ইপেপার । আজশুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

১০ টাকা কেজির চাল নিয়ে এবার অরাজকতা ঝিনাইদহের গান্নায় ওজনে কম দেওয়ার প্রতিবাদ চড় থাপ্পড়ে চোখ গেল নাইটগার্ডের!

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ১২:০৫:৩০ অপরাহ্ন, শনিবার, ৮ অক্টোবর ২০১৬
  • / ৩৪২ বার পড়া হয়েছে

কাজল চৌধূরী, ঝিনাইদহ: ঝিনাইদহ সদর উপজেলার শৈলমারী বাজারে এবার ১০ টাকা কেজির চাল নিয়ে ডিলারের লোকের চড় থাপ্পড়ে হায়দার আলী নামে এক নাইটগার্ডের চোখ রক্তাক্ত হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে শুক্রবার দুপুরে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শৈলমারী বাজারে ১০ টাকা কেজি চালের ডিলার সোনা মন্ডলের কাছে চাল নিতে আসেন রঘুনাথপুর স্কুলের নাইটগার্ড হায়দার আলী। তার বাড়ি গান্না ইউনিয়নের বেতাই গ্রামে। চাল ওজনের সময় হায়দার আলী বলেন, আগেরবার চাল কম হয়েছে, এবার যেন সঠিক ভাবে মাপা হয়। এ কথা বলার সাথে সাথে ডিলারের নিকটাত্মীয় কুটিদুর্গাপুর গ্রামের আবুল ডাক্তারের ছেলে ফজলুর রহমান কানসারাও চোখে চড় থাপ্পড় মারে। এতে নাইটগার্ড হায়দার আলীর চোখে দিয়ে রক্ত বেরিয়ে যায়। এ নিয়ে শৈলমারী বাজারে ব্যাপক তোলপাড় সৃষ্টি হয়। স্থানীয়রা অভিযোগ করেছে সোনা মন্ডল ১০ টাকা কেজির চালের ডিলার হওয়ার পর থেকেই ওজনে চাল কম দিয়ে আসছে। তার ডিলারশীপ বাতিলের জন্য সুবিধাভোগীরা জেলা প্রশাসকের কাছে দাবী জানিয়েছেন। এদিকে খবর পেয়ে বেতাই বাজার পুলিশ ক্যাম্পের তদন্ত কর্মকর্তা তারিফুল ইসলাম তারিফ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। তবে পুলিশ আসার খবর শুনে ডিলারের অভিযুক্ত ভাই ফজলু পালিয়ে যায়। বিষয়টি নিয়ে ডিলার সোনা মন্ডল জানান, ভুলের জন্য ফজলু নাইটগার্ড হায়দারের কাছে মাফ চেয়ে নিয়েছে। তিনি বলেন ভবিষ্যতে এমনটি আর হবে না। স্থানীয় চেয়ারম্যান নাসির উদ্দীন জানান, সোনা মন্ডল কি ভাবে ডিলার হয়েছে আমি জানি না। এদিকে গান্না ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে ধনাঢ্য পরিবারকে ১০ টাকা কেজি চালের কার্ড দেওয়া নিয়ে চরম ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। বড়লোকদের এই কার্ড দেওয়া নিয়ে গান্না বাজারে ব্যাপক আলোচনা সমালোচনা হচ্ছে। প্রধানন্ত্রীর হুসিয়ারী থাকার পরও জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে পক্ষপাতিত্বমূলক কার্ড বাতিলের কোন উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ করেছে সাধারণ জনতা। সরেজমিন দেখা গেছে, গান্না বাজারের ডিলার গৌতম অধিকারীর কাছে যারা ১০ টাকা কেজি দরের চাল নিচ্ছেন, তাদের বেশির ভাগ অর্থশালী। চান্দেরপোল গ্রামের শুকুর আলীর ছেলে রেজাউল ইসলাম রাজা ও তার স্ত্রী মুসলিমা খাতুন দুজনাই চাকরীজীবী। রেজাউল কালুহাটী স্কুলের শিক্ষক। অথচ তাকে ১০ টাকা কেজি দরের চালের কার্ড দেওয়া হয়েছে। দহিজুড়ি গ্রামের সিরাজুল ইসলামের ছেলে লিয়াকত আলীর দুইতলা মার্কেট রয়েছে গান্না বাজারে। মাঠে তার প্রচুর জমিও আছে। তিনিও এই কার্ডের সুফলভোগী বলে অভিযোগ উঠেছে। এছাড়া পোড়া এলাকার সচ্ছল পরিবার হিসেবে বেতাই গ্রামের হুজুর আলী, কাশিমপুরের আলমগীর ডাক্তার ও চান্দেরপোলের রবিউল ইসলাম রবি ড্রাইভারকে ১০ টাকা কেজি চালের কার্ড দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ। তবে এই তালিকা নিয়ে গান্না ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নাসির উদ্দীন কোন মন্তব্য করতে রাজি হন নি। তবে প্রশাসনের একটি সুত্রে জানা গেছে, তদন্ত করে এ সব কার্ড বাতিলের উদ্যোগ নেওয়া হবে।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

১০ টাকা কেজির চাল নিয়ে এবার অরাজকতা ঝিনাইদহের গান্নায় ওজনে কম দেওয়ার প্রতিবাদ চড় থাপ্পড়ে চোখ গেল নাইটগার্ডের!

