ইপেপার । আজশুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

সোনার মানুষ তৈরি করতে হলে শিক্ষিত করে গড়ে তুলতে হবে

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ১০:০৮:৪৪ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৭ জানুয়ারী ২০২১
  • / ১৬৫ বার পড়া হয়েছে

চুয়াডাঙ্গায় আউট অব স্কুল চিলড্রেন এডুকেশন অবহিতকরণ কর্মশালায় ডিসি নজরুল ইসলাম
নিজস্ব প্রতিবেদক:
চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক নজরুল ইসলাম সরকার বলেছেন, যে ছেলে-মেয়েগুলো শিক্ষাক্ষেত্রে ঝরে পড়েছে। তাঁদেরকে উদ্ধার করে মূলধারায় আবার ফিরিয়ে নিয়ে আসতে হবে। ২০৪১-এর ভিশন দুটি। একটি হলো বাংলাদেশকে উন্নত বাংলাদেশে পরিণত করা। আরেকটি হলো জাতির পিতা সারা জীবন যে স্বপ্ন দেখেছেন, সোনার বাংলা বিনির্মাণ, সেই সোনার বাংলা গড়া। সোনার বাংলা গড়তে হলে দারিদ্র দূর করতে হবে। দারিদ্র দূর করার জন্য সুন্দর একটা পরিকল্পনাও করা হয়েছে। কবে কত শতাংশ দারিদ্র দূর করা হবে, এই বিষয়গুলির সবই পরিকল্পনা করা হয়েছে। এই সোনার বাংলা নির্মাণ করতে হলে সোনার মানুষ তৈরি করতে হবে। আর সোনার মানুষ তৈরি করতে হলে, শিক্ষিত করে গড়ে তুলতে হবে।’
গতকাল বুধবার চুয়াডাঙ্গায় আউট অব স্কুল চিলড্রেন এডুকেশন প্রোগ্রাম বিষয়ক অবহিতকরণ কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় জেলা প্রশাসক নজরুল ইসলাম সরকার আরও বলেন, ‘১৮.৬ শতাংশ শিশু প্রাইমারি স্কুল থেকে ঝরে পড়ে। এটা কিন্তু সংখ্যায় অনেক। ঝরে পড়া মানে সে আর হাইস্কুলে যাচ্ছে না। তার আর শিক্ষা নেওয়া হচ্ছে না। একজন ভালো নাগরিক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার সুযোগ থেকে সে হারিয়ে যাচ্ছে। ঠিক একইভাবে আমরা বহুদিন ধরে চেষ্টা করছি, একশ শতাংশ শিশুকে প্রাইমারি স্কুলে আনার জন্য। তারপরও ২ শতাংশ শিশু প্রথম থেকেই নানা কারণে বাইরে থেকে যাচ্ছে। তার মানে প্রায় ২০ শতাংশ শিশু শিক্ষাক্ষেত্রের মূল ধারায় থাকছে না। আজকের এই কর্মশালার মূল লক্ষ্যই হচ্ছে তাদেরকে মূল ধারায় ফিরিয়ে আনা।’
