ইপেপার । আজশুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

২৭ শর্তে সভার অনুমতি বিএনপির প্রত্যাখ্যান

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০২:৫১:১৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ৯ নভেম্বর ২০১৬
  • / ৪২৭ বার পড়া হয়েছে

সমীকরণ ডেস্ক: একেবারে শেষ মুহূর্তে মঙ্গলবার বিএনপিকে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে ২৭ শর্তে আলোচনা সভার অনুমতি দিয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। তবে সেখানে কর্মসূচির অনুমতি চাওয়া হয়নি জানিয়ে তা প্রত্যাখ্যান করেছে দলটি। পাশাপাশি নতুন করে আগামী ১৩ নভেম্বর রোববার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করার ঘোষণা দিয়েছে বিএনপি। জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবসের অংশ হিসেবে প্রথমে ৭ ও পরে ৮ নভেম্বর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করার অনুমতি চেয়ে ডিএমপির কাছে আবেদন করেছিল বিএনপি। কিন্তু পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়, সোহরাওয়ার্দীতে সমাবেশের অনুমতি দেয়া হবে না। এরপর ৮ নভেম্বর নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশের অনুমতি চেয়ে ফের আবেদন করে বিএনপি। এর পরিপ্রেক্ষিতে ৭ নভেম্বর রাতে ‘সড়কে সমাবেশ করা যাবে না’ মর্মে বিএনপিকে চিঠি দিয়ে জানিয়ে দেয় ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন। ডিএমপি ও ডিএসসিসির অনুমতি না পেয়ে বিএনপির করণীয় জানাতে মঙ্গলবার দুপুর ১২টায় নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এ সময় তিনি নতুন করে ১৩ নভেম্বর রোববার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করার ঘোষণা দেন। এরপরই ডিএমপি থেকে খবর আসে, ২৭ শর্তে বিএনপিকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান সংলগ্ন ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে মঙ্গলবার ‘আলোচনা সভা’ করার অনুমতি দেয়া হয়েছে।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বরাবর ডিএমপি কমিশনারের বিশেষ সহকারী সুদীপ কুমার চক্রবর্তী স্বাক্ষরিত এই চিঠিতে বলা হয়েছে, এই অনুমতিপত্র স্থান ব্যবহারের অনুমতি নয়; স্থান ব্যবহারের জন্য অবশ্যই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে অনুমতি নিতে হবে; ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনের অভ্যন্তরে আলোচনা সভার যাবতীয় কার্যক্রম সীমাবদ্ধ রাখতে হবে; আলোচনা সভার নিরাপত্তার জন্য নিজস্ব স্বেচ্ছাসেবক (দৃশ্যমান আইডি কার্ডসহ) নিয়োগ করতে হবে; স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনের নির্দেশনা অনুযায়ী নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় আলোচনা সভাস্থলের ভেতরে ও বাইরে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করতে হবে; নিজস্ব ব্যবস্থায় ভেইকল স্ক্যানার বা সার্চ মিররের মাধ্যমে আলোচনা সভাস্থলে আসা সব যানবাহনে তল্লাশির ব্যবস্থা করতে হবে; নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় আলোচনা সভাস্থলে অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা রাখতে হবে; ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনের বাইরে বা সড়কের পাশে মাইক-সাউন্ডবক্স ব্যবহার করা যাবে না; ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনের বাইরে বা সড়কের পাশে প্রজেকশন স্থাপন করা যাবে না; ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনের বাইরে, রাস্তায় বা ফুটপাতের কোথাও লোক সমবেত না হওয়া ইত্যাদি। এ ছাড়া সাড়ে চারটার মধ্যে সমাবেশ শেষ এবং মিছিল সহকারে ‘আলোচনা সভায়’ না আসার জন্য অনুমতিপত্রে বলা হয়েছে।
