ইপেপার । আজমঙ্গলবার, ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

সন্ধান মিলেছে তামিমের আধ্যাত্মিক গুরু কাশেমের

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ১২:০১:৫৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩০ অগাস্ট ২০১৬
  • / ৪০৯ বার পড়া হয়েছে

tamim_23675_1472502719সমীকরণ ডেস্ক: গুলশান ও শোলাকিয়া হামলার মাস্টারমাইন্ড তামিম আহমেদ চৌধুরীর আধ্যাত্মিক গুরু শায়খ আবুল কাশেমের সন্ধান পেয়েছেন গোয়েন্দারা। বারবার অবস্থান পরিবর্তন করলেও তাকে ধরতে গোয়েন্দাদের চতুর্মুখী অভিযান অব্যাহত আছে। সে যাতে দেশত্যাগ করতে না পারে সেজন্য বসানো হয়েছে কড়া নজরদারি। সংশ্লিষ্টরা আশা করছেন, বেশিক্ষণ সে পালিয়ে থাকতে পারবে না। এছাড়া নারাণগঞ্জে অভিযান ‘হিট স্ট্রং ২৭’-এর পর আরও চার জঙ্গিকে ধরতে অভিযান চলছে। এদের মধ্যে একজন অভিযানের আগে পালিয়ে যায়। তবে সেও বেশিদূর যেতে পারেনি। গোয়েন্দা জালে আটকে আছে। গোয়েন্দা সূত্রে জানা যায়, নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন নিউ জেএমবির থিংকট্যাংক শায়খ আবুল কাশেমের মাধ্যমে তামিম ২০১৩ সালে এ পথে আসে। এর আগে কাশেমের সঙ্গে কানাডায় তার দেখা হয়েছিল। এ জঙ্গি নেতার দেশত্যাগ ঠেকাতে সব ইমিগ্রেশন চেক পয়েন্টে প্রয়োজনীয় তথ্য পাঠানো হয়েছে। দায়িত্বশীল এক গোয়েন্দা কর্মকর্তা বলেন, তিন-চার বছর ধরে কাশেম নিউ জেএমবির হাল ধরে। বিভিন্ন জেলায় সফর করে সে জঙ্গিদের দীক্ষা দেয়। লোকটি নিজেকে আধ্যাত্মিক নেতা বলেও পরিচয় দেয় জঙ্গি সদস্যদের কাছে। কয়েক মাস আগে উত্তরাঞ্চলের গাইবান্ধা ও দিনাজপুর সে সফর করেছে। তার হাত ধরেই তামিম সামরিক কমান্ডারের দায়িত্ব পায়। এ আবুল কাশেম ২০০৫ সালের ১৭ আগস্ট সিরিজ বোমা হামলা পরিকল্পনাকারীদের একজন। ত্রিশালে জঙ্গি ছিনিয়ে নেয়ার ঘটনায় জড়িত হিসেবে তার নাম আসে। জানা গেছে, কাসেমকে জঙ্গি তৎপরতার কাজে মধ্যপ্রাচ্য থেকে নানাভাবে সহায়তা দিয়েছে আরেক জঙ্গি। এজন্য জঙ্গিদের কাছে কথিত আধ্যাত্মিক নেতা কাসেম এখন পুলিশের সাঁড়াশি অভিযানের মুখে মধ্যপ্রাচ্যে পালানোর চেষ্টা করছে। এ আবুল কাশেম ছিল সিরিজ বোমা হামলার নায়ক জঙ্গি নেতা আবদুর রহমানের গুরুত্বপূর্ণ এক সঙ্গী।
