ইপেপার । আজমঙ্গলবার, ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

চুয়াডাঙ্গার পোশাক তৈরির কারিগররা

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৯:৫৯:৫০ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৩ মে ২০১৯
  • / ৪৬৯ বার পড়া হয়েছে

ঈদ-উল-ফিতরকে সামনে রেখে ব্যস্ত সময় পার করছেন
আফজালুল হক:
পবিত্র ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে চুয়াডাঙ্গায় ব্যস্ত সময় পার করছেন দর্জিপাড়ার কারিগররা। ঈদ যত এগিয়ে আসছে ততো চোখের ঘুম হারাম হয়ে যাচ্ছে দর্জিদের। যারা নিজেদের পছন্দমতো কিংবা একটু ভিন্ন ডিজাইনের ফিটিং পোশাক পরতে পছন্দ করেন, তারাই ভিড় করছেন শহরের নামিদামি থেকে শুরু করে পাড়া-মহল্লার বিভিন্ন দর্জির দোকানে। গ্রাহকদের মনের মতো করে পোশাক তৈরি করতে রাত-দিন ব্যস্ত সময় পার করছেন দর্জিবাড়ির কারিগররা। কাপড় কাটা, সেলাই করা আর ট্রায়াল দেয়ার কাজ নিয়েই এখন জমে আছে দর্জিপাড়া। যেখানে থাকে নিজের করা ডিজাইনের প্রাধান্য, থাকে নিজস্ব ভিন্নতাও। ফ্যাশন হাউজ থেকে না কিনে পোশাকটা নিজের মত করে বানাতে চান বলেই, কিছুটা আগে ভাগে দর্জিবাড়িতে যাওয়া। এক্ষেত্রে খরচটাও তুলনামূলক কম পড়ে।
সরেজমিনে দেখা যায়, চুয়াডাঙ্গা সমবায় নিউ মার্কেটসহ শহরের বিভিন্ন অলিতে-গলিতে টেইলার্সের কারিগররা নর-নারীদের পোশাক তৈরিতে চরম ব্যস্ত সময় পার করছে। আর কয়েকদিন পর ধর্মীয় উৎসব ঈদ-উল-ফিতর। তাই ঈদকে সামনে রেখে গ্রাহকদের চাহিদা মেটাতে পছন্দের কাপড় তৈরিতে মহাব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন শহরের প্রায় কয়েক’শ দর্জি। দিন-রাত কাজ করে যাচ্ছে তারা। শার্ট, প্যান্ট, সেলোয়ার কামিজ, ফতুয়া, ব্লাউজ, থ্রি-পিছ, পাঞ্জাবি, কামিজসহ বিভিন্ন ধরণের থান কাপড় থেকে পোশাক সেলাই করছেন তারা। শহরের বড় বড় শপিং মলগুলোতে তৈরী পোশাকের যেমন কদর বেশী, তেমনি বাজার ভিত্তিক স্টেশনগুলোর দর্জিবাড়িতে চলছে পোশাক