জেলা প্রশাসক নজরুল ইসলাম সরকার সকলের সহযোগিতা পেলে এই ছেলে-মেয়েগুলোকে পুনরায় ফিরিয়ে আনা সহজ হবে এমন মন্তব্য করে বলেন, যে জরিপটা হবে, সেটা যেন একশ শতাংশ স্বচ্ছ হয়। কোনো রকম ৩০টা নাম যোগাড় করে একটা স্কুল স্থাপন করে দিলাম, এরকম যেন না হয়। এর আওতায় থাকা প্রকৃত শিশুকে খুঁজে খুঁজে বের করতে হবে। একটা দোকানে ১০ বা ১১ বছরের একটা ছেলে কাজ করছে। কিন্তু তার তো কাজ করার কথা না। তার পড়াশোনা করার কথা। এরকম শিশুকে খুঁজে খুঁজে বের করতে হবে। আবার প্রাইমারি স্কুলে পড়ছে, এরকম শিশুর নাম যেন এর মধ্যে চলে না আসে। আন্তরিকতার সাথে কাজ করতে হবে।
জেলা উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরোর আয়োজনে, জেলা প্রশাসন এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের সহযোগিতায় দিনব্যাপী এই কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়। কর্মশালার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মনিরা পারভীনের সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য দেন চুয়াডাঙ্গার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) আবু তারেক ও অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট সাজিয়া আফরিন। স্বাগত বক্তব্য দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের সহযোগী অধ্যাপক সৈয়দা আতিকুন নাহার। চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সুরাইয়া মমতাজের উপস্থাপনায় শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন ওয়েভ ফাউন্ডেশনের উপ-নির্বাহী পরিচালক আনোয়ার হোসেন। প্রকল্প বিষয়ক পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশন করেন জেলা উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরোর সহকারী পরিচালক সুরুজ্জামান। নির্ধারিত আলোচক হিসেবে বক্তব্য দেন জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান।
উল্লেখ্য, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরোর তত্ত্বাবধানে আউট অব স্কুল চিলড্রেন এডুকেশন প্রোগ্রামের আওতায় চুয়াডাঙ্গা জেলাসহ সারা দেশের ৬৪টি জেলার ৩৪৫টি উপজেলায় উপানুষ্ঠানিক প্রাথমিক শিক্ষা কার্যক্রমের মাধ্যমে বিদ্যালয় বহির্ভূত ঝরে পড়া ও ভর্তি না হওয়া ৮ থেকে ১৪ বছরের ১০ লক্ষ শিশুকে প্রাথমিক শিক্ষার আওতায় আনা হবে। তারই ধারবাহিকতায় চুয়াডাঙ্গা জেলার সদর ও আলমডাঙ্গা উপজেলায় এ প্রকল্প চলবে। প্রতিটি উপজেলায় ৭০টি বিদ্যালয়ের মাধ্যমে ২ হাজার ১ শত শিশুকে শিক্ষা দেওয়া হবে। পার্টনার অর্গানাইজেশন হিসেবে কাজ করবে ওয়েভ ফাউন্ডেশন।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

