ইপেপার । আজশুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

সংসার ছেড়ে পালাল কিশোরী বধূ আরিফা

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৮:৫৬:০১ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২০ অক্টোবর ২০১৯
  • / ২২৬ বার পড়া হয়েছে

বিশেষ প্রতিবেদক:
নেশাগ্রস্ত পিতা আনারুল ইসলাম তাঁর পরিবার তথা স্ত্রী-সন্তানের প্রতি একটুও নজর দিতে পারেন না। তাই সংসারের পুরো ভার পড়েছে মা শিলা খাতুনের ওপর। তিনি কখনো ভিক্ষাবৃত্তি আবার কখনো বা অন্যের বাড়িতে কাজ করে কোনো রকমে চালিয়ে নেন সংসারটাকে। তিন মেয়ে ও এক ছেলের মধ্যে বড় মেয়েটির বিয়ে হয়েছে কুষ্টিয়া ইবি থানার রাধানগর গ্রামের মকিমের ছেলে স্বপনের সঙ্গে। আর দুই মেয়ে আরিফা খাতুন (১৩) ও সুখপাখিকে (৬) নিয়ে আলমডাঙ্গার নতিডাঙ্গা আবাসনে থাকতেন শিলা খাতুন। সম্প্রতি একটি ঘটনায় তাঁর মেয়ে আরিফা খাতুনকে ধর্ষণ করা হয়েছে বলে অভিযোগ করলে সেই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে আসামিপক্ষ তাঁর মেয়েসহ তাঁদের পরিবারের অন্য সদস্যদের মারধর করেন। এ বিষয়ে আলমডাঙ্গা থানায় একটি মামলা হয়। প্রাথমিকভাবে ধর্ষণের অভিযোগটি মিথ্যা ভিত্তিহীন বলে জানা যায়। যে কারণে ভয়ে শিলা খাতুন ও তাঁর পরিবার বর্তমানে আলমডাঙ্গা উপজেলার হারদী এলাকায় বসবাস করছেন।
এদিকে, নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে কিছুদিন আগে শিলা খাতুন তাঁর দুই মেয়ে আরিফা ও সুখপাখিকে বড় মেয়ের কাছে পাঠিয়ে দেন। সেখানে থাকা অবস্থায় ৬ অক্টোবর বড় মেয়ের স্বামী স্বপনের মাধ্যমে ঝিনাইদহ আব্দালপুর গ্রামের সেলিমের সঙ্গে বাল্যবিবাহ দেওয়া হয় আরিফার। তবে বেআইনিভাবে ও ইচ্ছের বিরুদ্ধে বিয়ে দেওয়া এবং বর সেলিমের একাধিক (৫টি) স্ত্রী রয়েছে জানার পর সংসারে যেতে নারাজ কিশোরী আরিফা। তারপরেও গত শুক্রবার তাঁকে নিতে আসার কথা ছিল সেলিমের। এ অবস্থায় তাঁর হাত থেকে নিজেকে বাঁচাতে ছোটবোন সুখপাখিকে নিয়ে চুয়াডাঙ্গায় পালিয়ে আসেন আরিফা। তবে কোথাও যাওয়ার জায়গা না পেয়ে স্টেশন এলাকায় আশ্রয় নেন তাঁরা। খবর পেয়ে চুয়াডাঙ্গা সদর থানা পুলিশের একটি দল তাঁদের থানা হেফাজতে নেয়।
এ প্রসঙ্গে সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু জিহাদ ফখরুল আলম খান বলেন, ‘এ বিষয়ে আইনের আশ্রয় নিতে মা শিলা খাতুনকে কুষ্টিয়ার ইবি থানায় যোগাযোগ করার জন্য প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়াও এ বাল্যবিবাহ সম্পূর্ণ আইন পরিপন্থী এবং ঘৃণ্য কাজ বিষয়টি মা শিলা খাতুনকে বোঝানো হয়েছে। বাল্যবিবাহের কুফল সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হলে সবাই আমার সঙ্গে একমত পোষণ করে এবং ভবিষ্যতে বাল্যবিবাহ থেকে অবশ্যই বিরত থাকবে বলে অঙ্গীকারাবদ্ধ হন। আমি নিজে এ বিষয়ে ইবি থানার ওসির সঙ্গে আলোচনা করব, যাতে এরা আইনানুগ সহযোগিতা পেতে পারেন।’

