অনশন ভাঙাতে এগিয়ে আসেননি কেউ!

গাংনীতে পাওনা টাকার দাবিতে মেয়রের বিরুদ্ধে মা-মেয়র অনশন
গাংনী অফিস:
গাংনী পৌর মেয়রের কাছে পাওনা টাকার দাবিতে অনশনরত মা-মেয়ের পাশে নেই তাঁদের পরামর্শদাতাসহ প্রশাসনের লোকজন। অনশন ভাঙাতে কেউ এগিয়ে আসেননি। আবার কেউ মধ্যস্থতার হাতও বাড়িয়ে দেননি। অনেকেই এ অনশনকে রাজনৈতিক ইস্যু বলে মন্তব্য করছেন।
অনশনরত মৌমিতা খাতুন পলি জানান, ‘গাংনী পৌরসভায় সহকারী কর আদায়কারী পদে নিয়োগের জন্য পৌর মেয়র আশরাফুল ইসলামের সঙ্গে ১৫ লাখ টাকা প্রদান করা হয়। অথচ ২০১৮ সালে আমাকে নিয়োগ না দিয়ে অন্য একজনকে সহকারী কর আদায়কারী পদে নিয়োগ দেন মেয়র আশরাফুল। টাকা ফেরত চেয়ে বারবার তাগাদা দিলেও কোনো কর্ণপাত না করায় গত ২০ আগস্ট বৃহস্পতিবার অনশন করি। পরে গাংনী থানার ওসির ডাকে সাড়া দিয়ে অনশন ভঙ্গ করি। পরদিন থানায় এক সালিশে উপজেলা পরিসদের চেয়ারম্যান এমএ খালেকসহ পৌর কাউন্সিলরগণ উপস্থিত ছিলেন। ওই সময় মেয়র আশরাফুল ইসলাম জানান, জমি কেনার জন্য পলির স্বামী মোমিন টাকা তাকে দিয়েছিলেন। চাকরির জন্য নয়। যেহেতু পলির স্বামী মোমিন টাকা দিয়েছিল, তাকে ফেরত দিয়েছি। পরে আরেক বৈঠকে স্বামী মোমিন হাজির হলেও মেয়র উপস্থিত হননি। বাধ্য হয়ে আবারো অনশন শুরু করেছি।’
গাংনী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ওবাইদুর রহমান জানান, ‘অনশনের বিষয়টি জেনেছি। আমরা স্থানীয় ব্যক্তিবর্গ ও মেয়র সাহেবের সঙ্গে বসেছিলাম। বিষয়টি অমীমাংশিত রয়ে গেছে। তবে এসব বিষয়ে আদালতের শরণাপন্ন হওয়া ছাড়া কোনো উপায় দেখছি না।’ তিনি আরও জানান, অনশনরত ব্যক্তিদের কেউ সমস্যা না করতে পারে, সে জন্য পুলিশ প্রহরার ব্যবস্থা করা হয়েছে।’
গাংনী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সেলিম শাহনেওয়াজ জানান, ‘অনশন ও টাকার বিষয়ে মেয়র বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা ও প্রশাসনিক কর্মকর্তাকে বাইপাস করছে। বিষয়টি জেলা প্রশাসককে জানানো হয়েছে।’
একটি সূত্র জানায়, ক্ষমতাসীন দলের এক নেতা ও কয়েকজন পৌর কাউন্সিলর রাজনৈতিক সুবিধা নেওয়ার জন্য এবং মেয়রকে খাটো করার জন্য পলি ও তাঁর মাকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে। যারা অনশনের পরামর্শ দিয়েছেন, তারা এখন কোনো খোঁজ রাখছেন না পলি ও তাঁর মায়ের। ফলে চরম বিপাকে পড়েছেন তাঁরা। অপর একটি সূত্র জানান, আশরাফুল ইসলামের প্রতিপক্ষ ও আগামী নির্বাচনে সম্ভাব্য এক প্রার্থীর পরামর্শে পলি ও তাঁর মা বারবার অনশন করছেন। ফলে মেয়র আশরাফুল ইসলাম আরও রাগান্বিত হয়েছেন।
এদিকে অনশনরতদের বাহ্যিক ব্যবহারে অনেকেই নানা মন্তব্য করেছেন। গত তিন দিন অনশনে থাকলে অসুস্থ হবার কথা। কিন্তু তা হয়নি। মাঝে মধ্যে পলি শহীদ মিনার ছেড়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন আবার পলির মা বাড়ি গিয়ে সাংসারিক কাজ সেরে আনুষ্ঠানিকভাবে বসছেন অনশনে।