তৈরীর ধুম। শহরের অলিগলি থেকে শুরু করে সমস্ত টেইলার্সেই ঊর্ধ্বশ্বাসে কাজ করছেন টেইলার্স কর্মীরা। কিছু কিছু নামিদামী টেইলার্সে নতুন অর্ডার নেয়া বন্ধ করলেও কাজের চাপ তাতে কমেনি। এখন পর্যন্ত যা অর্ডার নেয়া হয়েছে তাই সময়মতো শেষ করতে হিমশিম খাবেন বলে জানাচ্ছেন তারা। যাদের রুচি মূলত বুটিক নির্ভর নয়, তাদের বেশির ভাগই পা পড়েছে দর্জি বাড়ির দরজায়। সেলাইয়ের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির পরও ফ্যাশনে নিজস্ব রুচির ছাপ দিতে ভিড় বাড়ছে দর্জির দোকানগুলোতে।
দর্জি দোকানে আসা ইমরান জানান, ‘ঈদের সময় সবাই চায় নতুন পোশাক পরতে। রেডিমেড দোকানে একই নকশার অনেক পোশাক থাকে। তাই নিজের পছন্দ মতো বানাতে কাপড় কিনে দর্জি দোকানে এসেছি।’
সানজিদা নামের এক নারী জানান, ‘ঈদকে সামনে রেখে থ্রি-পিস সেলাই করতে দর্জির দোকানে তিনি এসেছেন। কারণ একটাই, দর্জির দোকান থেকে কাপড় সেলাই করলে সেই জামা পরতে ফিটিং হয়। সবদিক থেকেই ভালো হয়, তাই আসা। ঈদকে সামনে রেখে জামার কাপড় কিনতে আসা।’
মারুফ নামের এক কর্মজীবী জানান, ‘প্রতি বছর ঈদে আমি কাপড় কিনে জামা বানাই। কিন্তুু এ বছর যেন জামার কাপড়ে দামও বেশি। আবার দর্জিরাও গত বছর থেকে মজুরি ১শ’ টাকা বেশি চাচ্ছে। যদি দামটা একটু কম থাকে তাহলে মধ্যবিত্ত পরিবারের জন্য ভালো হত।’
মূল্য একটু বেশী হলেও নিজের মতো করে কাপড় কিনে বানানো যায় বলে জানান টেইলার্সে আসা একাধিক নারী। তবে দর্জিরা বলছে ঈদকে সামনে রেখে গত বছর থেকে এ বছর প্রচুর অর্ডার আসছে। অর্ডার প্রতি তারা ২০০-৩৫০ টাকা করে মুজুরি নিচ্ছে। এই অর্ডার সময় মতো দিতে অতিরিক্ত কারিগর নিয়োগ করেও বিরতিহীনভাবে রাতভর পর্যন্ত কাজ করে ক্রেতাদের চাহিদা মোতাবেক পোশাক তৈরির কাজ চালানো হচ্ছে। ছেলেদের তুলনায় মেয়েদের বেশী উপস্থিতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে দর্জিপাড়াগুলোতে।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

