ইপেপার । আজমঙ্গলবার, ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

হোটেল মালিককে হত্যার হুমকি : যুবলীগের কেন্দ্রীয় নেতা অবরুদ্ধ

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৯:২১:৩৭ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৯ অগাস্ট ২০১৮
  • / ৩৯২ বার পড়া হয়েছে

৩ সমর্থককে গণপিটুনি মোটরসাইকের ভাংচুর
ঝিনাইদহ অফিস: ঝিনাইদহ-৩ আসন থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী ও কেন্দ্রীয় যুবলীগের কার্যনির্বাহী কমিটির উপ-ত্রাণ বিষয়ক সম্পাদক এমএম জামান মিল্লাত কোটচাঁদপুর শহরের সনি আবাসিক হোটেলের মালিক ও ম্যানেজারকে শারিরীকভাবে লাঞ্চিত করেছেন। সোমবার রাতে মধ্যরাতে এ ঘটনা ঘটে। বিষয়টি জানাজানি হয়ে পড়লে আওয়ামীলীগের চঞ্চল গ্রুপের বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মী ও এলাকাবাসী যুবলীগ নেতা মিল্লাতকে চার ঘণ্টা অবরুদ্ধ করে রাখেন। এসময় মিল্লাতের সাথে থাকা তার সমর্থক কামাল (২৭), আল আমিন (২০) ও আরিফ (৩৪) কে গণপিটুনি দেয়। তাদের ৩/৪টি মোটরসাইকেলও ভাংচুর করে বিক্ষুদ্ধ জনতা। পরিস্থিতি সামাল দিতে পুলিশ ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন কোটচাঁদপুর সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার মির্জা সালাউদ্দীন ও থানার ওসি (তদন্ত) জয়নাল আবেদিন। তারা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে এনে রাত ১টার দিকে এমএম জামান মিল্লাতকে বিক্ষুদ্ধ নেতাকর্মীদের হাত থেকে উদ্ধার করেন।

কোটচাঁদপুর সনি আবাসিক হোটেলের মালিক আওয়ামীলীগ কর্মী নূরুল ইসলাম খোকন জানান, মিল্লাত সোমবার রাতে মোটরসাইকেল শোডাউন করে রাতে আমার আবাসিক হোটেলের ২৪ নং এসি কক্ষে উঠেন। এসময় তিনি আবাসিকের ম্যানেজার ইউনূচ আলীকে ডেকে পানির গ্লাস ছোট কেন বলে গালাগালি করেন এবং তার গালে চড় থাপ্পড় মারে। বিষয়টি ম্যানেজার আমাকে জানালে আমি তার রুমে ঢুকে মিল্লাতের কাছে জানতে চাই ম্যানেজারের দোষ কি। এ সময় মিল্লাত ক্ষিপ্ত হয়ে বলেন “তুই কৈফিয়ত নেবার কে” ? এই বলে আমাকেও মারধর করেন এবং বলেন “শালা তুই আমার গ্রুপ বাদ দিয়ে চঞ্চলে’র গ্রুপ করিস ক্যান? তোকে গুলি করে আজ মেরেই ফেলবো”। হোটেল মালিক এ সময় ভয়ে দরজা খুলে পালিয়ে যান এবং ফোন করে সাবেক এমপি এ্যাড. শফিকুল আজম খান চঞ্চল ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক শাহাজাহান আলীকে জানান। ঘটনাটি দ্রুত কোটচাঁদপুর শহরে ছড়িয়ে পড়লে চঞ্চল গ্রুপের লোকজন মিল্লাতের বিরুদ্ধে ক্ষোভে ফেটে পড়েন এবং তাকে রুমে অবরুদ্ধ করে রাখেন। খবর পেয়ে রাত ১টার দিকে পুলিশ মিল্লাতকে উদ্ধার করেন। বিষয়টি নিয়ে কোটচাঁদপুর উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি শরিফুননেছা মিকি বলেন, ঘটনাটি সত্যিই দুঃখজনক। আমাদের উচিৎ হবে ভবিষ্যতে যেন এধরণের ঘটনা আর না ঘটে। উপজেলা আওয়ামীগের সেক্রেটারী শাহাজাহান আলী বলেন, আমরা মানুষের জন্য রাজনীতি করি। মানুষ আমাদের দ্বারা নিগৃহীত হোক এটা আমাদের কাম্য নয়। তিনি বলেন মিল্লাতের এই আচরণের কারণে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে অনেক কটু কথা শুনতে হচ্ছে। এ ব্যাপারে কোটচাঁদপুর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মির্জা সালাউদ্দীন মঙ্গলবার বিকালে বলেন, তুচ্ছ একটি ঘটনা নিয়ে আওয়ামীলীগের দু’গ্রুপের মধ্যে উত্তেজনার সৃষ্টি হলে আমরা এটাকে বেশী দুর এগোতে দেয়নি। বর্তমানে উভয় পক্ষ শান্ত আছে।
বিষয়টি নিয়ে কেন্দ্রীয় যুবলীগ নেতা এসএম জামান মিল্লাত জানান, আমি কারো পিস্তল দেখিয়ে হত্যার হুমকি দেয়নি। আমার লাইসেন্স করা পিস্তল থাকলেও ঘটনার সময় কাছে পিস্তল ছিল না। তিনি বলেন হোটল মালিকই আমাকে অপমান অপদস্ত করেছে। হোটেলের রুম পরিস্কার করে না। কমলা লেবুর খোসা দিয়ে বেসিন নষ্ট করা ছিল। আমি এটার কথা তাদের বলেছিলাম। আমার এ কথায় তারা ক্ষুদ্ধ হয়ে আমাকে ফাঁসাতে ষড়যন্ত্র করে। তিনি আরো বলেন, আমার জনপ্রিয়তায় ঈর্শ্বানিত হয়ে সাবেক এমপি চঞ্চল, কোটচাঁদপুর আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহজাহান ও ধর্ষণ মামলার আসামী ছত্রলীগ নেতা শাহিন এই ষড়যন্ত্র করেছে। তিনি বলেন আমি বিষয়টি কেন্দ্র ও জেলা আ’লীগকে অবহিত করেছি।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

