ইপেপার । আজবৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

হুমকিতে ভুক্তভোগী পরিবার, দিন কাটছে আতঙ্কে!

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৮:৫২:১৮ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১২ সেপ্টেম্বর ২০২০
  • / ১৮৮ বার পড়া হয়েছে

দর্শনার পারকৃষ্ণপুরে শিশু সুমাইয়া ধর্ষণ ও হত্যাকাণ্ডের ঘটনা
দর্শনা অফিস:
দর্শনার পারকৃষ্ণপুরে আলোচিত শিশু সুমাইয়া ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনায় নানা রকম হুমকি-ধামকির অভিযোগ তুলেছেন শিশু সুমাইয়ার মা পলি খাতুন। এ হুমকি-ধামকিতে সুমাইয়ার পরিবারের সদস্যদের আতঙ্কে কাটছে দিন।
জানা যায়, দামুড়হুদা উপজেলার দর্শনা থানার পারকৃষ্ণপুর-মদনা ইউনিয়নের পারকৃষ্ণপুর ইউনিয়নপাড়ার নাশিরুল ইসলামের শিশুকন্যা ছয়ঘরিয়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ২য় শ্রেণির ছাত্রী সুমাইয়া খাতুনকে (৭) ধর্ষণ ও ধর্ষণ শেষে হত্যা করেন প্রতিবেশী নুর ইসলামের ছেলে চিহ্নিত চোর মোমিনুল ইসলাম (২০)। ঘটনার দিনই পুলিশ মোমিনুলকে আটক করে। পরদিন সুমাইয়ার পিতা নাছিরুল ইসলাম বাদী হয়ে তৎকালীন দামুড়হুদা মডেল থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ২০০০/২০০৩ (সংশোধনী) আইনে মোমিনুল ইসলামকে আসামি করে একটি মামলা করেন। মামলার পর থেকে এবং গ্রামবাসীর ভয়ে বেশ কিছুদিন মোমিনুলের পরিবারের সদস্যরা পলাতক থাকলেও পরে তারা আবার গ্রামে এসে বসবাস শুরু করে। এরপর থেকেই তারা বিভিন্নভাবে শিশু সুমাইয়ার পরিবারকে বিভিন্নভাবে হুমকি-ধামকি প্রদান করছে বলে অভিযোগ তুলেছেন সুমাইয়ার মা পলি খাতুন। এর মধ্যে মামলার সাড়ে সাত মাস পর আসামি মোমিনুলের জামিনের জোর প্রক্রিয়াও অব্যাহত রেখেছে ধর্ষক মোমিনুলের পরিবার। গোপন একটি সূত্রে জানা গেছে, আগামী ২২ সেপ্টেম্বর এ মামলার ধার্যকৃত দিন রয়েছে। মোমিনুলের পরিবার ওই দিনই তাঁকে জামিনে মুক্ত করার জন্য জোর প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
