ইপেপার । আজবৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

স্বর্ণ-নীতিমালার যুগোপযোগী খসড়া

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৫:৪৯:১৬ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৮ মে ২০১৮
  • / ২৭২ বার পড়া হয়েছে

দেশের স্বর্ণ-ব্যবসা ও স্বর্ণ-বাজারে দীর্ঘদিন ধরে যে নৈরাজ্য চলছিল, তার অবসান হতে চলেছে। এতদিন দেশে বৈধ উপায়ে স্বর্ণের আমদানি বা ব্যবসা হয়নি। বস্তুত স্বর্ণের সমগ্র ব্যবসাটাই পরিচালিত হতো চোরাচালানের মাধ্যমে। এক সুপরিচিত স্বর্ণ ব্যবসায়ীর পুত্রের যৌন কেলেঙ্কারির ঘটনা ফাঁস হওয়ার পর স্বর্ণ-ব্যবসার গোপন রহস্য উদ্ঘাটনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তৎপরতা শুরু হলে প্রচলিত স্বর্ণ-ব্যবসার বৈধতা নিয়ে ব্যাপকভাবে প্রশ্ন ওঠে। তখন থেকেই দেশে স্বর্ণ-নীতিমালা প্রণয়নের সোচ্চার দাবি ওঠে। এনিয়ে ধারাবাহিক কিছু প্রতিবেদন ছাপে দেশের পত্রিকাগুলো। শেষ পর্যন্ত স্বর্ণ-নীতিমালা ২০১৮-এর খসড়া অর্থনৈতিকবিষয়ক মন্ত্রিসভা কমিটি অনুমোদন দিয়েছে। চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য এটি পাঠানো হবে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের বৈঠকে, সেখানে অনুমোদিত হলেই নীতিমালাটি কার্যকর হবে। আশা করা যেতেই পারে স্বর্ণ-নীতিমালাটি কার্যকর হলে দেশে স্বর্ণ-ব্যবসায় শৃঙ্খলা ফিরে আসবে। প্রস্তাবিত নীতিমালায় যেসব বিষয় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, সেগুলো ইতিবাচক। সবচেয়ে বড় ব্যাপার, নীতিমালাটির খসড়া চূড়ান্ত করার আগে সংশ্লিষ্ট স্টেকহোল্ডারদের মতামত নেয়া হয়েছে বলে তা অনুমোদনের আগে কোনো বিতর্ক তৈরি হয়নি। নীতিমালাটি কার্যকর হওয়ার ছয় মাসের মধ্যে স্বর্ণশিল্পের ব্যবসা-প্রতিষ্ঠানকে সরকারি কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে বাধ্যতামূলক মূসক নিবন্ধন সনদ নেয়ার যে বিধান রাখা হয়েছে, তা নিঃসন্দেহে এই ব্যবসায় স্বচ্ছতা নিশ্চিতে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে। এছাড়া স্বর্ণবার বিক্রয়ের আগে আগের বছরের মোট বিক্রয়ের পরিমাণ, সরকারি রাজস্ব পরিশোধ, স্বর্ণের প্রকৃত মজুদ ও রেকর্ডপত্র এবং হিসাব বিবরণীর স্বচ্ছতা সংশ্লিষ্ট ব্যাংকগুলো যাচাই করবে মর্মে যে ধারাগুলো রয়েছে খসড়া নীতিমালায়, সেগুলোও স্বর্ণ-বাজার সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করার জন্য জরুরি। স্বর্ণ-নীতিমালায় ভোক্তার স্বার্থরক্ষার ওপরও গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। এককথায় বলা যায়, ব্যবসায়ী ও ভোক্তা উভয় পক্ষের জন্য নীতিমালাটি উপযোগী। রাষ্ট্রও আর বঞ্চিত থাকবে না রাজস্ব আদায় থেকে। স্বর্ণ-নীতিমালার খসড়াটি অনুমোদনের মধ্য দিয়ে স্বর্ণসংক্রান্ত দীর্ঘদিন থেকে উচ্চারিত নানা প্রশ্নের মীমাংসা হয়েছে বলা যায়। এরপরের প্রশ্ন, প্রায়োগিক ক্ষেত্রে নীতিমালাটি কতটা অনুসরণ করা হবে? এই নীতিমালার সুষ্ঠু কার্যকারিতার সঙ্গে দেশের অর্থনীতি ও ভোক্তার স্বার্থ অনেকটাই সম্পর্কিত বলে এর যথাযথ প্রয়োগ দরকার।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

