ইপেপার । আজশুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

২০১৮ সালের পুলিশ সপ্তাহ সফল হউক

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ১১:৫৭:৩১ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৮ জানুয়ারী ২০১৮
  • / ৬৯২ বার পড়া হয়েছে

অন্যান্য বছরের মতো এবারও আজ ৮ জানুয়ারি হতে পালিত হচ্ছে পুলিশ সপ্তাহ-২০১৮। পুলিশ সপ্তাহের প্রসঙ্গ আসলেই আগে সাম্প্রতিককালে তাদের নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালন ও ব্যাপক অবদানের কথা না বলে পারা যায় না। গত কয়েকটি বছর সরকারের ব্যর্থতায় সহিংসতা ছিল, তেমনি জঙ্গি ও সন্ত্রাসী কর্মকা-ের কারণেও দেশে একটি ভীতিকর পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিলো। পুলিশ এইসকল অনাকাক্ষিত পরিস্থিতি মোকাবিলা ও সার্বিকভাবে দেশের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় নিজেদের সর্বদা সচল রেখেছে। জঙ্গি তৎপরতা বন্ধে তাদের ভূমিকা ছিল বেশ চোখে পড়ার মতো। বর্তমানে বাংলাদেশ ১৬ কোটি মানুষের দেশ। জনসংখ্যার আধিক্য সত্ত্বেও পুলিশ বাহিনী যেইভাবে শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখার সর্বাত্মক চেষ্টা প্রশংসনীয়। আমরা জানি, শুধু বাংলাদেশ নয়, গোটা ভারতীয় উপমহাদেশের মানুষ সহজে নিয়ম-কানুন মানতে চায় না। অনেকে তা গ্রাহ্যই করেন না। তাই আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা এই সকল দেশে বরাবরই একটি কঠিন কাজ। এই কঠিন কাজে নিয়োজিত এবং শৃঙ্খলা, নিরাপত্তা ও প্রগতি এই মন্ত্রে উজ্জীবিত পুলিশ বাহিনীর ভূমিকা অবশ্যই অভিনন্দনযোগ্য।
কয়েক দিন আগে পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) একেএম শহীদুল হক সংবাদ সম্মেলনে জানান যে, পুলিশি তৎপরতায় গত পাঁচ বছরে (২০১৩-২০১৭) অপরাধপ্রবণতা প্রায় অর্ধেকে কমে এসেছে। একই সঙ্গে ব্যারাক ও রেশন সমস্যা এবং পদোন্নতি জটিলতা দূর হইয়াছে। গড়ে উঠেছে বিভিন্ন বিশেষায়িত পুলিশ ইউনিট। প্রতিষ্ঠিত হইয়াছে ‘বাংলাদেশ পুলিশ মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর’। স্থাপন করা হয়েছে নূতন নূতন তদন্ত কেন্দ্র ও পুলিশ ফাঁড়ি। তাছাড়া ২০০৯ সালে পুলিশের সংখ্যা যেখানে ছিল ৮৪ হাজার, সেখানে তা এখন প্রায় দুই লক্ষে উন্নীত হয়েছে। এইসকল উন্নয়নে পুলিশ সদস্যরা নিঃসন্দেহে আনন্দিত। আর কিছু দাবি পূরণের বিষয়টি রয়েছে বাস্তবায়নাধীন।
এতদসত্ত্বেও আমরা মনে করি, পুলিশ বাহিনীর উন্নয়নে আরো অনেক কিছু করবার আছে। যেখানে অন্য দেশে পুলিশ অপরাধী ধরতে যায় রীতিমত যুদ্ধবেশে, সেখানে আমাদের পুলিশের হাতে এখনো থাকে লাঠি বা তুলনামূলকভাবে কম আধুনিক অস্ত্র-শস্ত্র। তা হলে তারা কঠিন পরিস্থিতি মোকাবিলা করবেন কিভাবে? তাদের আবাসন ও গাড়ি সংকটের কথা আমরা বহুবার পত্রিকায় এসেছে। যতদিন কাক্ষিত মাত্রায় এই সমস্যার সমাধান না হবে, ততদিন লিখে যাবে পত্রিকাগুলোসহ সাংবাদিক ভাইয়েরা। নূতন বছরে তাদের কামনা, তারা বিশেষত জঙ্গিবাদ দমনে আরো লজিস্টিক সাপোর্ট চান। সাইবার ক্রাইম, ফিনান্সিয়াল ক্রাইম ইত্যাদি প্রতিরোধেও চান তথ্য-প্রযুক্তিগত সহায়তা। চান, জন অনুপাতের সহিত সংগতি রেখে পুলিশের জনবল আরো বৃদ্ধি করা হোক। তবে শুধু জনবল বাড়ালেই চলবে না, সেই অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ও অত্যাধুনিক সরঞ্জামাদিও তাদের সরবরাহ করতে হবে। পুলিশ সপ্তাহ উদযাপনের উদ্দেশ্য সফল হউক।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

