ইপেপার । আজবৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

২০২০ থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ডিজিটাল নজরদারি

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ১০:৫৪:১৬ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৬ অক্টোবর ২০১৯
  • / ২২৯ বার পড়া হয়েছে
সমীকরণ প্রতিবেদন:
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নানান অভিযোগ এবং তা নিষ্পত্তি করার একমাত্র ভরসা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তর। একটা প্রতিষ্ঠানে হাজারো অভিযোগ। দীর্ঘ সময় লাগতো, সঙ্গে হয়রানিও অনেক। বিভিন্ন সমস্যার কথা বিবেচনা করে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ২০২০ সাল থেকে ৩৬ হাজার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে ডিজিটাল নজরদারির আওতায় নিয়ে আসছে। যেখানে থাকবে শিক্ষক-শিক্ষার্থীর সংখ্যা। একই সঙ্গে এই সফটওয়্যারে পাওয়া যাবে আয়-ব্যয়ের হিসাবও। এরই মধ্যে সফটওয়্যার তৈরির কাজ শেষ হয়েছে বলে জানিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এর ব্যবহার নিশ্চিত করা গেলে প্রাতিষ্ঠানিক জবাবদিহি নিশ্চিত হবে বলেও মনে করছে মন্ত্রণালয়।
পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, ৩৬ হাজার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের জন্য মোট ৩২ জন পরিদর্শক কাজ করতো। ফলে প্রতি বছর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ইন্স্পেকশন (পরিদর্শন) রিপোর্ট যেতে সময় লাগতো প্রায় পাঁচ থেকে ছয় বছর। রিপোর্ট প্রণয়নের দীর্ঘসূত্রতা, বছরের পর বছর অপেক্ষা— সব মিলিয়ে এক বিশাল জটের সৃষ্টি হয়েছিলো পরিদর্শন অধিদপ্তরে।
সূত্র আরও জানায়, এখন একটা সফটওয়্যার তৈরি করা হয়েছে। যার মাধ্যমে প্রতিবছরের ইন্স্পেকশন রিপোর্ট আপডেট থাকবে। রিপোর্ট প্রণয়নের আর সেই দীর্ঘসূত্রতা থাকবে না। এখন থেকে প্রত্যেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধানগণ আরেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পিয়ার ইন্সপেকশনের কাজ করবেন। ফলে অতিরিক্ত জনবলের দরকার হবে না। এছাড়াও প্রতিষ্ঠানের অবস্থান জানার জন্য পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের ওয়েব সাইটে দেয়া থাকবে কালার কোড। যেখানে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন কার্যক্রমে কালার কোড নির্দেশনা দেয়া থাকবে।
এর মধ্যে সবুজ কালার যুক্ত প্রতিষ্ঠানকে বলা হবে ‘অসাধারণ’; আকাশি কালার যুক্ত প্রতিষ্ঠান হবে ‘অতি উত্তম’; কমলা কালার যুক্ত প্রতিষ্ঠান হবে ‘উত্তম’; বেগুণী কালার যুক্ত প্রতিষ্ঠান হবে ‘চলতিমান’ এবং লাল কালার যুক্ত প্রতিষ্ঠান হবে ‘নি¤œমান’। এই কালার কোডগুলো একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ইন্সপেকশনের ওপর ভিত্তি করে কয়েকটি ক্যাটাগরির সাথে যুক্ত হবে। যার মাধ্যমে একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের রেটিং পয়েন্ট জানা যাবে। এর ফলে সহজেই জানা যাবে ওই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বর্তমান অবস্থান। এতে জানা যাবে ৩৬ হাজার স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসার তথ্য।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের যুগ্ম পরিচালক বিপুল চন্দ্র সরকার বলেন, ইন্সপেকশনের দীর্ঘসূত্রতা দূর করতে আমরা সফটওয়্যারের কাজ শুরু করেছি। এখানে এক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান আরেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পিয়ার ইন্সপেকশন করবেন। আমরা শুধু মনিটরিং করবো। এখানে তথ্যের বড় গরমিল দেখা দিলে তখন ওই প্রতিষ্ঠানের অধিদপ্তর থেকে পরিদর্শন করা হবে। অন্যথায় অফিস থেকে কোনো পরিদর্শনে যাবে না। তিনি বলেন, এখানে প্রত্যেক শিক্ষকের প্রোফাইল দেখাবে।
এছাড়া শিক্ষক-শিক্ষার্থীর সংখ্যা জানা যাবে এবং একটা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন দিক কালার কোড রেটিং দ্বারা নিয়ন্ত্রণ হবে। যুগ্ম পরিচালক আরও বলেন, সফটওয়্যার এখন লাইভে আছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর ডাটা ইনপুট করা হচ্ছে। তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, ২০২০ সাল থেকে এর পাইলটিং কার্যক্রম শুরু হবে।
এদিকে প্রযুক্তিবিদরা বলছেন, সব প্রতিষ্ঠানে এই সফটওয়্যারের ব্যবহার নিশ্চিত করা গেলে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে। তবে অবশ্যই এর অবকাঠামো দিক সঠিকভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে বলে জানান তারা। প্রসঙ্গত, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর বছরের পর বছর পার হলেও পরিদর্শনের সঠিক তথ্য পাওয়া যেতো না। এই সেকেলে পদ্ধতি থেকে রেহাই দিতে বর্তমান ডিজিটাল সেক্টরের উন্নয়নের এ কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট সূত্র।

