ইপেপার । আজশুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

৬৫% মোবাইল ব্যাংকিং হিসাবই নিষ্ক্রিয়

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৯:৫২:১৬ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৭ এপ্রিল ২০১৮
  • / ২৮৫ বার পড়া হয়েছে

ডেস্ক রিপোর্ট: চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি শেষে দেশে মোবাইল ব্যাংক হিসাবের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ৫ কোটি ৯৬ লাখ ৪৫ হাজার। এসব ব্যাংক হিসাবের ৬৫ শতাংশই এখন নিষ্ক্রিয়। বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ পরিসংখ্যান অনুযায়ী, দেশে সক্রিয় মোবাইল ব্যাংক হিসাবের সংখ্যা ২ কোটি ৮ লাখ ৩১ হাজারে নেমে এসেছে। অথচ গত বছরের সেপ্টেম্বরেও সক্রিয় মোবাইল ব্যাংক হিসাবের সংখ্যা ছিল ৩ কোটির ওপরে। সক্রিয় হিসাব কমার ফলে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে লেনদেনকৃত টাকার পরিমাণও কমেছে। গত বছরের জুনে ৩০ হাজার কোটি টাকার বেশি লেনদেন হলেও চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে তা সাড়ে ২৮ হাজার কোটি টাকার নিচে নেমে এসেছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, একটি জাতীয় পরিচয়পত্রের বিপরীতে শুধু একটি ব্যাংক হিসাব চালুর বাধ্যবাধকতা চালু, মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে অবৈধ হুন্ডি তত্পরতার বিরুদ্ধে পদক্ষেপসহ লেনদেনের ওপর নানা বিধি-নিষেধের ফলে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের প্রবৃদ্ধি ধাক্কা খেয়েছে। বৈধ পথে রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়াতে বাংলাদেশ ব্যাংক চলতি অর্থবছরের শুরু থেকেই বেশ তত্পরতা চালাচ্ছে। এর মাধ্যমে মোবাইল ব্যাংকিং সেবায় কমপ্লায়েন্স আসছে বলে দাবি করেছেন সংশ্লিষ্টরা।
এ প্রসঙ্গে ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবুল কাশেম মো. শিরিন বলেন, মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে দেশে ডিজিটাল হুন্ডির ব্যাপকতা তীব্র হয়ে উঠেছিল। এর ফলে প্রবাসী আয়ে দেশ বড় ধরনের ধাক্কা খেয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকসহ সরকারের বিভিন্ন সংস্থার তৎপরতায় কয়েক মাস ধরে ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিট্যান্স প্রবাহ অনেক বেড়েছে। ডিজিটাল হুন্ডি বন্ধ হওয়ায় মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে লেনদেন কমেছে। এখন মোবাইল ব্যাংকিংয়ের প্রকৃত ব্যবহারকারীরাই সক্রিয় আছে, ভুঁইফোড়রা ঝরে যাচ্ছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যমতে, বর্তমানে দেশে মোবাইল ব্যাংকিং সেবা দিচ্ছে মোট ১৮টি ব্যাংক। তবে এর মধ্যে বাজারের প্রায় ৯০ শতাংশই ব্র্যাক ব্যাংকের সাবসিডিয়ারি প্রতিষ্ঠান ‘বিকাশ’ ও ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের ‘রকেট’-এর নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। গত বছরের সেপ্টেম্বর শেষে দেশে মোবাইল ব্যাংক গ্রাহকের সংখ্যা ছিল ৫ কোটি ৭৭ লাখ ৩০ হাজার। ওই সময় সক্রিয় গ্রাহকের সংখ্যা ছিল ৩ কোটির বেশি। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি শেষে মোবাইল ব্যাংকের গ্রাহক সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫ কোটি ৯৬ লাখ ৪৫ হাজার। সে হিসাবে গত পাঁচ মাসে গ্রাহক সংখ্যা বেড়েছে ১৯ লাখ ১৫ হাজার। কিন্তু ফেব্রুয়ারি শেষে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের সক্রিয় হিসাব সংখ্যা ২ কোটি ৮ লাখ ৩১ হাজারে নেমে এসেছে। সে হিসাবে সক্রিয় ব্যাংক হিসাব সংখ্যা কমেছে প্রায় ১ কোটি।
কিন্তু সম্প্রতি মোবাইল ব্যাংকিং সেবায় অপব্যবহার ঠেকাতে বেশকিছু নির্দেশনা দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এতে হিসাব খোলা ও পরিচালনা এবং লেনদেনে আরো বেশি কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে। নির্দেশনায় বলা হয়, এখন একজন ব্যক্তি একটি সিম দিয়ে যেকোনো মোবাইল ব্যাংকিং সেবায় একটি মাত্র হিসাব চালু রাখতে পারবেন। ওই নির্দেশনার পর যাদের একাধিক হিসাব ছিল, তা বন্ধ করা হয়।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