সোনার মানুষ তৈরি করতে হলে শিক্ষিত করে গড়ে তুলতে হবে

আপলোড টাইম : ১০:০৮:৪৪ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৭ জানুয়ারী ২০২১

চুয়াডাঙ্গায় আউট অব স্কুল চিলড্রেন এডুকেশন অবহিতকরণ কর্মশালায় ডিসি নজরুল ইসলাম
নিজস্ব প্রতিবেদক:
চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক নজরুল ইসলাম সরকার বলেছেন, যে ছেলে-মেয়েগুলো শিক্ষাক্ষেত্রে ঝরে পড়েছে। তাঁদেরকে উদ্ধার করে মূলধারায় আবার ফিরিয়ে নিয়ে আসতে হবে। ২০৪১-এর ভিশন দুটি। একটি হলো বাংলাদেশকে উন্নত বাংলাদেশে পরিণত করা। আরেকটি হলো জাতির পিতা সারা জীবন যে স্বপ্ন দেখেছেন, সোনার বাংলা বিনির্মাণ, সেই সোনার বাংলা গড়া। সোনার বাংলা গড়তে হলে দারিদ্র দূর করতে হবে। দারিদ্র দূর করার জন্য সুন্দর একটা পরিকল্পনাও করা হয়েছে। কবে কত শতাংশ দারিদ্র দূর করা হবে, এই বিষয়গুলির সবই পরিকল্পনা করা হয়েছে। এই সোনার বাংলা নির্মাণ করতে হলে সোনার মানুষ তৈরি করতে হবে। আর সোনার মানুষ তৈরি করতে হলে, শিক্ষিত করে গড়ে তুলতে হবে।’
গতকাল বুধবার চুয়াডাঙ্গায় আউট অব স্কুল চিলড্রেন এডুকেশন প্রোগ্রাম বিষয়ক অবহিতকরণ কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় জেলা প্রশাসক নজরুল ইসলাম সরকার আরও বলেন, ‘১৮.৬ শতাংশ শিশু প্রাইমারি স্কুল থেকে ঝরে পড়ে। এটা কিন্তু সংখ্যায় অনেক। ঝরে পড়া মানে সে আর হাইস্কুলে যাচ্ছে না। তার আর শিক্ষা নেওয়া হচ্ছে না। একজন ভালো নাগরিক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার সুযোগ থেকে সে হারিয়ে যাচ্ছে। ঠিক একইভাবে আমরা বহুদিন ধরে চেষ্টা করছি, একশ শতাংশ শিশুকে প্রাইমারি স্কুলে আনার জন্য। তারপরও ২ শতাংশ শিশু প্রথম থেকেই নানা কারণে বাইরে থেকে যাচ্ছে। তার মানে প্রায় ২০ শতাংশ শিশু শিক্ষাক্ষেত্রের মূল ধারায় থাকছে না। আজকের এই কর্মশালার মূল লক্ষ্যই হচ্ছে তাদেরকে মূল ধারায় ফিরিয়ে আনা।’
জেলা প্রশাসক নজরুল ইসলাম সরকার সকলের সহযোগিতা পেলে এই ছেলে-মেয়েগুলোকে পুনরায় ফিরিয়ে আনা সহজ হবে এমন মন্তব্য করে বলেন, যে জরিপটা হবে, সেটা যেন একশ শতাংশ স্বচ্ছ হয়। কোনো রকম ৩০টা নাম যোগাড় করে একটা স্কুল স্থাপন করে দিলাম, এরকম যেন না হয়। এর আওতায় থাকা প্রকৃত শিশুকে খুঁজে খুঁজে বের করতে হবে। একটা দোকানে ১০ বা ১১ বছরের একটা ছেলে কাজ করছে। কিন্তু তার তো কাজ করার কথা না। তার পড়াশোনা করার কথা। এরকম শিশুকে খুঁজে খুঁজে বের করতে হবে। আবার প্রাইমারি স্কুলে পড়ছে, এরকম শিশুর নাম যেন এর মধ্যে চলে না আসে। আন্তরিকতার সাথে কাজ করতে হবে।
জেলা উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরোর আয়োজনে, জেলা প্রশাসন এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের সহযোগিতায় দিনব্যাপী এই কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়। কর্মশালার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মনিরা পারভীনের সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য দেন চুয়াডাঙ্গার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) আবু তারেক ও অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট সাজিয়া আফরিন। স্বাগত বক্তব্য দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের সহযোগী অধ্যাপক সৈয়দা আতিকুন নাহার। চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সুরাইয়া মমতাজের উপস্থাপনায় শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন ওয়েভ ফাউন্ডেশনের উপ-নির্বাহী পরিচালক আনোয়ার হোসেন। প্রকল্প বিষয়ক পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশন করেন জেলা উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরোর সহকারী পরিচালক সুরুজ্জামান। নির্ধারিত আলোচক হিসেবে বক্তব্য দেন জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান।
উল্লেখ্য, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরোর তত্ত্বাবধানে আউট অব স্কুল চিলড্রেন এডুকেশন প্রোগ্রামের আওতায় চুয়াডাঙ্গা জেলাসহ সারা দেশের ৬৪টি জেলার ৩৪৫টি উপজেলায় উপানুষ্ঠানিক প্রাথমিক শিক্ষা কার্যক্রমের মাধ্যমে বিদ্যালয় বহির্ভূত ঝরে পড়া ও ভর্তি না হওয়া ৮ থেকে ১৪ বছরের ১০ লক্ষ শিশুকে প্রাথমিক শিক্ষার আওতায় আনা হবে। তারই ধারবাহিকতায় চুয়াডাঙ্গা জেলার সদর ও আলমডাঙ্গা উপজেলায় এ প্রকল্প চলবে। প্রতিটি উপজেলায় ৭০টি বিদ্যালয়ের মাধ্যমে ২ হাজার ১ শত শিশুকে শিক্ষা দেওয়া হবে। পার্টনার অর্গানাইজেশন হিসেবে কাজ করবে ওয়েভ ফাউন্ডেশন।