ইপেপার । আজশুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

সাদা পোশাকে তুলে নিয়ে যাওয়া ঝিনাইদহের দুই ব্যক্তিকে গ্রেফতারের দাবী র‌্যাবের

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০১:০৪:০১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ অগাস্ট ২০১৬
  • / ৩৪৩ বার পড়া হয়েছে

seeঝিনাইদহ অফিস: সাদা পোশাকে তুলে নিয়ে যওয়ার পর ঝিনাইদহের বঙ্গবন্ধু পরিষদের এক নেতার ছেলেসহ দুই জনকে জেএমবির সদস্য হিসেবে আটকের দাবী করেছে র‌্যাব-১। বুধবার ভোরে টঙ্গীর স্টেশন রোড এলাকা থেকে ঝিনাইদহের রাশেদুজ্জামান রোজ ও আব্দুল হাইসহ ৩ জনকে আটকের দাবী করা হয়। র‌্যাবের গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার মুফতি মাহমুদ খান বুধবার কথা বলেন মিডিয়ার সাথে। তিনি জানান, গত ২১ জুলাই টঙ্গী থেকে গ্রেপ্তার জেএমবি নেতা মাহমুদ হাসান এবং ১৬ অগাস্ট ঢাকায় গ্রেপ্তার জেএমবির নারী শাখার উপদেষ্টা আকলিমা রহমানকে জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে মঙ্গলবার রাতে তারা টঙ্গীতে অভিযান চালান। স্টেশন রোড এলাকা থেকে আটক করা হয় রাশেদুজ্জামান রোজ, আব্দুল হাই ও শাহাবুদ্দিনকে। “প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা বলেছে, রাশেদুজ্জামান রোজ ও আব্দুল হাই চট্টগ্রাম থেকে এবং সাহাবুদ্দিন পাবনা থেকে টঙ্গীতে জড়ো হন। এদিকে রোজ ও আব্দুল হাইয়ের পরিবার বলছেন ভিন্ন কথা। ছেলে নিখোঁজের পর ঝিনাইদহ বঙ্গবন্ধু পরিষদের সহ-সভাপতি ও সাবেক জনতা ব্যাংক কর্মকর্তা খয়বার রহমান সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন, তার ছেলে রাশেদুজ্জামান রোজকে হলিধানী বাজার থেকে গত ২ জুলাই তুলে নিয়ে যায়। এরপর র‌্যাব তার ঢাকায় বাসা থেকে রোজের ছবি ও মোবাইল নং নিয়ে যায়। এ নিয়ে গত ৩ জুলাই ঝিনাইদহ সদর থানায় একটি জিডি করেন। তিনি বলেন আমার ছেলে রোজ যদি জঙ্গীদের সাথে সম্পর্ক করে তবে বাংলাদেশের প্রচলিত আইনে বিচার হোক। রোজ কানাডায় পড়ালেখা করে সেখানে চাকরী করতেন। এরপর তিনি বাড়ি ফিরে সদর উপজেলার হলিধানী বাজারে ব্যবসা করতেন। তার চলাফেরা কট্রর ইসলামী মনোভাবের বলে ছেলে রোজোর সাথে পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের বনিবনা হতো না বলে বাবা খয়বর রহমান জানান। রোজের পরিবারের দাবী, ৫২ দিন পর নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন জেএমবির নারী শাখার প্রশিক্ষক ও দক্ষিণাঞ্চলের ভারপ্রাপ্ত আমির হিসেবে তাকে আটকের কথা বলে র‌্যাব-১। ঝিনাইদহ সদর থানার সাবেক ওসি হাসান হাফিজুর রহমান সে সময় সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন, রোজকে পুলিশ আটক করে। কিন্তু তার মধ্যে খারাপ কিছু না পাওয়ায় ছেড়ে দেওয়া হয়। এদিকে গত ১৩ জুলাই তুলে নিয়ে যাওয়া হয় কালীগঞ্জের ষাটবাড়িয়া গ্রামের আশরাফুল আলমের একমাত্র ছেলে আবদুল হাইকে (৩৫)। তিনি ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়ালেখা শেষ করে বাড়িতে হোমিও চিকিৎসা দিতেন। পাশাপাশি বাড়ির পাশের মসজিদে ইমামতি করতেন। তাঁর স্ত্রী লিমা খাতুন বলেন, স্বামীকে অনেক জায়গায় খুঁজেছেন, কিন্তু পাননি। পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তারা কিছুই জানে না বলে জানিয়েছে। অবশেষে ৪১ দিন পর বুধবার (২৪ আগষ্ট) বিভিন্ন টিভিতে তার স্বামীকে আটকের কথা জানতে পারেন। লিমা খাতুন অভিযোগ করেন, তার স্বামীকে তাহলে ১৩ জুলাই করা নিয়েছিলেন? এ বিষয়ে ঝিনাইদহ র‌্যাবের কোম্পানী কমান্ডার মেজর মোঃ মনির আহমেদ জানান, বাড়ি থেকে নিখোঁজ হয়ে রোজ এবং আব্দুল হাই জঙ্গীদের সাথে সম্পৃক্ত হয়। এর মধ্যে রোজ ২০০৬ সালে কানাডা থেকে পড়ালেখা শেষ করে ২০১২ সালে দেশে ফিরে আসে। কানাডায় থাকা অবস্থায় তিনি জঙ্গী কার্যক্রমে জড়িয়ে পড়েন। এরপর হলিধানী বাজার এলাকায় ব্যবসার আড়ালে জেএমবির নারী সদস্যদের রিক্রুট করতে থাকেন। তিনি জানান, উচ্চ শিক্ষিত একজন ব্যক্তি ভাল চাকরী না করে গ্রাম এলকায় ঘাপটি মেরে ব্যবসার আড়ালে তিনি সংগঠন করতেন। উপযুক্ত তথ্য প্রমানের ভিত্তিতে র‌্যাব এ দুইজনকে আটক করেছে বলে তিনি জানান। পরিবারের দাবী মতে সাদা পোশাকে তুলে নিয়ে যাওয়ার বিষয়ে মেজর মোঃ মনির আহমেদ জানান, তাদের পরিবারের দাবী ঠিক নয়। জেএমবির সংগঠন করার জন্য রোজ এবং হাই নিখোঁজ হয়েছিলেন।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