এ ব্যাপারে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী সাংবাদিকদের বলেন, ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে বিএনপি সমাবেশের অনুমতি চায়নি। ঘরোয়া কর্মসূচি নয় বিএনপি চায় উন্মুক্ত স্থানে সমাবেশ করতে। তাই ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটে আলোচনা সভা করার কোনো কারণ নেই। এ ছাড়া দলের সিদ্ধান্ত হয়েছে, ১৩ নভেম্বর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করার, অন্য কোথাও নয়। তিনি আরও বলেন, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ১৩ নভেম্বরের সমাবেশের ব্যাপারে আইনি প্রক্রিয়া, অর্থাৎ পুলিশকে চিঠি দেয়া, গণপূর্ত অধিদপ্তরকে চিঠি দেয়ার কাজগুলো বিএনপি শুরু করেছে।
এর আগে সংবাদ সম্মেলনে মির্জা ফখরুল সরকারের উদ্দেশে বলেন, ‘গণতান্ত্রিক স্বাভাবিক কর্মসূচি পালন করতে দিন। সংবিধান লঙ্ঘন করবেন না। বিএনপিকে ১৩ নভেম্বর সমাবেশ করার অনুমতি দিন। গণতন্ত্রকে তার নিজস্ব ধারায় চলতে দিন।’
বিএনপিকে সমাবেশ করতে না দেয়া প্রসঙ্গে বিএনপির এ নেতা বলেন, ‘আপনারা আমাদের দলীয় কার্যালয়ের চিত্র ইতোমধ্যে দেখেছেন। মনে হচ্ছে, একটি যুদ্ধক্ষেত্র তৈরি করা হয়েছে। যেমন করা হয়েছিল, ২০১৩, ২০১৪ ও ২০১৫ সালে। ওই সময় দলীয় কার্যালয়কে কারাগারে পরিণত করা হয়েছিল। দলের নেতা রুহুল কবির রিজভীকে বন্দি করা হয়েছিল। এখনো দেখে তাই মনে হচ্ছে।’
তিনি বলেন, সভা-সমাবেশ করা বিএনপির গণতান্ত্রিক এবং সাংবিধানিক অধিকার। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক হচ্ছে, আওয়ামী লীগ গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে না। তারা আবারও দমন-পীড়ন করে সেই পুরনো একদলীয় বাকশালী শাসন ফিরিয়ে আনতে চাইছে ভিন্নভাবে।
আবারও সমাবেশের অনুমতি না পেলে বিএনপির করণীয় সম্পর্কে জানতে চাইলে মির্জা ফখরুল বলেন, বিএনপি অনুমতি চাইতেই থাকবে। শেষ পর্যন্ত অনুমতি না পাওয়া গেলে কর্মসূচির কথা জানানো হবে।
সড়কে সমাবেশ নিষিদ্ধসংক্রান্ত ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের নির্দেশনা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘সড়কে যদি সমাবেশ নিষিদ্ধ করা হয় তাহলে গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দলগুলো কোথায় যাবে? আসলে সরকার একদলীয় শাসন ফিরিয়ে আনতে চাইছে ভিন্ন মোড়কে।’
মির্জা ফখরুল বলেন, আওয়ামী লীগ নিজেরা সোহরাওয়ার্দীতে সমাবেশ করেছে। ঢাকা শহরের বিভিন্ন এলাকায় আলোকসজ্জা করেছে। এখন বিএনপি সমাবেশ করতে চাচ্ছে কিন্তু দেয়া হচ্ছে না। এটা তো হতে পারে না।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হাবিবুর রহমান হাবিব, মো. আবদুস সালাম, আতাউর রহমান ঢালী, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ, শহিদুল ইসলাম বাবুল প্রমুখ।
এদিকে সমাবেশ হবেই বিএনপি নেতাদের এমন হুঙ্কারে মঙ্গলবার সকাল থেকেই নয়াপল্টন কার্যালয়ের সামনে বিপুলসংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়। ঘিরে রাখা হয় কার্যালয়ের মূল ফটক। সামনে রাখা হয় জল কামানও। নয়াপল্টনমুখী পথচারীদের নাইটিংগেল মোড় থেকে তল্লাশি করে প্রবেশ করতে দেয়া হয়। এরই মধ্যে সকাল সাড়ে ৯টায় আটক করা হয় মহিলা দলের দুই কর্মী মেঘলা ও মনিরাকে। এই আটকের কারণে সাধারণ নেতাকর্মীরা বলতে গেলে আর পল্টনমুখী হননি। তবে ১১টার দিকে সংবাদ সম্মেলনে যোগ দিতে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীসহ সিনিয়র নেতারা কার্যালয়ের ভেতরে প্রবেশকালে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা কোনো বাধা দেননি।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