 

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

২০২০ থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ডিজিটাল নজরদারি

আপলোড টাইম : ১০:৫৪:১৬ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৬ অক্টোবর ২০১৯
সমীকরণ প্রতিবেদন:
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নানান অভিযোগ এবং তা নিষ্পত্তি করার একমাত্র ভরসা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তর। একটা প্রতিষ্ঠানে হাজারো অভিযোগ। দীর্ঘ সময় লাগতো, সঙ্গে হয়রানিও অনেক। বিভিন্ন সমস্যার কথা বিবেচনা করে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ২০২০ সাল থেকে ৩৬ হাজার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে ডিজিটাল নজরদারির আওতায় নিয়ে আসছে। যেখানে থাকবে শিক্ষক-শিক্ষার্থীর সংখ্যা। একই সঙ্গে এই সফটওয়্যারে পাওয়া যাবে আয়-ব্যয়ের হিসাবও। এরই মধ্যে সফটওয়্যার তৈরির কাজ শেষ হয়েছে বলে জানিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এর ব্যবহার নিশ্চিত করা গেলে প্রাতিষ্ঠানিক জবাবদিহি নিশ্চিত হবে বলেও মনে করছে মন্ত্রণালয়।
পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, ৩৬ হাজার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের জন্য মোট ৩২ জন পরিদর্শক কাজ করতো। ফলে প্রতি বছর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ইন্স্পেকশন (পরিদর্শন) রিপোর্ট যেতে সময় লাগতো প্রায় পাঁচ থেকে ছয় বছর। রিপোর্ট প্রণয়নের দীর্ঘসূত্রতা, বছরের পর বছর অপেক্ষা— সব মিলিয়ে এক বিশাল জটের সৃষ্টি হয়েছিলো পরিদর্শন অধিদপ্তরে।
সূত্র আরও জানায়, এখন একটা সফটওয়্যার তৈরি করা হয়েছে। যার মাধ্যমে প্রতিবছরের ইন্স্পেকশন রিপোর্ট আপডেট থাকবে। রিপোর্ট প্রণয়নের আর সেই দীর্ঘসূত্রতা থাকবে না। এখন থেকে প্রত্যেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধানগণ আরেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পিয়ার ইন্সপেকশনের কাজ করবেন। ফলে অতিরিক্ত জনবলের দরকার হবে না। এছাড়াও প্রতিষ্ঠানের অবস্থান জানার জন্য পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের ওয়েব সাইটে দেয়া থাকবে কালার কোড। যেখানে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন কার্যক্রমে কালার কোড নির্দেশনা দেয়া থাকবে।
এর মধ্যে সবুজ কালার যুক্ত প্রতিষ্ঠানকে বলা হবে ‘অসাধারণ’; আকাশি কালার যুক্ত প্রতিষ্ঠান হবে ‘অতি উত্তম’; কমলা কালার যুক্ত প্রতিষ্ঠান হবে ‘উত্তম’; বেগুণী কালার যুক্ত প্রতিষ্ঠান হবে ‘চলতিমান’ এবং লাল কালার যুক্ত প্রতিষ্ঠান হবে ‘নি¤œমান’। এই কালার কোডগুলো একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ইন্সপেকশনের ওপর ভিত্তি করে কয়েকটি ক্যাটাগরির সাথে যুক্ত হবে। যার মাধ্যমে একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের রেটিং পয়েন্ট জানা যাবে। এর ফলে সহজেই জানা যাবে ওই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বর্তমান অবস্থান। এতে জানা যাবে ৩৬ হাজার স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসার তথ্য।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের যুগ্ম পরিচালক বিপুল চন্দ্র সরকার বলেন, ইন্সপেকশনের দীর্ঘসূত্রতা দূর করতে আমরা সফটওয়্যারের কাজ শুরু করেছি। এখানে এক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান আরেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পিয়ার ইন্সপেকশন করবেন। আমরা শুধু মনিটরিং করবো। এখানে তথ্যের বড় গরমিল দেখা দিলে তখন ওই প্রতিষ্ঠানের অধিদপ্তর থেকে পরিদর্শন করা হবে। অন্যথায় অফিস থেকে কোনো পরিদর্শনে যাবে না। তিনি বলেন, এখানে প্রত্যেক শিক্ষকের প্রোফাইল দেখাবে।
এছাড়া শিক্ষক-শিক্ষার্থীর সংখ্যা জানা যাবে এবং একটা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন দিক কালার কোড রেটিং দ্বারা নিয়ন্ত্রণ হবে। যুগ্ম পরিচালক আরও বলেন, সফটওয়্যার এখন লাইভে আছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর ডাটা ইনপুট করা হচ্ছে। তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, ২০২০ সাল থেকে এর পাইলটিং কার্যক্রম শুরু হবে।
এদিকে প্রযুক্তিবিদরা বলছেন, সব প্রতিষ্ঠানে এই সফটওয়্যারের ব্যবহার নিশ্চিত করা গেলে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে। তবে অবশ্যই এর অবকাঠামো দিক সঠিকভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে বলে জানান তারা। প্রসঙ্গত, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর বছরের পর বছর পার হলেও পরিদর্শনের সঠিক তথ্য পাওয়া যেতো না। এই সেকেলে পদ্ধতি থেকে রেহাই দিতে বর্তমান ডিজিটাল সেক্টরের উন্নয়নের এ কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট সূত্র।