হুমকি-ধামকির বিষয়ে সুমাইয়া খাতুনের মা পলি খাতুন ও নানী রোজিনা খাতুন অভিযোগ করে জানান, ‘লম্পট মোমিনুল ইসলামের মামাতো বোন শিউলী খাতুন, আক্কাস আলীর ছেলে মামা হাফিজুল ইসলাম ও নজু আমাদের পরিবারকে নানা ধরনের হুমকি-ধামকি প্রদর্শন করছে। আগামী ২২ তারিখ মোমিনুলকে জামিন বের করার পর রক্তের বন্যা বয়ে দেবে বলে তারা হুমকি দিচ্ছে।’ এ ছাড়া ভুক্তভোগী পরিবারের সঙ্গে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজসহ ঝগড়া করার অভিযোগ তোলেন পলি খাতুন।
এ বিষয়ে স্থানীয় বেশ কয়েকজন জানান, শিশু সুমাইয়া ধর্ষণ ও হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় পুলিশ আসামিকে আটক করার পর থেকে মোমিনুলের পরিবার ভুক্তোভোগী সুমাইয়ার পরিবারের ওপর বিভিন্নভাবে হুমকি-ধামকি দেখিয়ে আসছে। এছাড়া সুমাইয়ার পরিবারের প্রতি আসামির পরিবারের আক্রশমূলক মনোভাব রয়েছে। এলাকাবাসীর দাবি, আগামী ২২ সেপ্টেম্বর যাতে আসামির যেন কোনোভাবেই জামিন না হয়।
পারকৃষ্ণপুর-মদনা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাকারিয়া আলম বলেন, ‘সুমাইয়ার পরিবারের প্রতি এ ধরনের হুমকি-ধামকির বিষয়টি আমার কানে এসেছে। তবে ঘটনা সঠিক হলে আসামির পরিবারের বিরুদ্ধে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
দর্শনা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) শেখ মাহাবুবুর রহমান জানান, ‘সুমাইয়া ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনায় আসামির বিরুদ্ধে কঠোর চার্জশিট তৈরি করে আদালতে পাঠানো হয়েছে। এছাড়া আমার সঙ্গে সুমাইয়ার পরিবারের মামলার তদন্তস্বার্থে প্রায় যোগাযোগ হয়। এ ধরনের কোনো অভিযোগ আমার কাছে ভুক্তোভোগী পরিবার জানায়নি।’
এ বিষয়ে দর্শনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহাবুবুর রহমান কাজল জানান, ‘এ ঘটনায় আমার কাছে কোনো লিখিত অভিযোগ আসেনি। তবে বেশ কিছুদিন আগে দুই পরিবারের মধ্যে একটি ছোট-খাটো সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছিল। বিষয়টি সমাধানও হয়েছে।’
উল্লেখ্য, গত ১ ফেব্রুয়ারি পারকৃষ্ণপুর গ্রামের নাছিরুল ইসলামের শিশুকন্যা ২য় শ্রেণির ছাত্রী সুমাইয়া খাতুনকে (০৭) প্রতিবেশী নুর ইসলামের ছেলে মোমিনুল ইসলাম (২০) ফুঁসলিয়ে জোরপূর্বক ধর্ষণ করার পর হত্যা করেন। এ ঘটনায় পুলিশ অভিযুক্ত মোমিনুলকে আটক করে।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