২৭ শর্তে সভার অনুমতি বিএনপির প্রত্যাখ্যান

আপলোড টাইম : ০২:৫১:১৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ৯ নভেম্বর ২০১৬

সমীকরণ ডেস্ক: একেবারে শেষ মুহূর্তে মঙ্গলবার বিএনপিকে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে ২৭ শর্তে আলোচনা সভার অনুমতি দিয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। তবে সেখানে কর্মসূচির অনুমতি চাওয়া হয়নি জানিয়ে তা প্রত্যাখ্যান করেছে দলটি। পাশাপাশি নতুন করে আগামী ১৩ নভেম্বর রোববার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করার ঘোষণা দিয়েছে বিএনপি। জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবসের অংশ হিসেবে প্রথমে ৭ ও পরে ৮ নভেম্বর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করার অনুমতি চেয়ে ডিএমপির কাছে আবেদন করেছিল বিএনপি। কিন্তু পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়, সোহরাওয়ার্দীতে সমাবেশের অনুমতি দেয়া হবে না। এরপর ৮ নভেম্বর নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশের অনুমতি চেয়ে ফের আবেদন করে বিএনপি। এর পরিপ্রেক্ষিতে ৭ নভেম্বর রাতে ‘সড়কে সমাবেশ করা যাবে না’ মর্মে বিএনপিকে চিঠি দিয়ে জানিয়ে দেয় ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন। ডিএমপি ও ডিএসসিসির অনুমতি না পেয়ে বিএনপির করণীয় জানাতে মঙ্গলবার দুপুর ১২টায় নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এ সময় তিনি নতুন করে ১৩ নভেম্বর রোববার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করার ঘোষণা দেন। এরপরই ডিএমপি থেকে খবর আসে, ২৭ শর্তে বিএনপিকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান সংলগ্ন ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে মঙ্গলবার ‘আলোচনা সভা’ করার অনুমতি দেয়া হয়েছে।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বরাবর ডিএমপি কমিশনারের বিশেষ সহকারী সুদীপ কুমার চক্রবর্তী স্বাক্ষরিত এই চিঠিতে বলা হয়েছে, এই অনুমতিপত্র স্থান ব্যবহারের অনুমতি নয়; স্থান ব্যবহারের জন্য অবশ্যই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে অনুমতি নিতে হবে; ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনের অভ্যন্তরে আলোচনা সভার যাবতীয় কার্যক্রম সীমাবদ্ধ রাখতে হবে; আলোচনা সভার নিরাপত্তার জন্য নিজস্ব স্বেচ্ছাসেবক (দৃশ্যমান আইডি কার্ডসহ) নিয়োগ করতে হবে; স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনের নির্দেশনা অনুযায়ী নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় আলোচনা সভাস্থলের ভেতরে ও বাইরে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করতে হবে; নিজস্ব ব্যবস্থায় ভেইকল স্ক্যানার বা সার্চ মিররের মাধ্যমে আলোচনা সভাস্থলে আসা সব যানবাহনে তল্লাশির ব্যবস্থা করতে হবে; নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় আলোচনা সভাস্থলে অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা রাখতে হবে; ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনের বাইরে বা সড়কের পাশে মাইক-সাউন্ডবক্স ব্যবহার করা যাবে না; ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনের বাইরে বা সড়কের পাশে প্রজেকশন স্থাপন করা যাবে না; ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনের বাইরে, রাস্তায় বা ফুটপাতের কোথাও লোক সমবেত না হওয়া ইত্যাদি। এ ছাড়া সাড়ে চারটার মধ্যে সমাবেশ শেষ এবং মিছিল সহকারে ‘আলোচনা সভায়’ না আসার জন্য অনুমতিপত্রে বলা হয়েছে।
