ইপেপার । আজবৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

সন্তানকে ত্যাজ্য করা

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ১০:৫৮:১৪ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১২ সেপ্টেম্বর ২০১৭
  • / ১১১৭ বার পড়া হয়েছে

ধর্ম ডেস্ক: আমরা প্রায়ই শুনে থাকি সন্তান ত্যাজ্য করার বিষয়ে। ঘটনা পরম্পরায় পিতা-পুত্রের মাঝে কোনো বিষয়ে মতবিরোধ দেখা দিলে, ঝগড়া-বিবাদ হলে, পিতার কোনো আদেশ অমান্য করলে, পরিবারের স্বার্থ ক্ষুণœ করে এমন সম্মানহানিকর কোনো কাজ করলে অবাধ্য ওই সন্তানকে পিতা ত্যাজ্যপুত্র বা ত্যাজ্য কন্যা ঘোষণা করে থাকেন। অনেক সময় দেখা যায়, মৌখিকভাবে ঘোষণা করেই বিষয়টি শেষ হয় না; বরং স্ট্যাম্পে লিখে কিংবা আদালতের মাধ্যমে এফিডেভিট করে বিষয়টিকে আরো দৃঢ় করা হয়। সেই সঙ্গে আরো শর্তারোপ করা হয়, ওই ব্যক্তি মৃত্যুর পর ওই ত্যাজ্য সন্তান তার রেখে যাওয়া সম্পদের কোনোি অংশ পাবে না। এমতাবস্থায় যদি ত্যাজ্য ঘোষণাকারীর মৃত্যু হয়, তখন সুবিধাভোগী চতুর আত্মীয়স্বজন, এলাকার স্বার্থান্বেষী মহল এমন একটা পরিস্থিতি সৃষ্টি করে, যাতে ওই ত্যাজ্য সন্তান কোনো প্রকার সম্পদ না পায়। আসলে এমন বিধান না আছে ইসলামে, না আছে রাষ্ট্রীয় কাঠামোর কোথাও। অনেকেই বিষয়টিকে নিয়ে আবেগাক্রান্ত নানাবিধ এলোমেলো কথা বলেন, যুক্তি দিয়ে সঠিক বলে প্রমাণের চেষ্টা করেন। কিন্তু বিষয়টি তেমন নয়। ইসলাম মনে করে রক্তের সম্পর্ক কখনো মুখের কথায় পরিবর্তন-পরিবর্ধন হয় না। এটা একটি চিরস্থায়ী বিষয়। তবে একটা বিষয় সর্বদা গ্রহণযোগ্য, তাহলো কেউ যদি ইচ্ছা করে, তাহলে তার মোট সম্পদ থেকে এক-তৃতীয়াংশ যে কোনো সময় যে কাউকে দান করতে পারবে। এ ব্যাপারে তাকে কেউ বাধা দিতে পারবে না; কিন্তু তা কোনো অবস্থাতেই নিজের সন্তানদের ত্যাজ্য করে নয়, তাদের বঞ্চিত করে নয়। সন্তানকে ত্যাজ্য করার বিষয় ধর্মীয় দৃষ্টিকোণে অবৈধ। এটা আইনের দৃষ্টিতেও অপরাধযোগ্য কাজ। এ ধরনের কথা বলা, মান্য করা, প্রলুব্ধ করা, উৎসাহ দেয়া, পরিবেশ সৃষ্টি করা নিঃসন্দেহে অত্যন্ত জঘন্যতম কাজ। ইসলাম মনে করে সন্তানদের যোগ্য ও আদর্শবান করে গড়ে তোলা অনেক বড় সওয়াবের কাজ। এক্ষেত্রে পিতা-মাতার ত্যাগ ও কষ্ট স্বীকারকে ইসলাম ভিন্ন চোখে দেখে থাকে। আত্মীয়তার বন্ধন ছিন্নকারী ও রক্তের সম্পর্ক অস্বীকারকারী বেহেশতে যাবে না বলে হাদিসে বলা হয়েছে। সুতরাং সমাজের প্রচলিত এই ভুল শাস্তির ব্যবস্থা থেকে নিজে বেঁচে অন্যকেও বাঁচানোর চেষ্টা করতে হবে।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