এদিকে নারায়ণগঞ্জের অভিযানে নিউ জেএমবির তিন জঙ্গি তামিম, তাওসীফ ও ফজলে রাব্বী নিহতের আগে পালিয়ে যেতে সক্ষম হয় জাহাঙ্গীর ওরফে মুরাদ। সেও নিহত তিনজনের মতো জঙ্গি টিমের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য। তবে আশার কথা, পালিয়ে যাওয়া এ জঙ্গিসহ এ দলের আরও বেশ ক’জনের সন্ধান পেয়েছেন গোয়েন্দারা। এদের মধ্যে নিহত জঙ্গি তাওসীফের এক মেরিন ইঞ্জিনিয়ার বন্ধুকেও খোঁজা হচ্ছে। সে গুলশান ও শোলাকিয়ায় নিহত নিবরাস ও আবীরের ঘনিষ্ঠ ছিল। সেই মেরিন ইঞ্জিনিয়ারের নাম মাসুদ ওরফে তৌকির বলে প্রাথমিকভাবে জানা যায়। নিউ জেএমবির সঙ্গে মাসুদ জড়িত। কিন্তু সেও রহস্যজনকভাবে নিখোঁজ আছে। তার বাড়ি ঝিনাইদহ এলাকায়।
তদন্ত সংশ্লিষ্ট সূত্রে আরও জানা গেছে, শনিবার নারায়ণগঞ্জের পাইকপাড়ায় জঙ্গিবিরোধী অভিযানের আগে পালিয়ে যাওয়া জাহাঙ্গীর ওরফে মুরাদের খোঁজে নেমেছে গোয়েন্দাদের একাধিক টিম। মুরাদের বিষয়েও দেশের সবক’টি বিমানবন্দরসহ সব রুটে প্রয়োজনীয় তথ্য দেয়া হয়েছে। একই সঙ্গে অভি নামে আরও এক জঙ্গির তথ্যও দেয়া হয়। এ দু’জন পাইকপাড়ার আস্তানায় নিয়মিত আসা-যাওয়া করত। ইতিমধ্যে পালিয়ে যাওয়া সেই জঙ্গি মুরাদের খোঁজ মিলেছে। আর তার মাধ্যমে নতুন আস্তানার সন্ধান মিলতে পারে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক গোয়েন্দা কর্মকর্তা বলেন, জাহাঙ্গীর ওরফে মুরাদকে ধরার জন্য সব ধরনের প্রচেষ্টা চলছে। তার নেতৃত্বে রয়েছে একটি সেল। যারা ভারি অস্ত্র চালাতে পারদর্শী। এদের কাছে বেশকিছু অস্ত্র পাওয়া যেতে পারে। তদন্তে নাম আসা ওই আস্তানায় মারজান, রিপন ও অভিকে পাওয়ার আশাও করছেন তারা।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

