ইপেপার । আজশুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

স্ত্রী-সন্তান ফেলে গেছেন, প্রতিবন্ধীর দায়িত্ব নিল পুলিশ

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৯:৫০:৫০ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৯ এপ্রিল ২০২০
  • / ১৬০ বার পড়া হয়েছে

ঝিনাইদহ অফিস:
ভাড়া বাসায় ফেলে রেখে চলে গিয়েছিলেন স্ত্রী ও সন্তান। দীর্ঘ ২৫ দিন পর প্রতিবেশীদের সহযোগিতায় গ্রামে ফিরলেও বাড়িতে উঠতে দেননি চাচাত ভাইয়েরা। তাড়িয়ে দিলেন চেয়ারম্যান মামাও। অবশেষে ৬৫ বছর বয়সী প্রতিবন্ধী আশরাফুজ্জামানের দায়ভার গ্রহণ করছে ঝিনাইদহ জেলা পুলিশ। ঝিনাইদহ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান জানান, সাভারে একটি বাসায় স্ত্রী ও সন্তানকে দিয়ে দীর্ঘ ২০ বছর বসবাস করে আসছিলেন ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার উমেদপুর গ্রামে ব্যবসায়ী আশরাফুজ্জামান। দুই বছর আগে বাথরুমে পড়ে গিয়ে চলার শক্তি হারান আশরাফুল। হুইলচেয়ারে কোনোমতো চলাফেরা করেন তিনি। আয়-রোজগার কমে যাওয়া আর করোনা আতঙ্কে স্ত্রী নাসিমা জামান ও ছেলে মনিরুজ্জামান তাঁকে ওই ভাড়া বাসায় ফেলে রেখে চলে যান। সেখানেই গত ২৫ দিন একা থাকার পর প্রতিবেশীদের সহযোগিতায় একটি পিকআপ ভাড়া করে ঝিনাইদহে আসেন আশরাফুজ্জামান। গ্রামের বাড়ি শৈলকুপার উমেদপুরে গেলে বাড়িতে উঠতে দেননি চাচাত ভাইয়েরা ও তাঁদের ছেলেরা। এমনকি গাড়ি থেকে নামতেও দেননি। উপায় না পেয়ে তিনি ঝিনাইদহ সদর উপজেলার প্রভাবশালী এক ইউপি চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতার বাড়িতে গেলেও সেখান থেকে তাড়িয়ে দেন ওই জনপ্রতিনিধি। উপায় না পেয়ে পিকআপ চালকেরা বুধবার (১৫ এপ্রিল) রাতে ঝিনাইদহ-মাগুরা মহাসড়কের গোয়ালপাড়া বাজার এলাকার রাস্তার পাশে আশরাফুলকে ফেলে যান। সারা রাত সেখানেই কাটে তাঁর। সকালে খবর পেয়ে ঝিনাইদহ সদর থানা পুলিশ তাঁকে উদ্ধার করে প্রথমে থানায় নিয়ে আসে। পুলিশের পক্ষ থেকে সদরের ওই জনপ্রতিনিধি ও শৈলকুপায় আত্মীয়দের সঙ্গে যোগাযোগ করলে কেউ তাঁকে গ্রহণ করতে চাননি। পরে পুলিশ সুপার মো. হাসানুুজ্জামান তাঁর চিকিৎসার দায়ভার গ্রহণ করেন। থানা থেকে তাঁকে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগে কর্মরত চিকিৎসক ডা. মিথিলা পারভীন বলেন, আশরাফুজ্জামানের করোনার কোনো উপসর্গ নেই। তিনি শারিরীকভাবে প্রতিবন্ধী। আশরাফুজ্জামান যেহেতু ঢাকা থেকে এসেছেন, এ জন্য তাঁকে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে। পুলিশ সুপার মো. হাসানুজ্জামান বলেন, ‘কেউ যখন আশরাফুজ্জামানকে গ্রহণ করেনি। জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে তাঁর সব দায়ভার গ্রহণ করেছি। যতদিন তাঁর অভিভাবক না পাওয়া যায়, ততদিন আমরা তাঁর পাশে থাকব।’

