ইপেপার । আজবৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

স্বাস্থ্য বিভাগের কান্ডজ্ঞানহীন কাজে আতংকিত রোগী ও দর্শনার্থী

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ১০:০৯:০৩ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৫ নভেম্বর ২০২০
  • / ১৩৯ বার পড়া হয়েছে

করোনাভাইরাসে পজিটিভ গাংনী ইউএনও’র পিতা-মাতাকে সাধারণ ওয়ার্ডে চিকিৎসা
গাংনী অফিস:
উপজেলা নির্বাহী অফিসারের (ইউএনও) পিতা-মাতার করোনা ভাইরাস পজিটিভ হওয়ার পরেও সাধারণ রোগীদের সাথে চিকিৎসা দেওয়ার কারণে সমালোচনার মুখে পড়েছেন গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্মকর্তারা। করোনা পজিটিভ রোগীদের জন্য আইসোলেশনে চিকিৎসা না দিয়ে সাধারণ ওয়ার্ডে চিকিৎসা দেওয়ায় আতংকিত হয়ে পড়েছেন সাধারণ রোগী, দর্শনার্থী এবং চিকিৎসা সংশ্লিষ্টরা। এদিকে, উপজেলা নির্বাহী অফিসারের পিতা-মাতা করোনা পজিটিভ হওয়ায় এবং গত ৩১ অক্টোবর থেকে গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন থাকায় করোনা পজিটিভ রোগীদের তথ্য প্রকাশ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
জানা গেছে, গাংনীর ইউএনও আরএম সেলিম শাহনেওয়াজের পিতা আব্দুস সামাদ ও মাতা সুরাইয়া বেগমের শরীরে করোনা ভাইরাসের উপসর্গ দেখা দেওয়ায় গত অক্টোবর মাসের শেষের দিকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চতুর্থ তলায় সাধারণ রোগীদের জন্য নির্ধারিত কেবিনে ভর্তি করা হয়। ৩১ তারিখে দুজনের নমুনা সংগ্রহ করে করোনা পরীক্ষার জন্য পিসিআর ল্যাবে পাঠানো হয়। চলতি মাসের ১ নভেম্বরে আব্দুস সামাদ ও ৩ তারিখে সুরাইয়া বেগমের করোনা পজিটিভ রিপোর্ট আসে। তারপরও বিষয়টি অনেকটাই গোপন রেখে সাধারণ রোগীদের সাথে একটি কেবিনে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
এ ঘটনায় নাম প্রকাশ না করার শর্তে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের এক স্টাফ জানান, গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পুরাতন ভবনের দোতলায় করোনা আইসোলেশনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। কিন্তু করোনা পজিটিভ হওয়ার পরও সেখানে না নিয়ে চতুর্থ তলার পুরুষ ও মহিলা ওয়ার্ডের মাঝে নার্সদের কক্ষের সাথের একটি কেবিনে রাখা হয়েছে তাঁদের। ফলে সাধারণ রোগী, রোগীদের স্বজন এবং চিকিৎসা সেবায় নিয়োজিতরা পড়েছেন করোনা ভাইরাসের ঝুকির মধ্যে।
গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. রিয়াজুল আলম জানান, সম্পূর্ণ স্বাস্থ্যবিধি মেনে তাঁদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। আমরা কেবিনটাকে করোনা আইসোলেশন করেই চিকিৎসা দিয়ে যাচ্ছি। আমাদের চিকিৎসা সেবায় নিয়োজিতরাও পিপিই পরে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চিকিৎসা দিচ্ছেন। একজন উপজেলা নির্বাহী অফিসার এতটুকু সুবিধা পেতেই পারেন। স্বাস্থ্য ঝুঁকির প্রসঙ্গে তিনি বলেন, যে কারোর কারোনা ভাইরাস হতে পারে। সাধারণ রোগীদের আতংকিত হওয়ার কিছু নেই, যার করোনা হবে এমনিতেই হবে।
মেহেরপুর সির্ভিল সার্জন ডা. নাসির উদ্দীন বলেন, আমি শুনেছি এবং বিষয়টি উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তার সাথে আলাপ করেছি। তিনি নিশ্চিত করেছেন, স্বাস্থ্যবিধি মেনে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। তারপরেও আমি গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তাকে বলেছি বিষয়টি নিয়ে সমালোচনার সৃষ্টি হলে সাধারণ ওয়ার্ড থেকে করোনা ওয়ার্ডে রোগীদের সরিয়ে নেওয়ার জন্য।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