সন্তানকে ত্যাজ্য করা

আপলোড টাইম : ১০:৫৮:১৪ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১২ সেপ্টেম্বর ২০১৭

ধর্ম ডেস্ক: আমরা প্রায়ই শুনে থাকি সন্তান ত্যাজ্য করার বিষয়ে। ঘটনা পরম্পরায় পিতা-পুত্রের মাঝে কোনো বিষয়ে মতবিরোধ দেখা দিলে, ঝগড়া-বিবাদ হলে, পিতার কোনো আদেশ অমান্য করলে, পরিবারের স্বার্থ ক্ষুণœ করে এমন সম্মানহানিকর কোনো কাজ করলে অবাধ্য ওই সন্তানকে পিতা ত্যাজ্যপুত্র বা ত্যাজ্য কন্যা ঘোষণা করে থাকেন। অনেক সময় দেখা যায়, মৌখিকভাবে ঘোষণা করেই বিষয়টি শেষ হয় না; বরং স্ট্যাম্পে লিখে কিংবা আদালতের মাধ্যমে এফিডেভিট করে বিষয়টিকে আরো দৃঢ় করা হয়। সেই সঙ্গে আরো শর্তারোপ করা হয়, ওই ব্যক্তি মৃত্যুর পর ওই ত্যাজ্য সন্তান তার রেখে যাওয়া সম্পদের কোনোি অংশ পাবে না। এমতাবস্থায় যদি ত্যাজ্য ঘোষণাকারীর মৃত্যু হয়, তখন সুবিধাভোগী চতুর আত্মীয়স্বজন, এলাকার স্বার্থান্বেষী মহল এমন একটা পরিস্থিতি সৃষ্টি করে, যাতে ওই ত্যাজ্য সন্তান কোনো প্রকার সম্পদ না পায়। আসলে এমন বিধান না আছে ইসলামে, না আছে রাষ্ট্রীয় কাঠামোর কোথাও। অনেকেই বিষয়টিকে নিয়ে আবেগাক্রান্ত নানাবিধ এলোমেলো কথা বলেন, যুক্তি দিয়ে সঠিক বলে প্রমাণের চেষ্টা করেন। কিন্তু বিষয়টি তেমন নয়। ইসলাম মনে করে রক্তের সম্পর্ক কখনো মুখের কথায় পরিবর্তন-পরিবর্ধন হয় না। এটা একটি চিরস্থায়ী বিষয়। তবে একটা বিষয় সর্বদা গ্রহণযোগ্য, তাহলো কেউ যদি ইচ্ছা করে, তাহলে তার মোট সম্পদ থেকে এক-তৃতীয়াংশ যে কোনো সময় যে কাউকে দান করতে পারবে। এ ব্যাপারে তাকে কেউ বাধা দিতে পারবে না; কিন্তু তা কোনো অবস্থাতেই নিজের সন্তানদের ত্যাজ্য করে নয়, তাদের বঞ্চিত করে নয়। সন্তানকে ত্যাজ্য করার বিষয় ধর্মীয় দৃষ্টিকোণে অবৈধ। এটা আইনের দৃষ্টিতেও অপরাধযোগ্য কাজ। এ ধরনের কথা বলা, মান্য করা, প্রলুব্ধ করা, উৎসাহ দেয়া, পরিবেশ সৃষ্টি করা নিঃসন্দেহে অত্যন্ত জঘন্যতম কাজ। ইসলাম মনে করে সন্তানদের যোগ্য ও আদর্শবান করে গড়ে তোলা অনেক বড় সওয়াবের কাজ। এক্ষেত্রে পিতা-মাতার ত্যাগ ও কষ্ট স্বীকারকে ইসলাম ভিন্ন চোখে দেখে থাকে। আত্মীয়তার বন্ধন ছিন্নকারী ও রক্তের সম্পর্ক অস্বীকারকারী বেহেশতে যাবে না বলে হাদিসে বলা হয়েছে। সুতরাং সমাজের প্রচলিত এই ভুল শাস্তির ব্যবস্থা থেকে নিজে বেঁচে অন্যকেও বাঁচানোর চেষ্টা করতে হবে।