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

স্ত্রী-সন্তান ফেলে গেছেন, প্রতিবন্ধীর দায়িত্ব নিল পুলিশ

আপলোড টাইম : ০৯:৫০:৫০ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৯ এপ্রিল ২০২০

ঝিনাইদহ অফিস:
ভাড়া বাসায় ফেলে রেখে চলে গিয়েছিলেন স্ত্রী ও সন্তান। দীর্ঘ ২৫ দিন পর প্রতিবেশীদের সহযোগিতায় গ্রামে ফিরলেও বাড়িতে উঠতে দেননি চাচাত ভাইয়েরা। তাড়িয়ে দিলেন চেয়ারম্যান মামাও। অবশেষে ৬৫ বছর বয়সী প্রতিবন্ধী আশরাফুজ্জামানের দায়ভার গ্রহণ করছে ঝিনাইদহ জেলা পুলিশ। ঝিনাইদহ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান জানান, সাভারে একটি বাসায় স্ত্রী ও সন্তানকে দিয়ে দীর্ঘ ২০ বছর বসবাস করে আসছিলেন ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার উমেদপুর গ্রামে ব্যবসায়ী আশরাফুজ্জামান। দুই বছর আগে বাথরুমে পড়ে গিয়ে চলার শক্তি হারান আশরাফুল। হুইলচেয়ারে কোনোমতো চলাফেরা করেন তিনি। আয়-রোজগার কমে যাওয়া আর করোনা আতঙ্কে স্ত্রী নাসিমা জামান ও ছেলে মনিরুজ্জামান তাঁকে ওই ভাড়া বাসায় ফেলে রেখে চলে যান। সেখানেই গত ২৫ দিন একা থাকার পর প্রতিবেশীদের সহযোগিতায় একটি পিকআপ ভাড়া করে ঝিনাইদহে আসেন আশরাফুজ্জামান। গ্রামের বাড়ি শৈলকুপার উমেদপুরে গেলে বাড়িতে উঠতে দেননি চাচাত ভাইয়েরা ও তাঁদের ছেলেরা। এমনকি গাড়ি থেকে নামতেও দেননি। উপায় না পেয়ে তিনি ঝিনাইদহ সদর উপজেলার প্রভাবশালী এক ইউপি চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতার বাড়িতে গেলেও সেখান থেকে তাড়িয়ে দেন ওই জনপ্রতিনিধি। উপায় না পেয়ে পিকআপ চালকেরা বুধবার (১৫ এপ্রিল) রাতে ঝিনাইদহ-মাগুরা মহাসড়কের গোয়ালপাড়া বাজার এলাকার রাস্তার পাশে আশরাফুলকে ফেলে যান। সারা রাত সেখানেই কাটে তাঁর। সকালে খবর পেয়ে ঝিনাইদহ সদর থানা পুলিশ তাঁকে উদ্ধার করে প্রথমে থানায় নিয়ে আসে। পুলিশের পক্ষ থেকে সদরের ওই জনপ্রতিনিধি ও শৈলকুপায় আত্মীয়দের সঙ্গে যোগাযোগ করলে কেউ তাঁকে গ্রহণ করতে চাননি। পরে পুলিশ সুপার মো. হাসানুুজ্জামান তাঁর চিকিৎসার দায়ভার গ্রহণ করেন। থানা থেকে তাঁকে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগে কর্মরত চিকিৎসক ডা. মিথিলা পারভীন বলেন, আশরাফুজ্জামানের করোনার কোনো উপসর্গ নেই। তিনি শারিরীকভাবে প্রতিবন্ধী। আশরাফুজ্জামান যেহেতু ঢাকা থেকে এসেছেন, এ জন্য তাঁকে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে। পুলিশ সুপার মো. হাসানুজ্জামান বলেন, ‘কেউ যখন আশরাফুজ্জামানকে গ্রহণ করেনি। জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে তাঁর সব দায়ভার গ্রহণ করেছি। যতদিন তাঁর অভিভাবক না পাওয়া যায়, ততদিন আমরা তাঁর পাশে থাকব।’