স্বাস্থ্য বিভাগের কান্ডজ্ঞানহীন কাজে আতংকিত রোগী ও দর্শনার্থী

আপলোড টাইম : ১০:০৯:০৩ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৫ নভেম্বর ২০২০

করোনাভাইরাসে পজিটিভ গাংনী ইউএনও’র পিতা-মাতাকে সাধারণ ওয়ার্ডে চিকিৎসা
গাংনী অফিস:
উপজেলা নির্বাহী অফিসারের (ইউএনও) পিতা-মাতার করোনা ভাইরাস পজিটিভ হওয়ার পরেও সাধারণ রোগীদের সাথে চিকিৎসা দেওয়ার কারণে সমালোচনার মুখে পড়েছেন গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্মকর্তারা। করোনা পজিটিভ রোগীদের জন্য আইসোলেশনে চিকিৎসা না দিয়ে সাধারণ ওয়ার্ডে চিকিৎসা দেওয়ায় আতংকিত হয়ে পড়েছেন সাধারণ রোগী, দর্শনার্থী এবং চিকিৎসা সংশ্লিষ্টরা। এদিকে, উপজেলা নির্বাহী অফিসারের পিতা-মাতা করোনা পজিটিভ হওয়ায় এবং গত ৩১ অক্টোবর থেকে গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন থাকায় করোনা পজিটিভ রোগীদের তথ্য প্রকাশ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
জানা গেছে, গাংনীর ইউএনও আরএম সেলিম শাহনেওয়াজের পিতা আব্দুস সামাদ ও মাতা সুরাইয়া বেগমের শরীরে করোনা ভাইরাসের উপসর্গ দেখা দেওয়ায় গত অক্টোবর মাসের শেষের দিকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চতুর্থ তলায় সাধারণ রোগীদের জন্য নির্ধারিত কেবিনে ভর্তি করা হয়। ৩১ তারিখে দুজনের নমুনা সংগ্রহ করে করোনা পরীক্ষার জন্য পিসিআর ল্যাবে পাঠানো হয়। চলতি মাসের ১ নভেম্বরে আব্দুস সামাদ ও ৩ তারিখে সুরাইয়া বেগমের করোনা পজিটিভ রিপোর্ট আসে। তারপরও বিষয়টি অনেকটাই গোপন রেখে সাধারণ রোগীদের সাথে একটি কেবিনে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
এ ঘটনায় নাম প্রকাশ না করার শর্তে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের এক স্টাফ জানান, গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পুরাতন ভবনের দোতলায় করোনা আইসোলেশনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। কিন্তু করোনা পজিটিভ হওয়ার পরও সেখানে না নিয়ে চতুর্থ তলার পুরুষ ও মহিলা ওয়ার্ডের মাঝে নার্সদের কক্ষের সাথের একটি কেবিনে রাখা হয়েছে তাঁদের। ফলে সাধারণ রোগী, রোগীদের স্বজন এবং চিকিৎসা সেবায় নিয়োজিতরা পড়েছেন করোনা ভাইরাসের ঝুকির মধ্যে।
গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. রিয়াজুল আলম জানান, সম্পূর্ণ স্বাস্থ্যবিধি মেনে তাঁদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। আমরা কেবিনটাকে করোনা আইসোলেশন করেই চিকিৎসা দিয়ে যাচ্ছি। আমাদের চিকিৎসা সেবায় নিয়োজিতরাও পিপিই পরে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চিকিৎসা দিচ্ছেন। একজন উপজেলা নির্বাহী অফিসার এতটুকু সুবিধা পেতেই পারেন। স্বাস্থ্য ঝুঁকির প্রসঙ্গে তিনি বলেন, যে কারোর কারোনা ভাইরাস হতে পারে। সাধারণ রোগীদের আতংকিত হওয়ার কিছু নেই, যার করোনা হবে এমনিতেই হবে।
মেহেরপুর সির্ভিল সার্জন ডা. নাসির উদ্দীন বলেন, আমি শুনেছি এবং বিষয়টি উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তার সাথে আলাপ করেছি। তিনি নিশ্চিত করেছেন, স্বাস্থ্যবিধি মেনে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। তারপরেও আমি গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তাকে বলেছি বিষয়টি নিয়ে সমালোচনার সৃষ্টি হলে সাধারণ ওয়ার্ড থেকে করোনা ওয়ার্ডে রোগীদের সরিয়ে নেওয়ার জন্য।