সোচ্চার হচ্ছে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট
- আপলোড টাইম : ১১:৪৭:২৭ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৬ ফেব্রুয়ারী ২০১৯
- / ২৬০ বার পড়া হয়েছে
সমীকরণ প্রতিবেদন: পুনর্নিবাচন কিংবা মধ্যবর্তী নির্বাচনের দাবিতে ধীরে ধীরে সোচ্চার হওয়ার চেষ্টা করছে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচন প্রত্যাখ্যান করলেও এর প্রতিবাদে ফ্রন্টের নেতারা এত দিন মাঠের কোনো কর্মসূচিতে নামেননি। আজ প্রথমবারের মতো ‘কালো ব্যাজ ধারণ ও মানববন্ধন’ কর্মসূচি পালন করতে যাচ্ছে তারা। ফ্রন্টের নেতারা বলেছেন, নিরপেক্ষ নির্বাচনের দাবিতে ফের জনগণের ও রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐক্য গড়ে তোলাই তাদের লক্ষ্য। সরকার যত দ্র”ত নিরপেক্ষ নির্বাচনের উদ্যোগ নেবে তত দ্র”তই রাজনীতির আকাশের কালো মেঘ কেটে যাবে।
জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতা ডা. জাফর”ল্লাহ চৌধুরী বলেছেন, ৩০ ডিসেম্বর দেশে কী হয়েছে সেটি আমরা কেন দেশের সবাই দেখেছে। একে কি নির্বাচন বলবেন? জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের মূল দাবি হচ্ছে ৩০ ডিসেম্বর দেশে যেহেতু অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হয়নি তাই দ্র”ত সবার কাছে গ্রহণযোগ্য একটি নির্বাচন আদায় করা। সব রাজনৈতিক দলগুলোকে এ দাবি আদায়ে সোচ্চার হতে হবে। ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনের পর ইতোমধ্যে এক মাস ৬ দিন পেরিয়ে গেছে। ঐক্যফ্রন্টের বড় শরিক বিএনপিও এখন পর্যন্ত তেমন কোনো কর্মসূচি পালন করেনি। কেন কোনো কর্মসূচি দেয়া হয়নি, এ বিষয়ে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মামলা-হামলায় জর্জরিত নেতাকর্মীদের নতুন করে বিপদে না ফেলে বিশ্রাম দিতেই কোনো কর্মসূচি নেয়া হয়নি। দলটির বহু নেতাকর্মী এখনো কারাগারে। যাদেরকে এখন জামিনে মুক্ত করে নিয়ে আসাই দলটির অন্যতম কাজ। ইতোমধ্যে দলীয় তৎপরতায় বহু নেতাকর্মী জামিনে মুক্ত হয়ে বেরিয়ে এসেছেন। সিনিয়র এক নেতা বলেছেন, স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে যেতে আরো কয়েক মাস সময় লাগবে। নেতাকর্মীদের নতুন করে ঝামেলায় না ফেলার জন্যই আগামী ৮ ফেব্র”য়ারি জনসভার কর্মসূচি বাতিল করেছে বিএনপি। বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর নেতারা বলছেন, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সুষ্ঠু ভোট হয়নি, এ বিষয়টি সর্বজনগ্রাহ্য। এখন প্রয়োজন সরকারকে নির্বাচনের চাপে ফেলা। এ কাজটি করতে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোকে অবশ্য একসাথে রাজপথে আসা অপরিহার্য।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচন প্রত্যাখ্যান করে আসা বিরোধী দলগুলোর নেতারা আবারো যুগপৎ আন্দোলনের সম্ভাবনা দেখছেন। নেতারা বলছেন, উপজেলা পরিষদ নির্বাচনকেন্দ্রিক একটি বিষয় স্পষ্ট হবে। সেটি হচ্ছে, এই নির্বাচনে যারা অংশ নেবে না, তাদের সাথে বিএনপিসহ জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট যুগপৎ কর্মসূচির বিষয়ে আলোচনা করার দ্বারোন্মোচন হবে। তাহলে ভবিষ্যতে মধ্যবর্তী নির্বাচনের দাবিতে আলোচনা করে রাজপথে আসার সম্ভাবনা থাকবে। সব বিরোধীই যদি উপজেলা নির্বাচন বয়কট করে, তাহলে নূন্যতম ভিত্তিতে রাজপথে আসবে ঐক্যফ্রন্ট। ফ্রন্টের আহ্বায়ক ড. কামাল হোসেন বলেছেন, জনগণের দাবিকে সামনে আনতে হবে। আমরা কাজ করছি। যারা যারা কাজ করবে, তাদের সাথেও কথা হতে পারে, আলোচনা হতে পারে। বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখর”ল ইসলাম কয়েক দিন আগে একটি অনুষ্ঠানে বলেছেন, সাধারণ মানুষকে সাথে নিয়ে এই অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে হবে। ন্যায়কে প্রতিষ্ঠিত করতে হবে। ভয় পাবেন না, সারা দেশের মানুষ সাথে আছে। আওয়ামী লীগ জনগণের কাছ থেকে চিরদিনের জন্য চলে গেছে। সুতরাং এখন সাহস নিয়ে লড়াই করতে হবে।
এক ঘণ্টার মানববন্ধন আজ : জাতীয় নির্বাচনে অনিয়মের প্রতিবাদে আজ প্রথমবারের মতো এক ঘণ্টার কালো ব্যাজ ধারণ ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করবে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। বেলা ৩টা থেকে ৪টা পর্যন্ত জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এই কর্মসূচি পালিত হবে। এতে ড. কামাল হোসেনসহ ফ্রন্টের শীর্ষ নেতারা অংশ নেবেন। আগামী ২৪ ফেব্র”য়ারি গণশুনানি কর্মসূচি রয়েছে ফ্রন্টের। বিগত ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনে ব্যাপক ভোট ডাকাতির অভিযোগ এনে পরদিনই পুনর্নিবাচনের দাবি জানিয়েছে মাত্র ৮ আসন পাওয়া ঐক্যফ্রন্ট। এর প্রতিবাদে আজই তারা মানববন্ধন কর্মসূচিতে মাঠে নামছে। ফ্রন্টের হাজার হাজার নেতাকর্মীর বির”দ্ধে মামলা কিংবা অনেকে কারাগারে বন্দী থাকায় তাৎক্ষণিকভাবে বড় কোনো কর্মসূচিতে যায়নি ঐক্যফ্রন্ট। ধীরে ধীরে তারা পুনর্নিববাচনের ইস্যুতে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার চেষ্টা করছে।