২০১৮ সালের পুলিশ সপ্তাহ সফল হউক

আপলোড টাইম : ১১:৫৭:৩১ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৮ জানুয়ারী ২০১৮

অন্যান্য বছরের মতো এবারও আজ ৮ জানুয়ারি হতে পালিত হচ্ছে পুলিশ সপ্তাহ-২০১৮। পুলিশ সপ্তাহের প্রসঙ্গ আসলেই আগে সাম্প্রতিককালে তাদের নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালন ও ব্যাপক অবদানের কথা না বলে পারা যায় না। গত কয়েকটি বছর সরকারের ব্যর্থতায় সহিংসতা ছিল, তেমনি জঙ্গি ও সন্ত্রাসী কর্মকা-ের কারণেও দেশে একটি ভীতিকর পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিলো। পুলিশ এইসকল অনাকাক্ষিত পরিস্থিতি মোকাবিলা ও সার্বিকভাবে দেশের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় নিজেদের সর্বদা সচল রেখেছে। জঙ্গি তৎপরতা বন্ধে তাদের ভূমিকা ছিল বেশ চোখে পড়ার মতো। বর্তমানে বাংলাদেশ ১৬ কোটি মানুষের দেশ। জনসংখ্যার আধিক্য সত্ত্বেও পুলিশ বাহিনী যেইভাবে শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখার সর্বাত্মক চেষ্টা প্রশংসনীয়। আমরা জানি, শুধু বাংলাদেশ নয়, গোটা ভারতীয় উপমহাদেশের মানুষ সহজে নিয়ম-কানুন মানতে চায় না। অনেকে তা গ্রাহ্যই করেন না। তাই আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা এই সকল দেশে বরাবরই একটি কঠিন কাজ। এই কঠিন কাজে নিয়োজিত এবং শৃঙ্খলা, নিরাপত্তা ও প্রগতি এই মন্ত্রে উজ্জীবিত পুলিশ বাহিনীর ভূমিকা অবশ্যই অভিনন্দনযোগ্য।
কয়েক দিন আগে পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) একেএম শহীদুল হক সংবাদ সম্মেলনে জানান যে, পুলিশি তৎপরতায় গত পাঁচ বছরে (২০১৩-২০১৭) অপরাধপ্রবণতা প্রায় অর্ধেকে কমে এসেছে। একই সঙ্গে ব্যারাক ও রেশন সমস্যা এবং পদোন্নতি জটিলতা দূর হইয়াছে। গড়ে উঠেছে বিভিন্ন বিশেষায়িত পুলিশ ইউনিট। প্রতিষ্ঠিত হইয়াছে ‘বাংলাদেশ পুলিশ মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর’। স্থাপন করা হয়েছে নূতন নূতন তদন্ত কেন্দ্র ও পুলিশ ফাঁড়ি। তাছাড়া ২০০৯ সালে পুলিশের সংখ্যা যেখানে ছিল ৮৪ হাজার, সেখানে তা এখন প্রায় দুই লক্ষে উন্নীত হয়েছে। এইসকল উন্নয়নে পুলিশ সদস্যরা নিঃসন্দেহে আনন্দিত। আর কিছু দাবি পূরণের বিষয়টি রয়েছে বাস্তবায়নাধীন।
এতদসত্ত্বেও আমরা মনে করি, পুলিশ বাহিনীর উন্নয়নে আরো অনেক কিছু করবার আছে। যেখানে অন্য দেশে পুলিশ অপরাধী ধরতে যায় রীতিমত যুদ্ধবেশে, সেখানে আমাদের পুলিশের হাতে এখনো থাকে লাঠি বা তুলনামূলকভাবে কম আধুনিক অস্ত্র-শস্ত্র। তা হলে তারা কঠিন পরিস্থিতি মোকাবিলা করবেন কিভাবে? তাদের আবাসন ও গাড়ি সংকটের কথা আমরা বহুবার পত্রিকায় এসেছে। যতদিন কাক্ষিত মাত্রায় এই সমস্যার সমাধান না হবে, ততদিন লিখে যাবে পত্রিকাগুলোসহ সাংবাদিক ভাইয়েরা। নূতন বছরে তাদের কামনা, তারা বিশেষত জঙ্গিবাদ দমনে আরো লজিস্টিক সাপোর্ট চান। সাইবার ক্রাইম, ফিনান্সিয়াল ক্রাইম ইত্যাদি প্রতিরোধেও চান তথ্য-প্রযুক্তিগত সহায়তা। চান, জন অনুপাতের সহিত সংগতি রেখে পুলিশের জনবল আরো বৃদ্ধি করা হোক। তবে শুধু জনবল বাড়ালেই চলবে না, সেই অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ও অত্যাধুনিক সরঞ্জামাদিও তাদের সরবরাহ করতে হবে। পুলিশ সপ্তাহ উদযাপনের উদ্দেশ্য সফল হউক।