ইপেপার । আজশুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

হজের মাসের প্রথম দশকের ফজিলত

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ১০:০৪:৫১ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৭ জুলাই ২০২০
  • / ১৮৮ বার পড়া হয়েছে

ধর্ম প্রতিবেদন:
জিলকদ মাস ২৯ দিন হলে ২২ জুলাই থেকে শুরু হবে জিলহজ মাস। আর জিলকদ পূর্ণ হলে ২৩ জুলাই হবে জিলহজের প্রথম দিন। হাদিসে পাকে এ দিন থেকে কুরবানি পর্যন্ত প্রথম দশ দিনের অনেক ফজিলত বর্ণিত হয়েছে। সময়ের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ইবাদতের মর্যাদা ও ফজিলত অনেক বেশি। বিশেষ কিছু দিন এবং রাত এমন রয়েছে, যেসব দিন ও রাতের ইবাদত-বন্দেগিতে মহান আল্লাহ তাআলা অপরাধীর অপরাধ ক্ষমা করেন। তন্মধ্যে কদরের রাত, বরাতের রাত, দুই ঈদের রাত, রমজানের আমল, আশুরার আমল, জিলহজ মাসের প্রথম দশ দিনের আমল ইত্যাদি।
এ দিনগুলোর আমল-ইবাদত ইখলাসের সঙ্গে করলে আল্লাহ তাআলা বান্দার গোনাহসমূহ ক্ষমা করে দেন। এসব দিন ও রাতে বান্দার অশ্রুসিক্ত তাওবায় আল্লাহর রহমতের দরজা খুলে যায়। হাদিসে পাকে হজের মাসের প্রথম দশকের অনেক ফজিলত বর্ণিত হয়েছে। আর তাহলো-
– হজরত আবু হুরায়রা (রা.) বর্ণনা করেন রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, আল্লাহ তাআলার কাছে জিলহজ মাসের প্রথম ১০ দিনের ইবাদত অপেক্ষা অধিক পছন্দনীয় আর কোনো ইবাদত নেই। উহার প্রতিদিনের রোজা (৯ তারিখ পর্যন্ত) পূর্ণ এক বছরের রোজার সওয়াব। আর প্রতিটি রাতের ইবাদত লাইলাতুল কদরের ইবাদতের সমতুল্য।’ সুবহানাল্লাহ! (তিরমিজি)
– হজরত ইবনে আব্বাস (রা.) বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘জিলহজ মাসের দশ দিনের নেক আমল আল্লাহ তাআলার কাছে সবচেয়ে প্রিয়। সাহাবায়ে কেরাম জিজ্ঞাসা করলেন জেহাদও কি অধিক প্রিয় নয়? রাসুলুল্লাহ (সা.) বললেন, ‘না’, জেহাদও নয়। তবে যারা জেহাদের ময়দানে নিজের জান-মাল দিয়ে লড়ছে এখনো ফিরে আসেনি তাদের বিষয়টি ভিন্ন।’ (বুখারি) তবে জিলহজ মাসের ৯ তারিখ তথা ইয়াওমে আরাফা বা আরাফার দিনের ফজিলত ও মর্যাদার কথা ভিন্ন। এ দিনের কথা প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম স্বতন্ত্রভাবে উল্লেখ করেছেন। হাদিসে এসেছে- হজরত কাতাদা (রা.) সূত্রে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, আমি আল্লাহ পাকের দরবারে আশা রাখি যে, আরাফাতের দিনের রোজার দ্বারা তিনি এক বছরের আগের ও পরের সব গোনাহ ক্ষমা করে দেবেন।’ (মুসলিম)
রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন, ঈদের আগের রাতে আল্লাহর ইবাদতকারীর দিল (অন্তর মৃত হবে না, যেদিন সব দিল মরে যাবে। অর্থাৎ ঈদের রাত জাগরণকারী কেয়ামতের মহা ভয়ঙ্কর অবস্থা থেকে নিষ্কৃতি লাভ করবে, যখন মানুষ ভীষণ হতাশাগ্রস্ত হবে।’ (মিশকাত) আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে হজের মাসের প্রথম দশক রোজা পালনসহ যে কোনো ইবাদত-বন্দেগিতে অতিবাহিত করার তাওফিক দান করুন। রোজা ও ইবাদতের মাধ্যমে নিজেদের বিগত জীবনের গোনাহ থেমে মুক্তির তাওফিক দান করুন। আল্লাহর রহমতের চাদরে নিজেদের আবৃত করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

কৃতজ্ঞ মুমিনরা আল্লাহর প্রিয়
ধর্ম প্রতিবেদন:
সুখে-দুঃখে আল্লাহর প্রতি শোকর বা কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন মুমিনের বিশেষ বৈশিষ্ট্য। অত্যন্ত উঁচু ও মহৎ এই গুণ সবাই অর্জন করতে পারে না। খুব কম মানুষই আছে যারা আল্লাহর নিকট কৃতজ্ঞ বান্দা হিসেবে কবুল হয়। এ জন্যই পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা বলেছেন, ‘আমার বান্দাগণের মধ্যে অল্প লোকই কৃতজ্ঞতা আদায় করে।’ (সুরা সাবা, আয়াত : ১৩) কৃতজ্ঞ বান্দা আল্লাহর কাছে সবচেয়ে প্রিয়। আর শয়তান কোনোভাবেই চায় না মানুষ আল্লাহর প্রিয় হয়ে উঠুক। আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনে চেষ্টা সাধন করুক। তাই মানুষকে অকৃতজ্ঞ বানাতে সে সবসময় মরিয়া থাকে। মানুষ সৃষ্টির শুরুতেই এ মানুষকে নিন্দা করে শয়তান আল্লাহকে বলেছিল, ‘তাদের (মানুষের) অধিকাংশকেই তুমি কৃতজ্ঞ পাবে না।’ (সুরা আরাফ, আয়াত : ১৭) শয়তান কোনো খাঁটি মুমিনকে সহজে আল্লাহর অকৃতজ্ঞ করতে পারবে না। কারণ একজন পূর্ণাঙ্গ মুমিন মাত্রই এ বিশ্বাস দৃঢ়ভাবে অন্তরে লালন করে যে, আল্লাহর পক্ষ থেকে সব কিছুই হয়। ভালো-মন্দ, সচ্ছলতা-অসচ্ছলতা, সুখ-দুঃখ সব কিছুর নিয়ন্ত্রক মহান আল্লাহ। কৃতজ্ঞতা মুমিনের অন্যতম বৈশিষ্ট্য। মুমিনের অনন্য এ কল্যাণকর বৈশিষ্ট্যে রাসুলুল্লাহ (সা.) বিস্ময় প্রকাশ করে বলেছিলেন, ‘ঈমানদারের জীবনাচার কত আশ্চর্য ধরনের! তার সব কিছুই কল্যাণকর। এটা শুধু ঈমানদারের ক্ষেত্রেই হতে পারে। সচ্ছলতায় সে কৃতজ্ঞতা আদায় করে। সেটা তার জন্য কল্যাণকর। আর যদি তার ওপর কোনো বিপদ নেমে আসে, তাহলে সে ধৈর্যধারণ করে। এটাও তার জন্য কল্যাণকর।’ (মুসলিম, হাদিস : ২৯৯৯) আল্লাহর জিকির ও অন্যান্য ইবাদতের মতো কৃতজ্ঞতাও ইবাদতের অন্তর্ভুক্ত। এ কৃতজ্ঞতা প্রকাশের জন্য আল্লাহর সাহায্য কামনা করতে বলা হয়েছে। রাসুলুল্লাহ (সা.) একবার হজরত মুআজ (রা.)-কে বলেছেন, ‘হে মুআজ! আমি তোমাকে বলছি, কখনো নামাজের পরে এ দোয়া পড়তে ভুল কোরো না, হে আল্লাহ! আপনার স্মরণ, আপনার কৃতজ্ঞতা আদায় ও সুন্দর করে আপনার ইবাদত করতে আপনি আমাকে সাহায্য করুন।’ (আবু দাউদ, হাদিস : ১৫২৪) মহান আল্লাহ কৃতজ্ঞতা প্রকাশকারীর জন্য যেমনি তাঁর অনুগ্রহ বৃদ্ধি করে দেন, আবার যারা অকৃতজ্ঞ তাদের প্রতি তাঁর অনুগ্রহের পরিমাণ হ্রাস করার পাশাপাশি কঠিন শাস্তির হুঁশিয়ারিও উচ্চারণ করেছেন। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তোমরা কৃতজ্ঞ হলে তোমাদের (আমার নিয়ামত) আরো বাড়িয়ে দেব আর অকৃতজ্ঞ হলে (জেনে রেখো) আমার শাস্তি কঠোরতম।’ (সুরা ইবরাহিম, আয়াত : ৭) এ কারণেই প্রতিটি মুমিনের জন্য সর্বাবস্থায় আল্লাহর কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করা উচিত। আল্লাহর শুকরিয়া আদায়ের অন্যতম মাধ্যম হলো তাঁর আনুগত্য প্রকাশ করা। জীবনের প্রতিটি কাজ আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের পথে পরিচালিত করা। সুখে-দুঃখে তাঁর স্মরণ থেকে উদাসীন না হয়ে তাঁর সন্তুষ্টি অর্জনে বেশি বেশি নেক আমল করা। রাসুল (সা.) ছিলেন আল্লাহর সবচেয়ে বড় কৃতজ্ঞ বান্দা। তিনি প্রায় রাতেই দীর্ঘ সময় দাঁড়িয়ে নফল নামাজ আদায় করতেন। কখনো কখনো তাঁর পা মোবারক ফুলে যেত। হজরত আয়েশা (রা.) একদিন তাঁর কাছে জানতে চাইলেন, ‘আপনি এত কষ্ট করেন কেন? আল্লাহ কি আপনার আগের ও পরের সব গুনাহ ক্ষমা করে দেননি?’ রাসুলুল্লাহ (সা.) জবাবে বললেন, ‘আমি কি একজন কৃতজ্ঞ বান্দা হব না?’ (বুখারি, হাদিস : ৪৮৩৭) আল্লাহ আমাদের বেশি বেশি নেক আমলের মাধ্যমে তাঁর কৃতজ্ঞ বান্দা হওয়ার তাওফিক দান করুন।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

হজের মাসের প্রথম দশকের ফজিলত

আপলোড টাইম : ১০:০৪:৫১ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৭ জুলাই ২০২০

ধর্ম প্রতিবেদন:
জিলকদ মাস ২৯ দিন হলে ২২ জুলাই থেকে শুরু হবে জিলহজ মাস। আর জিলকদ পূর্ণ হলে ২৩ জুলাই হবে জিলহজের প্রথম দিন। হাদিসে পাকে এ দিন থেকে কুরবানি পর্যন্ত প্রথম দশ দিনের অনেক ফজিলত বর্ণিত হয়েছে। সময়ের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ইবাদতের মর্যাদা ও ফজিলত অনেক বেশি। বিশেষ কিছু দিন এবং রাত এমন রয়েছে, যেসব দিন ও রাতের ইবাদত-বন্দেগিতে মহান আল্লাহ তাআলা অপরাধীর অপরাধ ক্ষমা করেন। তন্মধ্যে কদরের রাত, বরাতের রাত, দুই ঈদের রাত, রমজানের আমল, আশুরার আমল, জিলহজ মাসের প্রথম দশ দিনের আমল ইত্যাদি।
এ দিনগুলোর আমল-ইবাদত ইখলাসের সঙ্গে করলে আল্লাহ তাআলা বান্দার গোনাহসমূহ ক্ষমা করে দেন। এসব দিন ও রাতে বান্দার অশ্রুসিক্ত তাওবায় আল্লাহর রহমতের দরজা খুলে যায়। হাদিসে পাকে হজের মাসের প্রথম দশকের অনেক ফজিলত বর্ণিত হয়েছে। আর তাহলো-
