ইপেপার । আজশুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

হলফনামা নিয়ে প্রশ্ন

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ১০:১৫:২৯ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৮ ডিসেম্বর ২০১৮
  • / ৪৩২ বার পড়া হয়েছে

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন আসন্ন। যাচাই-বাছাইয়ে বাদপড়া প্রার্থীদের আপিলের শুনানি চলছে। মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের পর চূড়ান্ত তালিকা জানিয়ে দেওয়া হবে। প্রতীক বরাদ্দের পর আনুষ্ঠানিক প্রচার শুরু হবে। এরই মধ্যে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে অনেক প্রার্থীর হলফনামা নিয়ে। নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আসতে হলে একজন প্রার্থীকে আটটি তথ্যসংবলিত একটি হলফনামা রিটার্নিং অফিসারের কাছে জমা দিতে হয়। নন-জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে শপথ করে বলতে হয়, হলফনামায় দেওয়া সব তথ্য সত্য। আবার গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশে স্পষ্ট বলা আছে, তদন্তে কোনো প্রার্থীর হলফনামার তথ্য অসত্য প্রমাণিত হলে কিংবা তা সঠিক না হলে রিটার্নিং অফিসার সংশ্লিষ্ট প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল করে দিতে পারেন। গণপ্রতিনিধিত্ব আইনে নির্বাচন কমিশনও প্রার্থিতা বাতিলের ক্ষমতা রাখে। গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট মহলের ধারণা, এবারের নির্বাচনে মনোনয়নপ্রত্যাশী প্রার্থীদের একটি বড় অংশ মিথ্যা তথ্য দিয়েছে। নির্বাচন বিশ্লেষকদের ধারণা, অনেক প্রার্থীই তাঁদের আয়, সম্পদ ও পেশার সঠিক তথ্য দেননি। হলফনামা সম্পর্কিত খবরাদি বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, পাঁচ বছর আগে অনেকের যে আয় ছিল, এখনো তা পরিবর্তিত হয়নি। আবার কিছু প্রার্থীর আয় যে হারে বেড়েছে, তাতে সন্দেহ করার যথেষ্ট অবকাশ আছে। সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞদের ধারণা, নির্বাচন কমিশনও প্রার্থীদের হলফনামার সত্যতা যাচাইয়ের ব্যাপারে যথেষ্ট আন্তরিক ও মনোযোগী নয়। আর সে কারণেই প্রার্থীরা নিজেদের মতো করে মনগড়া হলফনামা দিয়ে সত্য গোপন করার চেষ্টা করেছেন। হলফনামায় প্রার্থীর দেওয়া তথ্য যাচাই করে দেখা হলে অনেকের প্রার্থিতা বাতিল হয়ে যাবে বলেও মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। সে ক্ষেত্রে ভবিষ্যতে কোনো প্রার্থী হলফনামায় ভুল তথ্য দেওয়া থেকে বিরত থাকবেন। ভুল তথ্য দেওয়ার ক্ষেত্রে প্রার্থীদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না বলেই অসত্য তথ্য দেওয়া থেকে কাউকে বিরত রাখা যাচ্ছে না। জনগণের ম্যান্ডেট নিয়ে যাঁরা জাতীয় সংসদে আসবেন, তাঁদের ইমেজ অবশ্যই পরিষ্কার হতে হবে। তথ্য গোপনকারী, বিশেষ করে আয় ও সম্পদের তথ্য গোপনকারীদের সৎ প্রার্থী বলা যাবে না। জাতীয় সংসদে আগামী পাঁচ বছরের জন্য যাঁরা জনগণের প্রতিনিধি হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন, তাঁদের সততা যেন কোনোভাবেই প্রশ্নবিদ্ধ না হয় সেদিকে দৃষ্টি দেওয়া বাঞ্ছনীয়। এ জন্য নির্বাচন কমিশন আগে থেকেই বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করতে পারে। প্রয়োজনে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সাহায্য নিয়ে প্রার্থীর তথ্য সম্পর্কে ধারণা পাওয়া অসম্ভব নয়। বিশেষ করে আয়কর রিটার্ন থেকে আয় ও সম্পদের মোটামুটি একটা স্বচ্ছ হিসাব পাওয়া অসম্ভব নয়। অন্যদিকে দুর্নীতি সম্পর্কিত যেকোনো তথ্য দিতে পারে দুদক। আমরা আশা করব, হলফনামায় সত্য তথ্য দিয়েই প্রার্থীরা নির্বাচনের মাঠে আসবেন।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