সন্ধান মিলেছে তামিমের আধ্যাত্মিক গুরু কাশেমের

আপলোড টাইম : ১২:০১:৫৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩০ অগাস্ট ২০১৬

tamim_23675_1472502719সমীকরণ ডেস্ক: গুলশান ও শোলাকিয়া হামলার মাস্টারমাইন্ড তামিম আহমেদ চৌধুরীর আধ্যাত্মিক গুরু শায়খ আবুল কাশেমের সন্ধান পেয়েছেন গোয়েন্দারা। বারবার অবস্থান পরিবর্তন করলেও তাকে ধরতে গোয়েন্দাদের চতুর্মুখী অভিযান অব্যাহত আছে। সে যাতে দেশত্যাগ করতে না পারে সেজন্য বসানো হয়েছে কড়া নজরদারি। সংশ্লিষ্টরা আশা করছেন, বেশিক্ষণ সে পালিয়ে থাকতে পারবে না। এছাড়া নারাণগঞ্জে অভিযান ‘হিট স্ট্রং ২৭’-এর পর আরও চার জঙ্গিকে ধরতে অভিযান চলছে। এদের মধ্যে একজন অভিযানের আগে পালিয়ে যায়। তবে সেও বেশিদূর যেতে পারেনি। গোয়েন্দা জালে আটকে আছে। গোয়েন্দা সূত্রে জানা যায়, নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন নিউ জেএমবির থিংকট্যাংক শায়খ আবুল কাশেমের মাধ্যমে তামিম ২০১৩ সালে এ পথে আসে। এর আগে কাশেমের সঙ্গে কানাডায় তার দেখা হয়েছিল। এ জঙ্গি নেতার দেশত্যাগ ঠেকাতে সব ইমিগ্রেশন চেক পয়েন্টে প্রয়োজনীয় তথ্য পাঠানো হয়েছে। দায়িত্বশীল এক গোয়েন্দা কর্মকর্তা বলেন, তিন-চার বছর ধরে কাশেম নিউ জেএমবির হাল ধরে। বিভিন্ন জেলায় সফর করে সে জঙ্গিদের দীক্ষা দেয়। লোকটি নিজেকে আধ্যাত্মিক নেতা বলেও পরিচয় দেয় জঙ্গি সদস্যদের কাছে। কয়েক মাস আগে উত্তরাঞ্চলের গাইবান্ধা ও দিনাজপুর সে সফর করেছে। তার হাত ধরেই তামিম সামরিক কমান্ডারের দায়িত্ব পায়। এ আবুল কাশেম ২০০৫ সালের ১৭ আগস্ট সিরিজ বোমা হামলা পরিকল্পনাকারীদের একজন। ত্রিশালে জঙ্গি ছিনিয়ে নেয়ার ঘটনায় জড়িত হিসেবে তার নাম আসে। জানা গেছে, কাসেমকে জঙ্গি তৎপরতার কাজে মধ্যপ্রাচ্য থেকে নানাভাবে সহায়তা দিয়েছে আরেক জঙ্গি। এজন্য জঙ্গিদের কাছে কথিত আধ্যাত্মিক নেতা কাসেম এখন পুলিশের সাঁড়াশি অভিযানের মুখে মধ্যপ্রাচ্যে পালানোর চেষ্টা করছে। এ আবুল কাশেম ছিল সিরিজ বোমা হামলার নায়ক জঙ্গি নেতা আবদুর রহমানের গুরুত্বপূর্ণ এক সঙ্গী।
এদিকে নারায়ণগঞ্জের অভিযানে নিউ জেএমবির তিন জঙ্গি তামিম, তাওসীফ ও ফজলে রাব্বী নিহতের আগে পালিয়ে যেতে সক্ষম হয় জাহাঙ্গীর ওরফে মুরাদ। সেও নিহত তিনজনের মতো জঙ্গি টিমের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য। তবে আশার কথা, পালিয়ে যাওয়া এ জঙ্গিসহ এ দলের আরও বেশ ক’জনের সন্ধান পেয়েছেন গোয়েন্দারা। এদের মধ্যে নিহত জঙ্গি তাওসীফের এক মেরিন ইঞ্জিনিয়ার বন্ধুকেও খোঁজা হচ্ছে। সে গুলশান ও শোলাকিয়ায় নিহত নিবরাস ও আবীরের ঘনিষ্ঠ ছিল। সেই মেরিন ইঞ্জিনিয়ারের নাম মাসুদ ওরফে তৌকির বলে প্রাথমিকভাবে জানা যায়। নিউ জেএমবির সঙ্গে মাসুদ জড়িত। কিন্তু সেও রহস্যজনকভাবে নিখোঁজ আছে। তার বাড়ি ঝিনাইদহ এলাকায়।
তদন্ত সংশ্লিষ্ট সূত্রে আরও জানা গেছে, শনিবার নারায়ণগঞ্জের পাইকপাড়ায় জঙ্গিবিরোধী অভিযানের আগে পালিয়ে যাওয়া জাহাঙ্গীর ওরফে মুরাদের খোঁজে নেমেছে গোয়েন্দাদের একাধিক টিম। মুরাদের বিষয়েও দেশের সবক’টি বিমানবন্দরসহ সব রুটে প্রয়োজনীয় তথ্য দেয়া হয়েছে। একই সঙ্গে অভি নামে আরও এক জঙ্গির তথ্যও দেয়া হয়। এ দু’জন পাইকপাড়ার আস্তানায় নিয়মিত আসা-যাওয়া করত। ইতিমধ্যে পালিয়ে যাওয়া সেই জঙ্গি মুরাদের খোঁজ মিলেছে। আর তার মাধ্যমে নতুন আস্তানার সন্ধান মিলতে পারে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক গোয়েন্দা কর্মকর্তা বলেন, জাহাঙ্গীর ওরফে মুরাদকে ধরার জন্য সব ধরনের প্রচেষ্টা চলছে। তার নেতৃত্বে রয়েছে একটি সেল। যারা ভারি অস্ত্র চালাতে পারদর্শী। এদের কাছে বেশকিছু অস্ত্র পাওয়া যেতে পারে। তদন্তে নাম আসা ওই আস্তানায় মারজান, রিপন ও অভিকে পাওয়ার আশাও করছেন তারা।