাখিভ্যানের চালক বয়েন উদ্দীন ছিনতাইকারীর কয়েকজনকে শনাক্ত করতে পেরেছেন বলে জানান।
এবিষয়ে তেঁতুলবাড়ীয়া ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বারকে ছিনতাইকারী শনাক্তের বিষয়ে অবহিত করলে আজ বৃহস্পতিবার তেঁতুলবাড়ীয়া ইউনিয়ন পরিষদের এসে বিষয়টি নিয়ে সমাধানের কথা জানান তিনি। মাইলমারী গ্রামের আনছার আলম জানান, ধলার মাঠের রাস্তায় ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে। এতে কয়েকজনকে শনাক্ত করে তাদের নামের লিস্ট করা হয়েছে। মাইলমারী গ্রামের অপর একজন মাসুদুর রহমান খোকন জানান, আমার চাচা বয়েন উদ্দীন যাত্রীসহ পাখিভ্যান নিয়ে তেঁতুলবাড়ীয়া যাবার পথে ছিনতাইকারীরা গতিরোধ করে মারধর করেছে চাচাকে। এসময় তিনি কয়েকজন ছিনতাইকারীকে শনাক্ত করেছেন। রাত হওয়ায় থানায় যেতে পারিনি। তাছাড়া তেঁতুলবাড়ীয়া ইউপি সদস্য সমাধান করবেন বলে জানিয়েছেন। সমাধান না হলে বৃহস্পতিবার ছিনতাইকারীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান।
তেঁতুলবাড়ীয়া গ্রামের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন জানান, এ সড়ক দিয়ে ভারত থেকে আসা মাদকদ্রব্য পাচার হয়ে বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে যাচ্ছে। অনেক সময় মাদকদ্রব্য পাচারের উদ্দেশ্যেও পাচারকারীরা দেশীয় অস্ত্রসস্ত্র নিয়ে অবস্থান করে থাকে। তবে পুলিশি টহলের ব্যবস্থা করা হলে সড়ক দিয়ে চলাচলকারীরা নিরাপদে চলতে পারবে। তাছাড়া মাদকদ্রব্য পাচারও নিয়ন্ত্রণে আসবে। তিনি আরও জানান, দীর্ঘদিন ধরে সন্ধ্যা হলেই এসড়কে চলাচল ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ে। বিভিন্ন সময়ে ছিনতাইয়ের ঘটনাও ঘটেছে। এমতবস্থায় পুলিশি টহল জরুরি হয়ে পড়েছে। এ রিপোর্ট লেখা অব্দি গাংনী থানার ওসি আব্দুর রাজ্জাককে বিষয়টি সম্বন্ধে জানতে ফোন করা হলে তার মোবাইল ফোনটি ব্যস্ত পাওয়া যায়।