চুয়াডাঙ্গার পোশাক তৈরির কারিগররা

আপলোড টাইম : ০৯:৫৯:৫০ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৩ মে ২০১৯

ঈদ-উল-ফিতরকে সামনে রেখে ব্যস্ত সময় পার করছেন
আফজালুল হক:
পবিত্র ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে চুয়াডাঙ্গায় ব্যস্ত সময় পার করছেন দর্জিপাড়ার কারিগররা। ঈদ যত এগিয়ে আসছে ততো চোখের ঘুম হারাম হয়ে যাচ্ছে দর্জিদের। যারা নিজেদের পছন্দমতো কিংবা একটু ভিন্ন ডিজাইনের ফিটিং পোশাক পরতে পছন্দ করেন, তারাই ভিড় করছেন শহরের নামিদামি থেকে শুরু করে পাড়া-মহল্লার বিভিন্ন দর্জির দোকানে। গ্রাহকদের মনের মতো করে পোশাক তৈরি করতে রাত-দিন ব্যস্ত সময় পার করছেন দর্জিবাড়ির কারিগররা। কাপড় কাটা, সেলাই করা আর ট্রায়াল দেয়ার কাজ নিয়েই এখন জমে আছে দর্জিপাড়া। যেখানে থাকে নিজের করা ডিজাইনের প্রাধান্য, থাকে নিজস্ব ভিন্নতাও। ফ্যাশন হাউজ থেকে না কিনে পোশাকটা নিজের মত করে বানাতে চান বলেই, কিছুটা আগে ভাগে দর্জিবাড়িতে যাওয়া। এক্ষেত্রে খরচটাও তুলনামূলক কম পড়ে।
সরেজমিনে দেখা যায়, চুয়াডাঙ্গা সমবায় নিউ মার্কেটসহ শহরের বিভিন্ন অলিতে-গলিতে টেইলার্সের কারিগররা নর-নারীদের পোশাক তৈরিতে চরম ব্যস্ত সময় পার করছে। আর কয়েকদিন পর ধর্মীয় উৎসব ঈদ-উল-ফিতর। তাই ঈদকে সামনে রেখে গ্রাহকদের চাহিদা মেটাতে পছন্দের কাপড় তৈরিতে মহাব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন শহরের প্রায় কয়েক’শ দর্জি। দিন-রাত কাজ করে যাচ্ছে তারা। শার্ট, প্যান্ট, সেলোয়ার কামিজ, ফতুয়া, ব্লাউজ, থ্রি-পিছ, পাঞ্জাবি, কামিজসহ বিভিন্ন ধরণের থান কাপড় থেকে পোশাক সেলাই করছেন তারা। শহরের বড় বড় শপিং মলগুলোতে তৈরী পোশাকের যেমন কদর বেশী, তেমনি বাজার ভিত্তিক স্টেশনগুলোর দর্জিবাড়িতে চলছে পোশাক তৈরীর ধুম। শহরের অলিগলি থেকে শুরু করে সমস্ত টেইলার্সেই ঊর্ধ্বশ্বাসে কাজ করছেন টেইলার্স কর্মীরা। কিছু কিছু নামিদামী টেইলার্সে নতুন অর্ডার নেয়া বন্ধ করলেও কাজের চাপ তাতে কমেনি। এখন পর্যন্ত যা অর্ডার নেয়া হয়েছে তাই সময়মতো শেষ করতে হিমশিম খাবেন বলে জানাচ্ছেন তারা। যাদের রুচি মূলত বুটিক নির্ভর নয়, তাদের বেশির ভাগই পা পড়েছে দর্জি বাড়ির দরজায়। সেলাইয়ের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির পরও ফ্যাশনে নিজস্ব রুচির ছাপ দিতে ভিড় বাড়ছে দর্জির দোকানগুলোতে।
দর্জি দোকানে আসা ইমরান জানান, ‘ঈদের সময় সবাই চায় নতুন পোশাক পরতে। রেডিমেড দোকানে একই নকশার অনেক পোশাক থাকে। তাই নিজের পছন্দ মতো বানাতে কাপড় কিনে দর্জি দোকানে এসেছি।’
সানজিদা নামের এক নারী জানান, ‘ঈদকে সামনে রেখে থ্রি-পিস সেলাই করতে দর্জির দোকানে তিনি এসেছেন। কারণ একটাই, দর্জির দোকান থেকে কাপড় সেলাই করলে সেই জামা পরতে ফিটিং হয়। সবদিক থেকেই ভালো হয়, তাই আসা। ঈদকে সামনে রেখে জামার কাপড় কিনতে আসা।’
মারুফ নামের এক কর্মজীবী জানান, ‘প্রতি বছর ঈদে আমি কাপড় কিনে জামা বানাই। কিন্তুু এ বছর যেন জামার কাপড়ে দামও বেশি। আবার দর্জিরাও গত বছর থেকে মজুরি ১শ’ টাকা বেশি চাচ্ছে। যদি দামটা একটু কম থাকে তাহলে মধ্যবিত্ত পরিবারের জন্য ভালো হত।’
মূল্য একটু বেশী হলেও নিজের মতো করে কাপড় কিনে বানানো যায় বলে জানান টেইলার্সে আসা একাধিক নারী। তবে দর্জিরা বলছে ঈদকে সামনে রেখে গত বছর থেকে এ বছর প্রচুর অর্ডার আসছে। অর্ডার প্রতি তারা ২০০-৩৫০ টাকা করে মুজুরি নিচ্ছে। এই অর্ডার সময় মতো দিতে অতিরিক্ত কারিগর নিয়োগ করেও বিরতিহীনভাবে রাতভর পর্যন্ত কাজ করে ক্রেতাদের চাহিদা মোতাবেক পোশাক তৈরির কাজ চালানো হচ্ছে। ছেলেদের তুলনায় মেয়েদের বেশী উপস্থিতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে দর্জিপাড়াগুলোতে।