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

সংসার ছেড়ে পালাল কিশোরী বধূ আরিফা

আপলোড টাইম : ০৮:৫৬:০১ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২০ অক্টোবর ২০১৯

বিশেষ প্রতিবেদক:
নেশাগ্রস্ত পিতা আনারুল ইসলাম তাঁর পরিবার তথা স্ত্রী-সন্তানের প্রতি একটুও নজর দিতে পারেন না। তাই সংসারের পুরো ভার পড়েছে মা শিলা খাতুনের ওপর। তিনি কখনো ভিক্ষাবৃত্তি আবার কখনো বা অন্যের বাড়িতে কাজ করে কোনো রকমে চালিয়ে নেন সংসারটাকে। তিন মেয়ে ও এক ছেলের মধ্যে বড় মেয়েটির বিয়ে হয়েছে কুষ্টিয়া ইবি থানার রাধানগর গ্রামের মকিমের ছেলে স্বপনের সঙ্গে। আর দুই মেয়ে আরিফা খাতুন (১৩) ও সুখপাখিকে (৬) নিয়ে আলমডাঙ্গার নতিডাঙ্গা আবাসনে থাকতেন শিলা খাতুন। সম্প্রতি একটি ঘটনায় তাঁর মেয়ে আরিফা খাতুনকে ধর্ষণ করা হয়েছে বলে অভিযোগ করলে সেই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে আসামিপক্ষ তাঁর মেয়েসহ তাঁদের পরিবারের অন্য সদস্যদের মারধর করেন। এ বিষয়ে আলমডাঙ্গা থানায় একটি মামলা হয়। প্রাথমিকভাবে ধর্ষণের অভিযোগটি মিথ্যা ভিত্তিহীন বলে জানা যায়। যে কারণে ভয়ে শিলা খাতুন ও তাঁর পরিবার বর্তমানে আলমডাঙ্গা উপজেলার হারদী এলাকায় বসবাস করছেন।
এদিকে, নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে কিছুদিন আগে শিলা খাতুন তাঁর দুই মেয়ে আরিফা ও সুখপাখিকে বড় মেয়ের কাছে পাঠিয়ে দেন। সেখানে থাকা অবস্থায় ৬ অক্টোবর বড় মেয়ের স্বামী স্বপনের মাধ্যমে ঝিনাইদহ আব্দালপুর গ্রামের সেলিমের সঙ্গে বাল্যবিবাহ দেওয়া হয় আরিফার। তবে বেআইনিভাবে ও ইচ্ছের বিরুদ্ধে বিয়ে দেওয়া এবং বর সেলিমের একাধিক (৫টি) স্ত্রী রয়েছে জানার পর সংসারে যেতে নারাজ কিশোরী আরিফা। তারপরেও গত শুক্রবার তাঁকে নিতে আসার কথা ছিল সেলিমের। এ অবস্থায় তাঁর হাত থেকে নিজেকে বাঁচাতে ছোটবোন সুখপাখিকে নিয়ে চুয়াডাঙ্গায় পালিয়ে আসেন আরিফা। তবে কোথাও যাওয়ার জায়গা না পেয়ে স্টেশন এলাকায় আশ্রয় নেন তাঁরা। খবর পেয়ে চুয়াডাঙ্গা সদর থানা পুলিশের একটি দল তাঁদের থানা হেফাজতে নেয়।
এ প্রসঙ্গে সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু জিহাদ ফখরুল আলম খান বলেন, ‘এ বিষয়ে আইনের আশ্রয় নিতে মা শিলা খাতুনকে কুষ্টিয়ার ইবি থানায় যোগাযোগ করার জন্য প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়াও এ বাল্যবিবাহ সম্পূর্ণ আইন পরিপন্থী এবং ঘৃণ্য কাজ বিষয়টি মা শিলা খাতুনকে বোঝানো হয়েছে। বাল্যবিবাহের কুফল সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হলে সবাই আমার সঙ্গে একমত পোষণ করে এবং ভবিষ্যতে বাল্যবিবাহ থেকে অবশ্যই বিরত থাকবে বলে অঙ্গীকারাবদ্ধ হন। আমি নিজে এ বিষয়ে ইবি থানার ওসির সঙ্গে আলোচনা করব, যাতে এরা আইনানুগ সহযোগিতা পেতে পারেন।’