এ ব্যাপারে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী সাংবাদিকদের বলেন, ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে বিএনপি সমাবেশের অনুমতি চায়নি। ঘরোয়া কর্মসূচি নয় বিএনপি চায় উন্মুক্ত স্থানে সমাবেশ করতে। তাই ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটে আলোচনা সভা করার কোনো কারণ নেই। এ ছাড়া দলের সিদ্ধান্ত হয়েছে, ১৩ নভেম্বর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করার, অন্য কোথাও নয়। তিনি আরও বলেন, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ১৩ নভেম্বরের সমাবেশের ব্যাপারে আইনি প্রক্রিয়া, অর্থাৎ পুলিশকে চিঠি দেয়া, গণপূর্ত অধিদপ্তরকে চিঠি দেয়ার কাজগুলো বিএনপি শুরু করেছে।
এর আগে সংবাদ সম্মেলনে মির্জা ফখরুল সরকারের উদ্দেশে বলেন, ‘গণতান্ত্রিক স্বাভাবিক কর্মসূচি পালন করতে দিন। সংবিধান লঙ্ঘন করবেন না। বিএনপিকে ১৩ নভেম্বর সমাবেশ করার অনুমতি দিন। গণতন্ত্রকে তার নিজস্ব ধারায় চলতে দিন।’
বিএনপিকে সমাবেশ করতে না দেয়া প্রসঙ্গে বিএনপির এ নেতা বলেন, ‘আপনারা আমাদের দলীয় কার্যালয়ের চিত্র ইতোমধ্যে দেখেছেন। মনে হচ্ছে, একটি যুদ্ধক্ষেত্র তৈরি করা হয়েছে। যেমন করা হয়েছিল, ২০১৩, ২০১৪ ও ২০১৫ সালে। ওই সময় দলীয় কার্যালয়কে কারাগারে পরিণত করা হয়েছিল। দলের নেতা রুহুল কবির রিজভীকে বন্দি করা হয়েছিল। এখনো দেখে তাই মনে হচ্ছে।’
তিনি বলেন, সভা-সমাবেশ করা বিএনপির গণতান্ত্রিক এবং সাংবিধানিক অধিকার। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক হচ্ছে, আওয়ামী লীগ গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে না। তারা আবারও দমন-পীড়ন করে সেই পুরনো একদলীয় বাকশালী শাসন ফিরিয়ে আনতে চাইছে ভিন্নভাবে।
আবারও সমাবেশের অনুমতি না পেলে বিএনপির করণীয় সম্পর্কে জানতে চাইলে মির্জা ফখরুল বলেন, বিএনপি অনুমতি চাইতেই থাকবে। শেষ পর্যন্ত অনুমতি না পাওয়া গেলে কর্মসূচির কথা জানানো হবে।
সড়কে সমাবেশ নিষিদ্ধসংক্রান্ত ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের নির্দেশনা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘সড়কে যদি সমাবেশ নিষিদ্ধ করা হয় তাহলে গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দলগুলো কোথায় যাবে? আসলে সরকার একদলীয় শাসন ফিরিয়ে আনতে চাইছে ভিন্ন মোড়কে।’
মির্জা ফখরুল বলেন, আওয়ামী লীগ নিজেরা সোহরাওয়ার্দীতে সমাবেশ করেছে। ঢাকা শহরের বিভিন্ন এলাকায় আলোকসজ্জা করেছে। এখন বিএনপি সমাবেশ করতে চাচ্ছে কিন্তু দেয়া হচ্ছে না। এটা তো হতে পারে না।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হাবিবুর রহমান হাবিব, মো. আবদুস সালাম, আতাউর রহমান ঢালী, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ, শহিদুল ইসলাম বাবুল প্রমুখ।
এদিকে সমাবেশ হবেই বিএনপি নেতাদের এমন হুঙ্কারে মঙ্গলবার সকাল থেকেই নয়াপল্টন কার্যালয়ের সামনে বিপুলসংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়। ঘিরে রাখা হয় কার্যালয়ের মূল ফটক। সামনে রাখা হয় জল কামানও। নয়াপল্টনমুখী পথচারীদের নাইটিংগেল মোড় থেকে তল্লাশি করে প্রবেশ করতে দেয়া হয়। এরই মধ্যে সকাল সাড়ে ৯টায় আটক করা হয় মহিলা দলের দুই কর্মী মেঘলা ও মনিরাকে। এই আটকের কারণে সাধারণ নেতাকর্মীরা বলতে গেলে আর পল্টনমুখী হননি। তবে ১১টার দিকে সংবাদ সম্মেলনে যোগ দিতে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীসহ সিনিয়র নেতারা কার্যালয়ের ভেতরে প্রবেশকালে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা কোনো বাধা দেননি।