ইপেপার । আজ সোমবার, ০২ ডিসেম্বর ২০২৪

অপহরণের ঘটনা বাড়ছে : আতঙ্ক দূর করতে ব্যবস্থা নিন

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৯:১৮:২৪ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৯ জুলাই ২০১৮
  • / ৩৫৮ বার পড়া হয়েছে

অপহরণকারীরা যে বেপরোয়া হয়ে পড়েছে, গত শুক্রবারের ঘটনাটিই তার বড় প্রমাণ। পারভেজ সরকার কুমিল্লার তিতাস উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান। আগামী সংসদ নির্বাচনে তিনি আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশীদের একজন। সরকারদলীয় এই রাজনীতিবিদ কুমিল্লা উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য। তাঁকেই দিনদুপুরে অপহরণ করা হয় লালমাটিয়ায় তাঁর নিজ বাসার সামনে থেকে। রাতে পরিবারের লোকজন তাঁকে রাজধানীর ৩০০ ফুট এলাকা থেকে উদ্ধার করে। পারিবারিক বা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সূত্রে এর বেশি কিছু গণমাধ্যমের খবরে আসেনি। যেটুকু খবর শনিবারের পত্রপত্রিকায় এসেছে, তাতে আতঙ্কিত হওয়ার যথেষ্ট কারণ রয়েছে। প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে পুলিশের এক দায়িত্বশীল কর্মকর্তা বলেছেন, তাদের কাছে অস্ত্র ও ওয়্যারলেস ছিল। এই ছোট তথ্যটিই মানুষের মনে আতঙ্ক ছড়িয়ে দিতে যথেষ্ট। একের পর এক অপহরণের ঘটনা ঘটেই চলেছে, কোনো প্রতিকার নেই। কখনো কখনো অপহৃতদের জীবিত উদ্ধার করা হচ্ছে। অপহরণকারীরা রাস্তার ধারে ফেলে রেখে যাচ্ছে। অপহরণ করে হত্যার ঘটনাও ঘটছে কিš বেশির ভাগ ঘটনারই কিনারা হচ্ছে না। কে বা কারা, কেন অপহরণ করে নিয়ে যাচ্ছে, তার কোনো সুরাহা হচ্ছে না। আর তা হচ্ছে না বলেই একের পর এক ঘটনা ঘটেই চলেছে। সর্বশেষ সরকারদলীয় নেতাকে রাজধানী থেকে অপহরণের ঘটনা ঘটল, ভরদুপুরে। রাজধানীতেই যদি সরকারদলীয় নেতার ক্ষেত্রে এমন ঘটনা ঘটে, তাহলে সারা দেশের সাধারণ মানুষের কী অবস্থা? না, পারভেজ সরকার অপহরণ ঘটনাকে কোনোভাবেই খাটো করে দেখার কোনো সুযোগ নেই। বিচ্ছিন্ন ঘটনা বলে এড়িয়েও যাওয়া যাবে না। মানতে হবে একাধিক সংঘবদ্ধ চক্র নতুন করে সক্রিয় হয়েছে। নির্বাচনের দিন যত এগিয়ে আসবে এই চক্রগুলো আরো বেশি সক্রিয় হবে। সাধারণ মানুষের জীবনের নিরাপত্তা নতুন করে আবার হুমকির মুখে পড়বে। এখনই লাগাম টেনে ধরতে না পারলে গুম-খুন-অপহরণ নিত্যদিনের ঘটনা হয়ে দাঁড়াবে। রাজনীতিবিদ, ব্যবসায়ী, পেশাজীবী, শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে কেউই হয়তো তখন রেহাই পাবে না। জনমনে নতুন করে আতঙ্ক ছড়াবে। বিশেষ করে নির্বাচনের আগে এ ধরনের আতঙ্ক ছড়িয়ে যেমন প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করা যাবে, তেমনি সরকারের সম্পর্কেও জনমনে একধরনের নেতিবাচক ধারণা জন্ম নেবে। কাজেই জনমনে সৃষ্ট এ আতঙ্ক দূর করার দায়িত্ব সরকারকেই নিতে হবে। সরকারের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে সক্রিয় হতে হবে। সব অপহরণের ঘটনার রহস্য ভেদ করা না গেলে মানুষের মনে আস্থা ফিরবে না। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ভূমিকাও প্রশ্নবিদ্ধ হবে। অপহরণের পেছনে নানা ধরনের উদ্দেশ্য কাজ করে। ব্যক্তিগত বা পারিবারিক শত্রুতা, মুক্তিপণ আদায়, ব্যাবসায়িক বিরোধ ইত্যাদি কারণে অপহরণের ঘটনা ঘটে থাকতে পারে। আবার রাজনৈতিক কারণও অপহরণের ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা রাখে বলে অনেকের ধারণা। কাজেই সব অপহরণের ঘটনার রহস্য ভেদ করে মানুষের মন থেকে আতঙ্ক দূর করতে হবে।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