– হজরত আবু হুরায়রা (রা.) বর্ণনা করেন রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, আল্লাহ তাআলার কাছে জিলহজ মাসের প্রথম ১০ দিনের ইবাদত অপেক্ষা অধিক পছন্দনীয় আর কোনো ইবাদত নেই। উহার প্রতিদিনের রোজা (৯ তারিখ পর্যন্ত) পূর্ণ এক বছরের রোজার সওয়াব। আর প্রতিটি রাতের ইবাদত লাইলাতুল কদরের ইবাদতের সমতুল্য।’ সুবহানাল্লাহ! (তিরমিজি)
– হজরত ইবনে আব্বাস (রা.) বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘জিলহজ মাসের দশ দিনের নেক আমল আল্লাহ তাআলার কাছে সবচেয়ে প্রিয়। সাহাবায়ে কেরাম জিজ্ঞাসা করলেন জেহাদও কি অধিক প্রিয় নয়? রাসুলুল্লাহ (সা.) বললেন, ‘না’, জেহাদও নয়। তবে যারা জেহাদের ময়দানে নিজের জান-মাল দিয়ে লড়ছে এখনো ফিরে আসেনি তাদের বিষয়টি ভিন্ন।’ (বুখারি) তবে জিলহজ মাসের ৯ তারিখ তথা ইয়াওমে আরাফা বা আরাফার দিনের ফজিলত ও মর্যাদার কথা ভিন্ন। এ দিনের কথা প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম স্বতন্ত্রভাবে উল্লেখ করেছেন। হাদিসে এসেছে- হজরত কাতাদা (রা.) সূত্রে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, আমি আল্লাহ পাকের দরবারে আশা রাখি যে, আরাফাতের দিনের রোজার দ্বারা তিনি এক বছরের আগের ও পরের সব গোনাহ ক্ষমা করে দেবেন।’ (মুসলিম)
রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন, ঈদের আগের রাতে আল্লাহর ইবাদতকারীর দিল (অন্তর মৃত হবে না, যেদিন সব দিল মরে যাবে। অর্থাৎ ঈদের রাত জাগরণকারী কেয়ামতের মহা ভয়ঙ্কর অবস্থা থেকে নিষ্কৃতি লাভ করবে, যখন মানুষ ভীষণ হতাশাগ্রস্ত হবে।’ (মিশকাত) আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে হজের মাসের প্রথম দশক রোজা পালনসহ যে কোনো ইবাদত-বন্দেগিতে অতিবাহিত করার তাওফিক দান করুন। রোজা ও ইবাদতের মাধ্যমে নিজেদের বিগত জীবনের গোনাহ থেমে মুক্তির তাওফিক দান করুন। আল্লাহর রহমতের চাদরে নিজেদের আবৃত করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

কৃতজ্ঞ মুমিনরা আল্লাহর প্রিয়
ধর্ম প্রতিবেদন:
সুখে-দুঃখে আল্লাহর প্রতি শোকর বা কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন মুমিনের বিশেষ বৈশিষ্ট্য। অত্যন্ত উঁচু ও মহৎ এই গুণ সবাই অর্জন করতে পারে না। খুব কম মানুষই আছে যারা আল্লাহর নিকট কৃতজ্ঞ বান্দা হিসেবে কবুল হয়। এ জন্যই পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা বলেছেন, ‘আমার বান্দাগণের মধ্যে অল্প লোকই কৃতজ্ঞতা আদায় করে।’ (সুরা সাবা, আয়াত : ১৩) কৃতজ্ঞ বান্দা আল্লাহর কাছে সবচেয়ে প্রিয়। আর শয়তান কোনোভাবেই চায় না মানুষ আল্লাহর প্রিয় হয়ে উঠুক। আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনে চেষ্টা সাধন করুক। তাই মানুষকে অকৃতজ্ঞ বানাতে সে সবসময় মরিয়া থাকে। মানুষ সৃষ্টির শুরুতেই এ মানুষকে নিন্দা করে শয়তান আল্লাহকে বলেছিল, ‘তাদের (মানুষের) অধিকাংশকেই তুমি কৃতজ্ঞ পাবে না।’ (সুরা আরাফ, আয়াত : ১৭) শয়তান কোনো খাঁটি মুমিনকে সহজে আল্লাহর অকৃতজ্ঞ করতে পারবে না। কারণ একজন পূর্ণাঙ্গ মুমিন মাত্রই এ বিশ্বাস দৃঢ়ভাবে অন্তরে লালন করে যে, আল্লাহর পক্ষ থেকে সব কিছুই হয়। ভালো-মন্দ, সচ্ছলতা-অসচ্ছলতা, সুখ-দুঃখ সব কিছুর নিয়ন্ত্রক মহান আল্লাহ। কৃতজ্ঞতা মুমিনের অন্যতম বৈশিষ্ট্য। মুমিনের অনন্য এ কল্যাণকর বৈশিষ্ট্যে রাসুলুল্লাহ (সা.) বিস্ময় প্রকাশ করে বলেছিলেন, ‘ঈমানদারের জীবনাচার কত আশ্চর্য ধরনের! তার সব কিছুই কল্যাণকর। এটা শুধু ঈমানদারের ক্ষেত্রেই হতে পারে। সচ্ছলতায় সে কৃতজ্ঞতা আদায় করে। সেটা তার জন্য কল্যাণকর। আর যদি তার ওপর কোনো বিপদ নেমে আসে, তাহলে সে ধৈর্যধারণ করে। এটাও তার জন্য কল্যাণকর।’ (মুসলিম, হাদিস : ২৯৯৯) আল্লাহর জিকির ও অন্যান্য ইবাদতের মতো কৃতজ্ঞতাও ইবাদতের অন্তর্ভুক্ত। এ কৃতজ্ঞতা প্রকাশের জন্য আল্লাহর সাহায্য কামনা করতে বলা হয়েছে। রাসুলুল্লাহ (সা.) একবার হজরত মুআজ (রা.)-কে বলেছেন, ‘হে মুআজ! আমি তোমাকে বলছি, কখনো নামাজের পরে এ দোয়া পড়তে ভুল কোরো না, হে আল্লাহ! আপনার স্মরণ, আপনার কৃতজ্ঞতা আদায় ও সুন্দর করে আপনার ইবাদত করতে আপনি আমাকে সাহায্য করুন।’ (আবু দাউদ, হাদিস : ১৫২৪) মহান আল্লাহ কৃতজ্ঞতা প্রকাশকারীর জন্য যেমনি তাঁর অনুগ্রহ বৃদ্ধি করে দেন, আবার যারা অকৃতজ্ঞ তাদের প্রতি তাঁর অনুগ্রহের পরিমাণ হ্রাস করার পাশাপাশি কঠিন শাস্তির হুঁশিয়ারিও উচ্চারণ করেছেন। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তোমরা কৃতজ্ঞ হলে তোমাদের (আমার নিয়ামত) আরো বাড়িয়ে দেব আর অকৃতজ্ঞ হলে (জেনে রেখো) আমার শাস্তি কঠোরতম।’ (সুরা ইবরাহিম, আয়াত : ৭) এ কারণেই প্রতিটি মুমিনের জন্য সর্বাবস্থায় আল্লাহর কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করা উচিত। আল্লাহর শুকরিয়া আদায়ের অন্যতম মাধ্যম হলো তাঁর আনুগত্য প্রকাশ করা। জীবনের প্রতিটি কাজ আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের পথে পরিচালিত করা। সুখে-দুঃখে তাঁর স্মরণ থেকে উদাসীন না হয়ে তাঁর সন্তুষ্টি অর্জনে বেশি বেশি নেক আমল করা। রাসুল (সা.) ছিলেন আল্লাহর সবচেয়ে বড় কৃতজ্ঞ বান্দা। তিনি প্রায় রাতেই দীর্ঘ সময় দাঁড়িয়ে নফল নামাজ আদায় করতেন। কখনো কখনো তাঁর পা মোবারক ফুলে যেত। হজরত আয়েশা (রা.) একদিন তাঁর কাছে জানতে চাইলেন, ‘আপনি এত কষ্ট করেন কেন? আল্লাহ কি আপনার আগের ও পরের সব গুনাহ ক্ষমা করে দেননি?’ রাসুলুল্লাহ (সা.) জবাবে বললেন, ‘আমি কি একজন কৃতজ্ঞ বান্দা হব না?’ (বুখারি, হাদিস : ৪৮৩৭) আল্লাহ আমাদের বেশি বেশি নেক আমলের মাধ্যমে তাঁর কৃতজ্ঞ বান্দা হওয়ার তাওফিক দান করুন।