হুমকিতে ভুক্তভোগী পরিবার, দিন কাটছে আতঙ্কে!

আপলোড টাইম : ০৮:৫২:১৮ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১২ সেপ্টেম্বর ২০২০

দর্শনার পারকৃষ্ণপুরে শিশু সুমাইয়া ধর্ষণ ও হত্যাকাণ্ডের ঘটনা
দর্শনা অফিস:
দর্শনার পারকৃষ্ণপুরে আলোচিত শিশু সুমাইয়া ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনায় নানা রকম হুমকি-ধামকির অভিযোগ তুলেছেন শিশু সুমাইয়ার মা পলি খাতুন। এ হুমকি-ধামকিতে সুমাইয়ার পরিবারের সদস্যদের আতঙ্কে কাটছে দিন।
জানা যায়, দামুড়হুদা উপজেলার দর্শনা থানার পারকৃষ্ণপুর-মদনা ইউনিয়নের পারকৃষ্ণপুর ইউনিয়নপাড়ার নাশিরুল ইসলামের শিশুকন্যা ছয়ঘরিয়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ২য় শ্রেণির ছাত্রী সুমাইয়া খাতুনকে (৭) ধর্ষণ ও ধর্ষণ শেষে হত্যা করেন প্রতিবেশী নুর ইসলামের ছেলে চিহ্নিত চোর মোমিনুল ইসলাম (২০)। ঘটনার দিনই পুলিশ মোমিনুলকে আটক করে। পরদিন সুমাইয়ার পিতা নাছিরুল ইসলাম বাদী হয়ে তৎকালীন দামুড়হুদা মডেল থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ২০০০/২০০৩ (সংশোধনী) আইনে মোমিনুল ইসলামকে আসামি করে একটি মামলা করেন। মামলার পর থেকে এবং গ্রামবাসীর ভয়ে বেশ কিছুদিন মোমিনুলের পরিবারের সদস্যরা পলাতক থাকলেও পরে তারা আবার গ্রামে এসে বসবাস শুরু করে। এরপর থেকেই তারা বিভিন্নভাবে শিশু সুমাইয়ার পরিবারকে বিভিন্নভাবে হুমকি-ধামকি প্রদান করছে বলে অভিযোগ তুলেছেন সুমাইয়ার মা পলি খাতুন। এর মধ্যে মামলার সাড়ে সাত মাস পর আসামি মোমিনুলের জামিনের জোর প্রক্রিয়াও অব্যাহত রেখেছে ধর্ষক মোমিনুলের পরিবার। গোপন একটি সূত্রে জানা গেছে, আগামী ২২ সেপ্টেম্বর এ মামলার ধার্যকৃত দিন রয়েছে। মোমিনুলের পরিবার ওই দিনই তাঁকে জামিনে মুক্ত করার জন্য জোর প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
হুমকি-ধামকির বিষয়ে সুমাইয়া খাতুনের মা পলি খাতুন ও নানী রোজিনা খাতুন অভিযোগ করে জানান, ‘লম্পট মোমিনুল ইসলামের মামাতো বোন শিউলী খাতুন, আক্কাস আলীর ছেলে মামা হাফিজুল ইসলাম ও নজু আমাদের পরিবারকে নানা ধরনের হুমকি-ধামকি প্রদর্শন করছে। আগামী ২২ তারিখ মোমিনুলকে জামিন বের করার পর রক্তের বন্যা বয়ে দেবে বলে তারা হুমকি দিচ্ছে।’ এ ছাড়া ভুক্তভোগী পরিবারের সঙ্গে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজসহ ঝগড়া করার অভিযোগ তোলেন পলি খাতুন।
এ বিষয়ে স্থানীয় বেশ কয়েকজন জানান, শিশু সুমাইয়া ধর্ষণ ও হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় পুলিশ আসামিকে আটক করার পর থেকে মোমিনুলের পরিবার ভুক্তোভোগী সুমাইয়ার পরিবারের ওপর বিভিন্নভাবে হুমকি-ধামকি দেখিয়ে আসছে। এছাড়া সুমাইয়ার পরিবারের প্রতি আসামির পরিবারের আক্রশমূলক মনোভাব রয়েছে। এলাকাবাসীর দাবি, আগামী ২২ সেপ্টেম্বর যাতে আসামির যেন কোনোভাবেই জামিন না হয়।
পারকৃষ্ণপুর-মদনা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাকারিয়া আলম বলেন, ‘সুমাইয়ার পরিবারের প্রতি এ ধরনের হুমকি-ধামকির বিষয়টি আমার কানে এসেছে। তবে ঘটনা সঠিক হলে আসামির পরিবারের বিরুদ্ধে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
দর্শনা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) শেখ মাহাবুবুর রহমান জানান, ‘সুমাইয়া ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনায় আসামির বিরুদ্ধে কঠোর চার্জশিট তৈরি করে আদালতে পাঠানো হয়েছে। এছাড়া আমার সঙ্গে সুমাইয়ার পরিবারের মামলার তদন্তস্বার্থে প্রায় যোগাযোগ হয়। এ ধরনের কোনো অভিযোগ আমার কাছে ভুক্তোভোগী পরিবার জানায়নি।’
এ বিষয়ে দর্শনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহাবুবুর রহমান কাজল জানান, ‘এ ঘটনায় আমার কাছে কোনো লিখিত অভিযোগ আসেনি। তবে বেশ কিছুদিন আগে দুই পরিবারের মধ্যে একটি ছোট-খাটো সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছিল। বিষয়টি সমাধানও হয়েছে।’
উল্লেখ্য, গত ১ ফেব্রুয়ারি পারকৃষ্ণপুর গ্রামের নাছিরুল ইসলামের শিশুকন্যা ২য় শ্রেণির ছাত্রী সুমাইয়া খাতুনকে (০৭) প্রতিবেশী নুর ইসলামের ছেলে মোমিনুল ইসলাম (২০) ফুঁসলিয়ে জোরপূর্বক ধর্ষণ করার পর হত্যা করেন। এ ঘটনায় পুলিশ অভিযুক্ত মোমিনুলকে আটক করে।