হোটেল মালিককে হত্যার হুমকি : যুবলীগের কেন্দ্রীয় নেতা অবরুদ্ধ

আপলোড টাইম : ০৯:২১:৩৭ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৯ অগাস্ট ২০১৮

৩ সমর্থককে গণপিটুনি মোটরসাইকের ভাংচুর
ঝিনাইদহ অফিস: ঝিনাইদহ-৩ আসন থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী ও কেন্দ্রীয় যুবলীগের কার্যনির্বাহী কমিটির উপ-ত্রাণ বিষয়ক সম্পাদক এমএম জামান মিল্লাত কোটচাঁদপুর শহরের সনি আবাসিক হোটেলের মালিক ও ম্যানেজারকে শারিরীকভাবে লাঞ্চিত করেছেন। সোমবার রাতে মধ্যরাতে এ ঘটনা ঘটে। বিষয়টি জানাজানি হয়ে পড়লে আওয়ামীলীগের চঞ্চল গ্রুপের বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মী ও এলাকাবাসী যুবলীগ নেতা মিল্লাতকে চার ঘণ্টা অবরুদ্ধ করে রাখেন। এসময় মিল্লাতের সাথে থাকা তার সমর্থক কামাল (২৭), আল আমিন (২০) ও আরিফ (৩৪) কে গণপিটুনি দেয়। তাদের ৩/৪টি মোটরসাইকেলও ভাংচুর করে বিক্ষুদ্ধ জনতা। পরিস্থিতি সামাল দিতে পুলিশ ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন কোটচাঁদপুর সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার মির্জা সালাউদ্দীন ও থানার ওসি (তদন্ত) জয়নাল আবেদিন। তারা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে এনে রাত ১টার দিকে এমএম জামান মিল্লাতকে বিক্ষুদ্ধ নেতাকর্মীদের হাত থেকে উদ্ধার করেন।

