ইপেপার । আজশুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

সমাজসেবা নবীজির আদর্শ

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ১০:১১:৩৮ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৫ ফেব্রুয়ারী ২০২০
  • / ১৮৪ বার পড়া হয়েছে

ধর্ম প্রতিবেদন
সকালের রোদ কেবল আলো ছড়াচ্ছে। চারদিকে সুনসান নীরবতা। নবীজি (সা.) বেরিয়েছেন মক্কার গলিতে। দেখলেন একজন বৃদ্ধাকে। মাথায় ভারী বোঝা নিয়ে হাঁটছেন। নবীজি এগিয়ে এলেন বুড়ির দিকে। তার মাথার ভারী বোঝাটা নিজের মাথায় তুলে নিলেন। এরপর চলছেন বুড়িকে পৌঁছে দেয়ার জন্য। ভারী বোঝা মাথা থেকে সরলে বুড়ির মন হালকা হল। নবীজির পাশে হেঁটে হেঁটে বলে যাচ্ছেন মনের যত ব্যথা। একপর্যায়ে বলছেন, ‘আমরা খুব ভালো ছিলাম। সংসারে কোনো ঝামেলা ছিল না। মুহাম্মদের ওপর কোন ভূত সওয়ার হল, সে আমাদের সংসারে ফাটল ধরাল। ভাইবোন, বাপ-ছেলে এবং মা-মেয়ের মাঝে সংঘাত লাগিয়ে দিল। তার যন্ত্রণায় মক্কায় থাকা যাচ্ছে না। ভাবছি অন্যত্র চলে যাব।’ রাগ ঝাড়লেন বুড়ি। ধৈর্যের পাহাড় নবীজি (সা.) চুপচাপ সব শুনলেন। গন্তব্যে গিয়ে বোঝা নামাতেই বুড়ি জিজ্ঞেস করলেন, ‘তুমি কে বাবা? আমার এত বড় উপকার করলে। তোমার নাম কী?’ নবীজি বললেন, ‘এতক্ষণ আপনি যাকে গালমন্দ করলেন আমিই সে মুহাম্মদ।’ শুনেই বৃদ্ধা নবীজির পায়ে পড়ে বললেন, ‘তুমি তো মানুষ নও, দেবতা- ফেরেশতা! মানুষ তোমার সম্পর্কে কেন এত কুৎসা রটাচ্ছে? এক্ষুনি তোমার কালেমা আমাকে পড়াও। আমি মুসলমান হয়ে যাব!’ এই ছিল মহানবীর মানবসেবা। মানবসেবায় তিনি ছিলেন জীবন্ত উপমা। নবুয়তি লাভের আগেই মানবসেবায় গড়ে তুলেছিলেন ‘হিলফুল ফুজুল’ সেবামূলক সংগঠন। তার কাছে সাহায্য চেয়ে পায়নি- এমন মানুষের সংখ্যা মেলানো ভার। নবীজির ইন্তেকালের পর খোলাফায়ে রাশেদিন, সাহাবায়ে কেরাম এবং আওলিয়ায়ে কেরামের মাঝে মানবসেবার ধারাবাহিকতা রক্ষা পেয়েছিল। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে বলতে হয়, প্রিয়নবীর উত্তরসূরি মুসলিম উম্মাহ বা নায়েবে নবীদের মাঝে এখন সেবার প্রবণতা দেখা যায় কম। নবীজির গুণাবলি তাঁর উম্মতের মাঝে না থাকলে ইসলাম টিকে থাকবে কীভাবে? শিক্ষা দেয়ার কাজ অনেকে করলেও সেবার কাজ বেছে নিয়েছে বিধর্মীরা। বাংলাদেশেই হাজার হাজার মুসলমানকে বিধর্মী করছে সেবা দিয়েই। মুমিন হিসেবে আমাদের কী কিছুই করার নেই? নবীজি (সা.) বলেছেন, ‘তুমি পৃথিবীর মানুষের ওপর দয়া কর, আসমানের মালিক আল্লাহ তোমার ওপর দয়া করবেন।’ আসুন হতদরিদ্র মানুষের পাশে দাঁড়াই। নবীর আদর্শে উজ্জীবিত হই।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