স্বর্ণ-নীতিমালার যুগোপযোগী খসড়া

আপলোড টাইম : ০৫:৪৯:১৬ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৮ মে ২০১৮

দেশের স্বর্ণ-ব্যবসা ও স্বর্ণ-বাজারে দীর্ঘদিন ধরে যে নৈরাজ্য চলছিল, তার অবসান হতে চলেছে। এতদিন দেশে বৈধ উপায়ে স্বর্ণের আমদানি বা ব্যবসা হয়নি। বস্তুত স্বর্ণের সমগ্র ব্যবসাটাই পরিচালিত হতো চোরাচালানের মাধ্যমে। এক সুপরিচিত স্বর্ণ ব্যবসায়ীর পুত্রের যৌন কেলেঙ্কারির ঘটনা ফাঁস হওয়ার পর স্বর্ণ-ব্যবসার গোপন রহস্য উদ্ঘাটনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তৎপরতা শুরু হলে প্রচলিত স্বর্ণ-ব্যবসার বৈধতা নিয়ে ব্যাপকভাবে প্রশ্ন ওঠে। তখন থেকেই দেশে স্বর্ণ-নীতিমালা প্রণয়নের সোচ্চার দাবি ওঠে। এনিয়ে ধারাবাহিক কিছু প্রতিবেদন ছাপে দেশের পত্রিকাগুলো। শেষ পর্যন্ত স্বর্ণ-নীতিমালা ২০১৮-এর খসড়া অর্থনৈতিকবিষয়ক মন্ত্রিসভা কমিটি অনুমোদন দিয়েছে। চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য এটি পাঠানো হবে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের বৈঠকে, সেখানে অনুমোদিত হলেই নীতিমালাটি কার্যকর হবে। আশা করা যেতেই পারে স্বর্ণ-নীতিমালাটি কার্যকর হলে দেশে স্বর্ণ-ব্যবসায় শৃঙ্খলা ফিরে আসবে। প্রস্তাবিত নীতিমালায় যেসব বিষয় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, সেগুলো ইতিবাচক। সবচেয়ে বড় ব্যাপার, নীতিমালাটির খসড়া চূড়ান্ত করার আগে সংশ্লিষ্ট স্টেকহোল্ডারদের মতামত নেয়া হয়েছে বলে তা অনুমোদনের আগে কোনো বিতর্ক তৈরি হয়নি। নীতিমালাটি কার্যকর হওয়ার ছয় মাসের মধ্যে স্বর্ণশিল্পের ব্যবসা-প্রতিষ্ঠানকে সরকারি কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে বাধ্যতামূলক মূসক নিবন্ধন সনদ নেয়ার যে বিধান রাখা হয়েছে, তা নিঃসন্দেহে এই ব্যবসায় স্বচ্ছতা নিশ্চিতে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে। এছাড়া স্বর্ণবার বিক্রয়ের আগে আগের বছরের মোট বিক্রয়ের পরিমাণ, সরকারি রাজস্ব পরিশোধ, স্বর্ণের প্রকৃত মজুদ ও রেকর্ডপত্র এবং হিসাব বিবরণীর স্বচ্ছতা সংশ্লিষ্ট ব্যাংকগুলো যাচাই করবে মর্মে যে ধারাগুলো রয়েছে খসড়া নীতিমালায়, সেগুলোও স্বর্ণ-বাজার সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করার জন্য জরুরি। স্বর্ণ-নীতিমালায় ভোক্তার স্বার্থরক্ষার ওপরও গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। এককথায় বলা যায়, ব্যবসায়ী ও ভোক্তা উভয় পক্ষের জন্য নীতিমালাটি উপযোগী। রাষ্ট্রও আর বঞ্চিত থাকবে না রাজস্ব আদায় থেকে। স্বর্ণ-নীতিমালার খসড়াটি অনুমোদনের মধ্য দিয়ে স্বর্ণসংক্রান্ত দীর্ঘদিন থেকে উচ্চারিত নানা প্রশ্নের মীমাংসা হয়েছে বলা যায়। এরপরের প্রশ্ন, প্রায়োগিক ক্ষেত্রে নীতিমালাটি কতটা অনুসরণ করা হবে? এই নীতিমালার সুষ্ঠু কার্যকারিতার সঙ্গে দেশের অর্থনীতি ও ভোক্তার স্বার্থ অনেকটাই সম্পর্কিত বলে এর যথাযথ প্রয়োগ দরকার।