অপহরণের ঘটনা বাড়ছে : আতঙ্ক দূর করতে ব্যবস্থা নিন

আপলোড টাইম : ০৯:১৮:২৪ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৯ জুলাই ২০১৮

অপহরণকারীরা যে বেপরোয়া হয়ে পড়েছে, গত শুক্রবারের ঘটনাটিই তার বড় প্রমাণ। পারভেজ সরকার কুমিল্লার তিতাস উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান। আগামী সংসদ নির্বাচনে তিনি আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশীদের একজন। সরকারদলীয় এই রাজনীতিবিদ কুমিল্লা উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য। তাঁকেই দিনদুপুরে অপহরণ করা হয় লালমাটিয়ায় তাঁর নিজ বাসার সামনে থেকে। রাতে পরিবারের লোকজন তাঁকে রাজধানীর ৩০০ ফুট এলাকা থেকে উদ্ধার করে। পারিবারিক বা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সূত্রে এর বেশি কিছু গণমাধ্যমের খবরে আসেনি। যেটুকু খবর শনিবারের পত্রপত্রিকায় এসেছে, তাতে আতঙ্কিত হওয়ার যথেষ্ট কারণ রয়েছে। প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে পুলিশের এক দায়িত্বশীল কর্মকর্তা বলেছেন, তাদের কাছে অস্ত্র ও ওয়্যারলেস ছিল। এই ছোট তথ্যটিই মানুষের মনে আতঙ্ক ছড়িয়ে দিতে যথেষ্ট। একের পর এক অপহরণের ঘটনা ঘটেই চলেছে, কোনো প্রতিকার নেই। কখনো কখনো অপহৃতদের জীবিত উদ্ধার করা হচ্ছে। অপহরণকারীরা রাস্তার ধারে ফেলে রেখে যাচ্ছে। অপহরণ করে হত্যার ঘটনাও ঘটছে কিš বেশির ভাগ ঘটনারই কিনারা হচ্ছে না। কে বা কারা, কেন অপহরণ করে নিয়ে যাচ্ছে, তার কোনো সুরাহা হচ্ছে না। আর তা হচ্ছে না বলেই একের পর এক ঘটনা ঘটেই চলেছে। সর্বশেষ সরকারদলীয় নেতাকে রাজধানী থেকে অপহরণের ঘটনা ঘটল, ভরদুপুরে। রাজধানীতেই যদি সরকারদলীয় নেতার ক্ষেত্রে এমন ঘটনা ঘটে, তাহলে সারা দেশের সাধারণ মানুষের কী অবস্থা? না, পারভেজ সরকার অপহরণ ঘটনাকে কোনোভাবেই খাটো করে দেখার কোনো সুযোগ নেই। বিচ্ছিন্ন ঘটনা বলে এড়িয়েও যাওয়া যাবে না। মানতে হবে একাধিক সংঘবদ্ধ চক্র নতুন করে সক্রিয় হয়েছে। নির্বাচনের দিন যত এগিয়ে আসবে এই চক্রগুলো আরো বেশি সক্রিয় হবে। সাধারণ মানুষের জীবনের নিরাপত্তা নতুন করে আবার হুমকির মুখে পড়বে। এখনই লাগাম টেনে ধরতে না পারলে গুম-খুন-অপহরণ নিত্যদিনের ঘটনা হয়ে দাঁড়াবে। রাজনীতিবিদ, ব্যবসায়ী, পেশাজীবী, শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে কেউই হয়তো তখন রেহাই পাবে না। জনমনে নতুন করে আতঙ্ক ছড়াবে। বিশেষ করে নির্বাচনের আগে এ ধরনের আতঙ্ক ছড়িয়ে যেমন প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করা যাবে, তেমনি সরকারের সম্পর্কেও জনমনে একধরনের নেতিবাচক ধারণা জন্ম নেবে। কাজেই জনমনে সৃষ্ট এ আতঙ্ক দূর করার দায়িত্ব সরকারকেই নিতে হবে। সরকারের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে সক্রিয় হতে হবে। সব অপহরণের ঘটনার রহস্য ভেদ করা না গেলে মানুষের মনে আস্থা ফিরবে না। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ভূমিকাও প্রশ্নবিদ্ধ হবে। অপহরণের পেছনে নানা ধরনের উদ্দেশ্য কাজ করে। ব্যক্তিগত বা পারিবারিক শত্রুতা, মুক্তিপণ আদায়, ব্যাবসায়িক বিরোধ ইত্যাদি কারণে অপহরণের ঘটনা ঘটে থাকতে পারে। আবার রাজনৈতিক কারণও অপহরণের ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা রাখে বলে অনেকের ধারণা। কাজেই সব অপহরণের ঘটনার রহস্য ভেদ করে মানুষের মন থেকে আতঙ্ক দূর করতে হবে।