সমাজসেবা নবীজির আদর্শ

আপলোড টাইম : ১০:১১:৩৮ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৫ ফেব্রুয়ারী ২০২০

ধর্ম প্রতিবেদন
সকালের রোদ কেবল আলো ছড়াচ্ছে। চারদিকে সুনসান নীরবতা। নবীজি (সা.) বেরিয়েছেন মক্কার গলিতে। দেখলেন একজন বৃদ্ধাকে। মাথায় ভারী বোঝা নিয়ে হাঁটছেন। নবীজি এগিয়ে এলেন বুড়ির দিকে। তার মাথার ভারী বোঝাটা নিজের মাথায় তুলে নিলেন। এরপর চলছেন বুড়িকে পৌঁছে দেয়ার জন্য। ভারী বোঝা মাথা থেকে সরলে বুড়ির মন হালকা হল। নবীজির পাশে হেঁটে হেঁটে বলে যাচ্ছেন মনের যত ব্যথা। একপর্যায়ে বলছেন, ‘আমরা খুব ভালো ছিলাম। সংসারে কোনো ঝামেলা ছিল না। মুহাম্মদের ওপর কোন ভূত সওয়ার হল, সে আমাদের সংসারে ফাটল ধরাল। ভাইবোন, বাপ-ছেলে এবং মা-মেয়ের মাঝে সংঘাত লাগিয়ে দিল। তার যন্ত্রণায় মক্কায় থাকা যাচ্ছে না। ভাবছি অন্যত্র চলে যাব।’ রাগ ঝাড়লেন বুড়ি। ধৈর্যের পাহাড় নবীজি (সা.) চুপচাপ সব শুনলেন। গন্তব্যে গিয়ে বোঝা নামাতেই বুড়ি জিজ্ঞেস করলেন, ‘তুমি কে বাবা? আমার এত বড় উপকার করলে। তোমার নাম কী?’ নবীজি বললেন, ‘এতক্ষণ আপনি যাকে গালমন্দ করলেন আমিই সে মুহাম্মদ।’ শুনেই বৃদ্ধা নবীজির পায়ে পড়ে বললেন, ‘তুমি তো মানুষ নও, দেবতা- ফেরেশতা! মানুষ তোমার সম্পর্কে কেন এত কুৎসা রটাচ্ছে? এক্ষুনি তোমার কালেমা আমাকে পড়াও। আমি মুসলমান হয়ে যাব!’ এই ছিল মহানবীর মানবসেবা। মানবসেবায় তিনি ছিলেন জীবন্ত উপমা। নবুয়তি লাভের আগেই মানবসেবায় গড়ে তুলেছিলেন ‘হিলফুল ফুজুল’ সেবামূলক সংগঠন। তার কাছে সাহায্য চেয়ে পায়নি- এমন মানুষের সংখ্যা মেলানো ভার। নবীজির ইন্তেকালের পর খোলাফায়ে রাশেদিন, সাহাবায়ে কেরাম এবং আওলিয়ায়ে কেরামের মাঝে মানবসেবার ধারাবাহিকতা রক্ষা পেয়েছিল। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে বলতে হয়, প্রিয়নবীর উত্তরসূরি মুসলিম উম্মাহ বা নায়েবে নবীদের মাঝে এখন সেবার প্রবণতা দেখা যায় কম। নবীজির গুণাবলি তাঁর উম্মতের মাঝে না থাকলে ইসলাম টিকে থাকবে কীভাবে? শিক্ষা দেয়ার কাজ অনেকে করলেও সেবার কাজ বেছে নিয়েছে বিধর্মীরা। বাংলাদেশেই হাজার হাজার মুসলমানকে বিধর্মী করছে সেবা দিয়েই। মুমিন হিসেবে আমাদের কী কিছুই করার নেই? নবীজি (সা.) বলেছেন, ‘তুমি পৃথিবীর মানুষের ওপর দয়া কর, আসমানের মালিক আল্লাহ তোমার ওপর দয়া করবেন।’ আসুন হতদরিদ্র মানুষের পাশে দাঁড়াই। নবীর আদর্শে উজ্জীবিত হই।