ইপেপার । আজশুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

হার্ডলাইনে পুলিশ : তিন শতাধিক বিএনপি নেতাকর্মী আটক

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৭:৩৯:১৭ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৩ ফেব্রুয়ারী ২০১৮
  • / ৩০২ বার পড়া হয়েছে

৮ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়ার মামলার রায় ঘিরে উত্তাপ : রাজধানীতে প্রবেশের ১৩ চেকপোস্টে তল্লাশি
আবাসিক হোটেলে ঠাঁই নিচ্ছেন আন্দোলনকারীরা : জামায়াত-শিবিরের কর্মীরাও মাঠে নামতে পারে
সমীকরণ ডেস্ক: বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে করা জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার রায় ৮ ফেব্রুয়ারি। এ রায় নিয়ে বড় ধরনের নাশকতার আশঙ্কা করছে পুলিশ। তারা বলছে, ওইদিন বিএনপির পাশাপাশি জামায়াত-শিবিরের কর্মীরাও মাঠে নামতে পারে। আর গোয়েন্দারা দাবি করছেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ওপর ও গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় ওই দিন চোরাগোপ্তা হামলা হতে পারে বলে তারা তথ্য পেয়েছেন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বলছে, এর ভিত্তিতে সাঁড়াশি অভিযান শুরু করেছে তারা। ‘সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে’ সংশ্লিষ্টদের গ্রেফতারও করা হচ্ছে। সেই সঙ্গে নজরদারি বাড়ানো হয়েছে রাজধানীর আবাসিক হোটেলগুলোয়ও।
বিগত ৪ দিনে বিএনপির ২৭৫ নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে দাবি করেছে দলটি। এর মধ্যে মাঠপর্যায়ের নেতাকর্মীরা যেমন রয়েছেন, তেমনি রয়েছেন কেন্দ্রীয় নেতাও। বিএনপি বলছে, আতঙ্ক ছড়াতে ও দলকে দমিয়ে রাখতে একের পর এক মিথ্যা মামলা দিয়ে নেতাকর্মীদের গ্রেফতার করা হচ্ছে। এসব উপেক্ষা করে ৮ ফেব্রুয়ারি শান্তিপূর্ণ কর্মসূচির মাধ্যমেই রাজপথে থাকতে চান তারা। এছাড়া গতকাল বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আমানউল্লাহ আমান ও জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য নাজিমউদ্দিন আলমকে র‌্যাব সদস্যরা আটক করেছেন বলে দাবি করেছেন নাজিমউদ্দিনের ব্যক্তিগত সহকারী বিপ্লব। তিনি বলেন, রাত সাড়ে ৯টার দিকে মহাখালী ডিওএইচএসে নাজিমউদ্দিন আলমের বাসা থেকে তাদের আটক করা হয়। বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সভার একদিন আগে আটক হলেন এই দুই নেতা।
পুলিশ সদর দফতরের অতিরিক্ত ডিআইজি (ইন্টেলিজেন্স অ্যান্ড স্পেশাল অ্যাফেয়ার্স) মনিরুজ্জামান গতকাল শুক্রবার বিকালে বলেন, ৩০ জানুয়ারি হাইকোর্টের সামনে বিএনপির নেতাকর্মীরা নাশকতার মহড়া চালিয়েছে। ওই দিন প্রিজন ভ্যানে হামলা চালিয়ে দুই নেতাকর্মীকে ছিনিয়ে নেয় তারা। তাই ৮ ফেব্রুয়ারিকে ঘিরে রাজধানী ও রাজধানীর বাইরে পুলিশের সব ইউনিটকে কঠোর অবস্থানে থাকতে পুলিশ সদর দফতর থেকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। নবনিযুক্ত আইজি ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী এরই মধ্যে পুলিশের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা, গোয়েন্দা বিভাগ এবং বিভিন্ন জেলার এসপিদের কাছে সতর্ক বার্তা পাঠিয়েছেন।
শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন করার ব্যাপারে বিএনপির নেতারা বলছেন, রায় ঘিরে কোনো সহিংস কর্মসূচিতে তারা যাবেন না। তেমন কোনো পরিকল্পনাও নেই। তারপরও রাজধানীসহ সারা দেশে পুলিশ ধরপাকড় শুরু করেছে। চার দিনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য তরিকুল ইসলামের দুই ছেলেসহ রাজধানী থেকেই পুলিশ ২৭৫ নেতাকর্মীকে আটক করেছে।
শুক্রবার নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী জানান, গত বৃহস্পতিবার ৩৫ জনের বেশি নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এদিন বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির সহ বন ও পরিবেশবিষয়ক সম্পাদক কাজী রওনকুল ইসলাম টিপুকে শাহবাগ এলাকা থেকে উঠিয়ে নিয়েছে র‌্যাব। এর আগে মঙ্গলবার রাতে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়সহ দলের ৭০ নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়।
এছাড়া দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার জমিরউদ্দিন সরকারসহ অনেক নেতার বাসায় অভিযান চালিয়েছে পুলিশ। গত বৃহস্পতিবার ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সিনিয়র সহসভাপতি মুন্সি বজলুল বাসিত আঞ্জু, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সহসভাপতি মীর হোসেন মীরু, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বেল্লাল চেয়ারম্যান, দারুস সালাম থানা বিএনপি নেতা হুমায়ুন কবির, দারুসসালাম থানা শাখা মহিলা দলের সভানেত্রী নাজমা কবির এবং শ্যামপুর থানা বিএনপি নেতা আ ন ম সাইফুলের বাসায় তল্লাশি চালিয়েছে পুলিশ।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