কোটচাঁদপুর সনি আবাসিক হোটেলের মালিক আওয়ামীলীগ কর্মী নূরুল ইসলাম খোকন জানান, মিল্লাত সোমবার রাতে মোটরসাইকেল শোডাউন করে রাতে আমার আবাসিক হোটেলের ২৪ নং এসি কক্ষে উঠেন। এসময় তিনি আবাসিকের ম্যানেজার ইউনূচ আলীকে ডেকে পানির গ্লাস ছোট কেন বলে গালাগালি করেন এবং তার গালে চড় থাপ্পড় মারে। বিষয়টি ম্যানেজার আমাকে জানালে আমি তার রুমে ঢুকে মিল্লাতের কাছে জানতে চাই ম্যানেজারের দোষ কি। এ সময় মিল্লাত ক্ষিপ্ত হয়ে বলেন “তুই কৈফিয়ত নেবার কে” ? এই বলে আমাকেও মারধর করেন এবং বলেন “শালা তুই আমার গ্রুপ বাদ দিয়ে চঞ্চলে’র গ্রুপ করিস ক্যান? তোকে গুলি করে আজ মেরেই ফেলবো”। হোটেল মালিক এ সময় ভয়ে দরজা খুলে পালিয়ে যান এবং ফোন করে সাবেক এমপি এ্যাড. শফিকুল আজম খান চঞ্চল ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক শাহাজাহান আলীকে জানান। ঘটনাটি দ্রুত কোটচাঁদপুর শহরে ছড়িয়ে পড়লে চঞ্চল গ্রুপের লোকজন মিল্লাতের বিরুদ্ধে ক্ষোভে ফেটে পড়েন এবং তাকে রুমে অবরুদ্ধ করে রাখেন। খবর পেয়ে রাত ১টার দিকে পুলিশ মিল্লাতকে উদ্ধার করেন। বিষয়টি নিয়ে কোটচাঁদপুর উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি শরিফুননেছা মিকি বলেন, ঘটনাটি সত্যিই দুঃখজনক। আমাদের উচিৎ হবে ভবিষ্যতে যেন এধরণের ঘটনা আর না ঘটে। উপজেলা আওয়ামীগের সেক্রেটারী শাহাজাহান আলী বলেন, আমরা মানুষের জন্য রাজনীতি করি। মানুষ আমাদের দ্বারা নিগৃহীত হোক এটা আমাদের কাম্য নয়। তিনি বলেন মিল্লাতের এই আচরণের কারণে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে অনেক কটু কথা শুনতে হচ্ছে। এ ব্যাপারে কোটচাঁদপুর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মির্জা সালাউদ্দীন মঙ্গলবার বিকালে বলেন, তুচ্ছ একটি ঘটনা নিয়ে আওয়ামীলীগের দু’গ্রুপের মধ্যে উত্তেজনার সৃষ্টি হলে আমরা এটাকে বেশী দুর এগোতে দেয়নি। বর্তমানে উভয় পক্ষ শান্ত আছে।
বিষয়টি নিয়ে কেন্দ্রীয় যুবলীগ নেতা এসএম জামান মিল্লাত জানান, আমি কারো পিস্তল দেখিয়ে হত্যার হুমকি দেয়নি। আমার লাইসেন্স করা পিস্তল থাকলেও ঘটনার সময় কাছে পিস্তল ছিল না। তিনি বলেন হোটল মালিকই আমাকে অপমান অপদস্ত করেছে। হোটেলের রুম পরিস্কার করে না। কমলা লেবুর খোসা দিয়ে বেসিন নষ্ট করা ছিল। আমি এটার কথা তাদের বলেছিলাম। আমার এ কথায় তারা ক্ষুদ্ধ হয়ে আমাকে ফাঁসাতে ষড়যন্ত্র করে। তিনি আরো বলেন, আমার জনপ্রিয়তায় ঈর্শ্বানিত হয়ে সাবেক এমপি চঞ্চল, কোটচাঁদপুর আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহজাহান ও ধর্ষণ মামলার আসামী ছত্রলীগ নেতা শাহিন এই ষড়যন্ত্র করেছে। তিনি বলেন আমি বিষয়টি কেন্দ্র ও জেলা আ’লীগকে অবহিত করেছি।