৬৫% মোবাইল ব্যাংকিং হিসাবই নিষ্ক্রিয়

আপলোড টাইম : ০৯:৫২:১৬ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৭ এপ্রিল ২০১৮

ডেস্ক রিপোর্ট: চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি শেষে দেশে মোবাইল ব্যাংক হিসাবের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ৫ কোটি ৯৬ লাখ ৪৫ হাজার। এসব ব্যাংক হিসাবের ৬৫ শতাংশই এখন নিষ্ক্রিয়। বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ পরিসংখ্যান অনুযায়ী, দেশে সক্রিয় মোবাইল ব্যাংক হিসাবের সংখ্যা ২ কোটি ৮ লাখ ৩১ হাজারে নেমে এসেছে। অথচ গত বছরের সেপ্টেম্বরেও সক্রিয় মোবাইল ব্যাংক হিসাবের সংখ্যা ছিল ৩ কোটির ওপরে। সক্রিয় হিসাব কমার ফলে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে লেনদেনকৃত টাকার পরিমাণও কমেছে। গত বছরের জুনে ৩০ হাজার কোটি টাকার বেশি লেনদেন হলেও চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে তা সাড়ে ২৮ হাজার কোটি টাকার নিচে নেমে এসেছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, একটি জাতীয় পরিচয়পত্রের বিপরীতে শুধু একটি ব্যাংক হিসাব চালুর বাধ্যবাধকতা চালু, মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে অবৈধ হুন্ডি তত্পরতার বিরুদ্ধে পদক্ষেপসহ লেনদেনের ওপর নানা বিধি-নিষেধের ফলে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের প্রবৃদ্ধি ধাক্কা খেয়েছে। বৈধ পথে রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়াতে বাংলাদেশ ব্যাংক চলতি অর্থবছরের শুরু থেকেই বেশ তত্পরতা চালাচ্ছে। এর মাধ্যমে মোবাইল ব্যাংকিং সেবায় কমপ্লায়েন্স আসছে বলে দাবি করেছেন সংশ্লিষ্টরা।
এ প্রসঙ্গে ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবুল কাশেম মো. শিরিন বলেন, মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে দেশে ডিজিটাল হুন্ডির ব্যাপকতা তীব্র হয়ে উঠেছিল। এর ফলে প্রবাসী আয়ে দেশ বড় ধরনের ধাক্কা খেয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকসহ সরকারের বিভিন্ন সংস্থার তৎপরতায় কয়েক মাস ধরে ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিট্যান্স প্রবাহ অনেক বেড়েছে। ডিজিটাল হুন্ডি বন্ধ হওয়ায় মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে লেনদেন কমেছে। এখন মোবাইল ব্যাংকিংয়ের প্রকৃত ব্যবহারকারীরাই সক্রিয় আছে, ভুঁইফোড়রা ঝরে যাচ্ছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যমতে, বর্তমানে দেশে মোবাইল ব্যাংকিং সেবা দিচ্ছে মোট ১৮টি ব্যাংক। তবে এর মধ্যে বাজারের প্রায় ৯০ শতাংশই ব্র্যাক ব্যাংকের সাবসিডিয়ারি প্রতিষ্ঠান ‘বিকাশ’ ও ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের ‘রকেট’-এর নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। গত বছরের সেপ্টেম্বর শেষে দেশে মোবাইল ব্যাংক গ্রাহকের সংখ্যা ছিল ৫ কোটি ৭৭ লাখ ৩০ হাজার। ওই সময় সক্রিয় গ্রাহকের সংখ্যা ছিল ৩ কোটির বেশি। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি শেষে মোবাইল ব্যাংকের গ্রাহক সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫ কোটি ৯৬ লাখ ৪৫ হাজার। সে হিসাবে গত পাঁচ মাসে গ্রাহক সংখ্যা বেড়েছে ১৯ লাখ ১৫ হাজার। কিন্তু ফেব্রুয়ারি শেষে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের সক্রিয় হিসাব সংখ্যা ২ কোটি ৮ লাখ ৩১ হাজারে নেমে এসেছে। সে হিসাবে সক্রিয় ব্যাংক হিসাব সংখ্যা কমেছে প্রায় ১ কোটি।
কিন্তু সম্প্রতি মোবাইল ব্যাংকিং সেবায় অপব্যবহার ঠেকাতে বেশকিছু নির্দেশনা দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এতে হিসাব খোলা ও পরিচালনা এবং লেনদেনে আরো বেশি কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে। নির্দেশনায় বলা হয়, এখন একজন ব্যক্তি একটি সিম দিয়ে যেকোনো মোবাইল ব্যাংকিং সেবায় একটি মাত্র হিসাব চালু রাখতে পারবেন। ওই নির্দেশনার পর যাদের একাধিক হিসাব ছিল, তা বন্ধ করা হয়।