হার্ডলাইনে পুলিশ : তিন শতাধিক বিএনপি নেতাকর্মী আটক

আপলোড টাইম : ০৭:৩৯:১৭ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৩ ফেব্রুয়ারী ২০১৮

৮ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়ার মামলার রায় ঘিরে উত্তাপ : রাজধানীতে প্রবেশের ১৩ চেকপোস্টে তল্লাশি
আবাসিক হোটেলে ঠাঁই নিচ্ছেন আন্দোলনকারীরা : জামায়াত-শিবিরের কর্মীরাও মাঠে নামতে পারে
সমীকরণ ডেস্ক: বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে করা জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার রায় ৮ ফেব্রুয়ারি। এ রায় নিয়ে বড় ধরনের নাশকতার আশঙ্কা করছে পুলিশ। তারা বলছে, ওইদিন বিএনপির পাশাপাশি জামায়াত-শিবিরের কর্মীরাও মাঠে নামতে পারে। আর গোয়েন্দারা দাবি করছেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ওপর ও গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় ওই দিন চোরাগোপ্তা হামলা হতে পারে বলে তারা তথ্য পেয়েছেন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বলছে, এর ভিত্তিতে সাঁড়াশি অভিযান শুরু করেছে তারা। ‘সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে’ সংশ্লিষ্টদের গ্রেফতারও করা হচ্ছে। সেই সঙ্গে নজরদারি বাড়ানো হয়েছে রাজধানীর আবাসিক হোটেলগুলোয়ও।
বিগত ৪ দিনে বিএনপির ২৭৫ নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে দাবি করেছে দলটি। এর মধ্যে মাঠপর্যায়ের নেতাকর্মীরা যেমন রয়েছেন, তেমনি রয়েছেন কেন্দ্রীয় নেতাও। বিএনপি বলছে, আতঙ্ক ছড়াতে ও দলকে দমিয়ে রাখতে একের পর এক মিথ্যা মামলা দিয়ে নেতাকর্মীদের গ্রেফতার করা হচ্ছে। এসব উপেক্ষা করে ৮ ফেব্রুয়ারি শান্তিপূর্ণ কর্মসূচির মাধ্যমেই রাজপথে থাকতে চান তারা। এছাড়া গতকাল বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আমানউল্লাহ আমান ও জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য নাজিমউদ্দিন আলমকে র‌্যাব সদস্যরা আটক করেছেন বলে দাবি করেছেন নাজিমউদ্দিনের ব্যক্তিগত সহকারী বিপ্লব। তিনি বলেন, রাত সাড়ে ৯টার দিকে মহাখালী ডিওএইচএসে নাজিমউদ্দিন আলমের বাসা থেকে তাদের আটক করা হয়। বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সভার একদিন আগে আটক হলেন এই দুই নেতা।
পুলিশ সদর দফতরের অতিরিক্ত ডিআইজি (ইন্টেলিজেন্স অ্যান্ড স্পেশাল অ্যাফেয়ার্স) মনিরুজ্জামান গতকাল শুক্রবার বিকালে বলেন, ৩০ জানুয়ারি হাইকোর্টের সামনে বিএনপির নেতাকর্মীরা নাশকতার মহড়া চালিয়েছে। ওই দিন প্রিজন ভ্যানে হামলা চালিয়ে দুই নেতাকর্মীকে ছিনিয়ে নেয় তারা। তাই ৮ ফেব্রুয়ারিকে ঘিরে রাজধানী ও রাজধানীর বাইরে পুলিশের সব ইউনিটকে কঠোর অবস্থানে থাকতে পুলিশ সদর দফতর থেকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। নবনিযুক্ত আইজি ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী এরই মধ্যে পুলিশের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা, গোয়েন্দা বিভাগ এবং বিভিন্ন জেলার এসপিদের কাছে সতর্ক বার্তা পাঠিয়েছেন।
শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন করার ব্যাপারে বিএনপির নেতারা বলছেন, রায় ঘিরে কোনো সহিংস কর্মসূচিতে তারা যাবেন না। তেমন কোনো পরিকল্পনাও নেই। তারপরও রাজধানীসহ সারা দেশে পুলিশ ধরপাকড় শুরু করেছে। চার দিনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য তরিকুল ইসলামের দুই ছেলেসহ রাজধানী থেকেই পুলিশ ২৭৫ নেতাকর্মীকে আটক করেছে।
শুক্রবার নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী জানান, গত বৃহস্পতিবার ৩৫ জনের বেশি নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এদিন বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির সহ বন ও পরিবেশবিষয়ক সম্পাদক কাজী রওনকুল ইসলাম টিপুকে শাহবাগ এলাকা থেকে উঠিয়ে নিয়েছে র‌্যাব। এর আগে মঙ্গলবার রাতে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়সহ দলের ৭০ নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়।
এছাড়া দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার জমিরউদ্দিন সরকারসহ অনেক নেতার বাসায় অভিযান চালিয়েছে পুলিশ। গত বৃহস্পতিবার ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সিনিয়র সহসভাপতি মুন্সি বজলুল বাসিত আঞ্জু, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সহসভাপতি মীর হোসেন মীরু, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বেল্লাল চেয়ারম্যান, দারুস সালাম থানা বিএনপি নেতা হুমায়ুন কবির, দারুসসালাম থানা শাখা মহিলা দলের সভানেত্রী নাজমা কবির এবং শ্যামপুর থানা বিএনপি নেতা আ ন ম সাইফুলের বাসায় তল্লাশি চালিয়েছে পুলিশ।