আপলোড টাইম : ১২:০৫:৩০ অপরাহ্ন, শনিবার, ৮ অক্টোবর ২০১৬

কাজল চৌধূরী, ঝিনাইদহ: ঝিনাইদহ সদর উপজেলার শৈলমারী বাজারে এবার ১০ টাকা কেজির চাল নিয়ে ডিলারের লোকের চড় থাপ্পড়ে হায়দার আলী নামে এক নাইটগার্ডের চোখ রক্তাক্ত হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে শুক্রবার দুপুরে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শৈলমারী বাজারে ১০ টাকা কেজি চালের ডিলার সোনা মন্ডলের কাছে চাল নিতে আসেন রঘুনাথপুর স্কুলের নাইটগার্ড হায়দার আলী। তার বাড়ি গান্না ইউনিয়নের বেতাই গ্রামে। চাল ওজনের সময় হায়দার আলী বলেন, আগেরবার চাল কম হয়েছে, এবার যেন সঠিক ভাবে মাপা হয়। এ কথা বলার সাথে সাথে ডিলারের নিকটাত্মীয় কুটিদুর্গাপুর গ্রামের আবুল ডাক্তারের ছেলে ফজলুর রহমান কানসারাও চোখে চড় থাপ্পড় মারে। এতে নাইটগার্ড হায়দার আলীর চোখে দিয়ে রক্ত বেরিয়ে যায়। এ নিয়ে শৈলমারী বাজারে ব্যাপক তোলপাড় সৃষ্টি হয়। স্থানীয়রা অভিযোগ করেছে সোনা মন্ডল ১০ টাকা কেজির চালের ডিলার হওয়ার পর থেকেই ওজনে চাল কম দিয়ে আসছে। তার ডিলারশীপ বাতিলের জন্য সুবিধাভোগীরা জেলা প্রশাসকের কাছে দাবী জানিয়েছেন। এদিকে খবর পেয়ে বেতাই বাজার পুলিশ ক্যাম্পের তদন্ত কর্মকর্তা তারিফুল ইসলাম তারিফ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। তবে পুলিশ আসার খবর শুনে ডিলারের অভিযুক্ত ভাই ফজলু পালিয়ে যায়। বিষয়টি নিয়ে ডিলার সোনা মন্ডল জানান, ভুলের জন্য ফজলু নাইটগার্ড হায়দারের কাছে মাফ চেয়ে নিয়েছে। তিনি বলেন ভবিষ্যতে এমনটি আর হবে না। স্থানীয় চেয়ারম্যান নাসির উদ্দীন জানান, সোনা মন্ডল কি ভাবে ডিলার হয়েছে আমি জানি না। এদিকে গান্না ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে ধনাঢ্য পরিবারকে ১০ টাকা কেজি চালের কার্ড দেওয়া নিয়ে চরম ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। বড়লোকদের এই কার্ড দেওয়া নিয়ে গান্না বাজারে ব্যাপক আলোচনা সমালোচনা হচ্ছে। প্রধানন্ত্রীর হুসিয়ারী থাকার পরও জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে পক্ষপাতিত্বমূলক কার্ড বাতিলের কোন উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ করেছে সাধারণ জনতা। সরেজমিন দেখা গেছে, গান্না বাজারের ডিলার গৌতম অধিকারীর কাছে যারা ১০ টাকা কেজি দরের চাল নিচ্ছেন, তাদের বেশির ভাগ অর্থশালী। চান্দেরপোল গ্রামের শুকুর আলীর ছেলে রেজাউল ইসলাম রাজা ও তার স্ত্রী মুসলিমা খাতুন দুজনাই চাকরীজীবী। রেজাউল কালুহাটী স্কুলের শিক্ষক। অথচ তাকে ১০ টাকা কেজি দরের চালের কার্ড দেওয়া হয়েছে। দহিজুড়ি গ্রামের সিরাজুল ইসলামের ছেলে লিয়াকত আলীর দুইতলা মার্কেট রয়েছে গান্না বাজারে। মাঠে তার প্রচুর জমিও আছে। তিনিও এই কার্ডের সুফলভোগী বলে অভিযোগ উঠেছে। এছাড়া পোড়া এলাকার সচ্ছল পরিবার হিসেবে বেতাই গ্রামের হুজুর আলী, কাশিমপুরের আলমগীর ডাক্তার ও চান্দেরপোলের রবিউল ইসলাম রবি ড্রাইভারকে ১০ টাকা কেজি চালের কার্ড দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ। তবে এই তালিকা নিয়ে গান্না ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নাসির উদ্দীন কোন মন্তব্য করতে রাজি হন নি। তবে প্রশাসনের একটি সুত্রে জানা গেছে, তদন্ত করে এ সব কার্ড বাতিলের উদ্যোগ নেওয়া হবে।