হলফনামা নিয়ে প্রশ্ন

আপলোড টাইম : ১০:১৫:২৯ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৮ ডিসেম্বর ২০১৮

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন আসন্ন। যাচাই-বাছাইয়ে বাদপড়া প্রার্থীদের আপিলের শুনানি চলছে। মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের পর চূড়ান্ত তালিকা জানিয়ে দেওয়া হবে। প্রতীক বরাদ্দের পর আনুষ্ঠানিক প্রচার শুরু হবে। এরই মধ্যে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে অনেক প্রার্থীর হলফনামা নিয়ে। নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আসতে হলে একজন প্রার্থীকে আটটি তথ্যসংবলিত একটি হলফনামা রিটার্নিং অফিসারের কাছে জমা দিতে হয়। নন-জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে শপথ করে বলতে হয়, হলফনামায় দেওয়া সব তথ্য সত্য। আবার গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশে স্পষ্ট বলা আছে, তদন্তে কোনো প্রার্থীর হলফনামার তথ্য অসত্য প্রমাণিত হলে কিংবা তা সঠিক না হলে রিটার্নিং অফিসার সংশ্লিষ্ট প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল করে দিতে পারেন। গণপ্রতিনিধিত্ব আইনে নির্বাচন কমিশনও প্রার্থিতা বাতিলের ক্ষমতা রাখে। গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট মহলের ধারণা, এবারের নির্বাচনে মনোনয়নপ্রত্যাশী প্রার্থীদের একটি বড় অংশ মিথ্যা তথ্য দিয়েছে। নির্বাচন বিশ্লেষকদের ধারণা, অনেক প্রার্থীই তাঁদের আয়, সম্পদ ও পেশার সঠিক তথ্য দেননি। হলফনামা সম্পর্কিত খবরাদি বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, পাঁচ বছর আগে অনেকের যে আয় ছিল, এখনো তা পরিবর্তিত হয়নি। আবার কিছু প্রার্থীর আয় যে হারে বেড়েছে, তাতে সন্দেহ করার যথেষ্ট অবকাশ আছে। সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞদের ধারণা, নির্বাচন কমিশনও প্রার্থীদের হলফনামার সত্যতা যাচাইয়ের ব্যাপারে যথেষ্ট আন্তরিক ও মনোযোগী নয়। আর সে কারণেই প্রার্থীরা নিজেদের মতো করে মনগড়া হলফনামা দিয়ে সত্য গোপন করার চেষ্টা করেছেন। হলফনামায় প্রার্থীর দেওয়া তথ্য যাচাই করে দেখা হলে অনেকের প্রার্থিতা বাতিল হয়ে যাবে বলেও মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। সে ক্ষেত্রে ভবিষ্যতে কোনো প্রার্থী হলফনামায় ভুল তথ্য দেওয়া থেকে বিরত থাকবেন। ভুল তথ্য দেওয়ার ক্ষেত্রে প্রার্থীদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না বলেই অসত্য তথ্য দেওয়া থেকে কাউকে বিরত রাখা যাচ্ছে না। জনগণের ম্যান্ডেট নিয়ে যাঁরা জাতীয় সংসদে আসবেন, তাঁদের ইমেজ অবশ্যই পরিষ্কার হতে হবে। তথ্য গোপনকারী, বিশেষ করে আয় ও সম্পদের তথ্য গোপনকারীদের সৎ প্রার্থী বলা যাবে না। জাতীয় সংসদে আগামী পাঁচ বছরের জন্য যাঁরা জনগণের প্রতিনিধি হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন, তাঁদের সততা যেন কোনোভাবেই প্রশ্নবিদ্ধ না হয় সেদিকে দৃষ্টি দেওয়া বাঞ্ছনীয়। এ জন্য নির্বাচন কমিশন আগে থেকেই বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করতে পারে। প্রয়োজনে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সাহায্য নিয়ে প্রার্থীর তথ্য সম্পর্কে ধারণা পাওয়া অসম্ভব নয়। বিশেষ করে আয়কর রিটার্ন থেকে আয় ও সম্পদের মোটামুটি একটা স্বচ্ছ হিসাব পাওয়া অসম্ভব নয়। অন্যদিকে দুর্নীতি সম্পর্কিত যেকোনো তথ্য দিতে পারে দুদক। আমরা আশা করব, হলফনামায় সত্য তথ্য দিয়েই প্রার্থীরা নির্বাচনের মাঠে আসবেন।