সাদা পোশাকে তুলে নিয়ে যাওয়া ঝিনাইদহের দুই ব্যক্তিকে গ্রেফতারের দাবী র‌্যাবের

আপলোড টাইম : ০১:০৪:০১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ অগাস্ট ২০১৬

seeঝিনাইদহ অফিস: সাদা পোশাকে তুলে নিয়ে যওয়ার পর ঝিনাইদহের বঙ্গবন্ধু পরিষদের এক নেতার ছেলেসহ দুই জনকে জেএমবির সদস্য হিসেবে আটকের দাবী করেছে র‌্যাব-১। বুধবার ভোরে টঙ্গীর স্টেশন রোড এলাকা থেকে ঝিনাইদহের রাশেদুজ্জামান রোজ ও আব্দুল হাইসহ ৩ জনকে আটকের দাবী করা হয়। র‌্যাবের গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার মুফতি মাহমুদ খান বুধবার কথা বলেন মিডিয়ার সাথে। তিনি জানান, গত ২১ জুলাই টঙ্গী থেকে গ্রেপ্তার জেএমবি নেতা মাহমুদ হাসান এবং ১৬ অগাস্ট ঢাকায় গ্রেপ্তার জেএমবির নারী শাখার উপদেষ্টা আকলিমা রহমানকে জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে মঙ্গলবার রাতে তারা টঙ্গীতে অভিযান চালান। স্টেশন রোড এলাকা থেকে আটক করা হয় রাশেদুজ্জামান রোজ, আব্দুল হাই ও শাহাবুদ্দিনকে। “প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা বলেছে, রাশেদুজ্জামান রোজ ও আব্দুল হাই চট্টগ্রাম থেকে এবং সাহাবুদ্দিন পাবনা থেকে টঙ্গীতে জড়ো হন। এদিকে রোজ ও আব্দুল হাইয়ের পরিবার বলছেন ভিন্ন কথা। ছেলে নিখোঁজের পর ঝিনাইদহ বঙ্গবন্ধু পরিষদের সহ-সভাপতি ও সাবেক জনতা ব্যাংক কর্মকর্তা খয়বার রহমান সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন, তার ছেলে রাশেদুজ্জামান রোজকে হলিধানী বাজার থেকে গত ২ জুলাই তুলে নিয়ে যায়। এরপর র‌্যাব তার ঢাকায় বাসা থেকে রোজের ছবি ও মোবাইল নং নিয়ে যায়। এ নিয়ে গত ৩ জুলাই ঝিনাইদহ সদর থানায় একটি জিডি করেন। তিনি বলেন আমার ছেলে রোজ যদি জঙ্গীদের সাথে সম্পর্ক করে তবে বাংলাদেশের প্রচলিত আইনে বিচার হোক। রোজ কানাডায় পড়ালেখা করে সেখানে চাকরী করতেন। এরপর তিনি বাড়ি ফিরে সদর উপজেলার হলিধানী বাজারে ব্যবসা করতেন। তার চলাফেরা কট্রর ইসলামী মনোভাবের বলে ছেলে রোজোর সাথে পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের বনিবনা হতো না বলে বাবা খয়বর রহমান জানান। রোজের পরিবারের দাবী, ৫২ দিন পর নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন জেএমবির নারী শাখার প্রশিক্ষক ও দক্ষিণাঞ্চলের ভারপ্রাপ্ত আমির হিসেবে তাকে আটকের কথা বলে র‌্যাব-১। ঝিনাইদহ সদর থানার সাবেক ওসি হাসান হাফিজুর রহমান সে সময় সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন, রোজকে পুলিশ আটক করে। কিন্তু তার মধ্যে খারাপ কিছু না পাওয়ায় ছেড়ে দেওয়া হয়। এদিকে গত ১৩ জুলাই তুলে নিয়ে যাওয়া হয় কালীগঞ্জের ষাটবাড়িয়া গ্রামের আশরাফুল আলমের একমাত্র ছেলে আবদুল হাইকে (৩৫)। তিনি ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়ালেখা শেষ করে বাড়িতে হোমিও চিকিৎসা দিতেন। পাশাপাশি বাড়ির পাশের মসজিদে ইমামতি করতেন। তাঁর স্ত্রী লিমা খাতুন বলেন, স্বামীকে অনেক জায়গায় খুঁজেছেন, কিন্তু পাননি। পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তারা কিছুই জানে না বলে জানিয়েছে। অবশেষে ৪১ দিন পর বুধবার (২৪ আগষ্ট) বিভিন্ন টিভিতে তার স্বামীকে আটকের কথা জানতে পারেন। লিমা খাতুন অভিযোগ করেন, তার স্বামীকে তাহলে ১৩ জুলাই করা নিয়েছিলেন? এ বিষয়ে ঝিনাইদহ র‌্যাবের কোম্পানী কমান্ডার মেজর মোঃ মনির আহমেদ জানান, বাড়ি থেকে নিখোঁজ হয়ে রোজ এবং আব্দুল হাই জঙ্গীদের সাথে সম্পৃক্ত হয়। এর মধ্যে রোজ ২০০৬ সালে কানাডা থেকে পড়ালেখা শেষ করে ২০১২ সালে দেশে ফিরে আসে। কানাডায় থাকা অবস্থায় তিনি জঙ্গী কার্যক্রমে জড়িয়ে পড়েন। এরপর হলিধানী বাজার এলাকায় ব্যবসার আড়ালে জেএমবির নারী সদস্যদের রিক্রুট করতে থাকেন। তিনি জানান, উচ্চ শিক্ষিত একজন ব্যক্তি ভাল চাকরী না করে গ্রাম এলকায় ঘাপটি মেরে ব্যবসার আড়ালে তিনি সংগঠন করতেন। উপযুক্ত তথ্য প্রমানের ভিত্তিতে র‌্যাব এ দুইজনকে আটক করেছে বলে তিনি জানান। পরিবারের দাবী মতে সাদা পোশাকে তুলে নিয়ে যাওয়ার বিষয়ে মেজর মোঃ মনির আহমেদ জানান, তাদের পরিবারের দাবী ঠিক নয়। জেএমবির সংগঠন করার জন্য রোজ এবং হাই নিখোঁজ হয়েছিলেন।